ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি :
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও জুলাই গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু প্রিয়নাথ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন তিনি।
রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগ ফেরার চেষ্টা করছে। তারা যদি ফেরে, তাহলে আবারও গণহত্যা চালাবে। জনগণ আওয়ামী লীগকে আর সেই সুযোগ দেবে না। তাই, নির্বাচনের আগে অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার এবং আওয়ামী লীগ ও গণহত্যার বিচার করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, দেশে বারবার গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। হাজারো শহিদের রক্ত এখনও শুকায়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারীদের অবদান আমাদের স্মরণে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছে। তারা ফিরলে আবার গণহত্যা চালাবে। কিন্তু জনগণ আর তাদের সে সুযোগ দেবে না।
রাশেদ খান বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নির্যাতন, খুন, গুম থাকবে না। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব, যার থাকবে স্বচ্ছ ও কল্যাণকর ভাবমূর্তি। দেশের মানুষ চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজদের আর রাজনৈতিক নেতৃত্বে দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, সরকারের সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠী এখন আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের মানুষ এ অপচেষ্টা মেনে নেবে না। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী নেতাকর্মীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদীদের কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। সবাইকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যাতে এই অপশক্তিরা আর কখনও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। সবাইকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন কোনোভাবেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার ও মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে বারবার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু গণমানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। হাজারো শহিদের রক্তের দাগ শুকায়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আত্মদানকারীদের অবদান আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরার চেষ্টা করছে। তারা যদি ফেরে তাহলে আবারও গণহত্যা চালাবে। জনগণ আওয়ামী লীগকে আর সেই সুযোগ দেবে না। তাই নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচার করতেই হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে যত ধোঁয়াশা তৈরি করা হবে, নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, ততই দেশে অশান্তি বাড়বে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা জাতি মানবে না।
গণসমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুমন কবির, গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক মো. সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান মিল্টন, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. রকিবুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহ্বায়ক আমর বিন মারুফের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন পৌর গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মকলেচুর রহমান (টোকন মিয়া)।
সমাবেশ শেষে রাশেদ খাঁনের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের হয়। এতে গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এর আগে বিকেল ৩টায় ঝিনাইদহ শহর থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে হরিণাকুণ্ডু পৌঁছান রাশেদ খাঁন।