কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়ল তা আমাদের দেখার বিষয় না। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হলো কি না- তা দেখার বিষয়।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর সার্কিট হাউজে কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করলো, কোন দল অংশগ্রহণ করলো না-এটা দেখার বিষয় আমাদের নয়, সংবিধান মেনে নির্বাচন হবে। সংবিধানের বাধ্যকতা রয়েছে, সেজন্য আমরা তফসিল দিয়েছি। আমাদের কমিশনে ৪৪টি দল নিবন্ধিত রয়েছে, আমরা সবাইকে নির্বাচন করতে আহ্বান করেছি। এই মুহূর্তে নির্বাচন থেকে পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ আমাদের নেই। সংবিধান মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অস্বাভাবিকতা আমরা দেখতে পাইনি। একটি সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া, কোনো সংসদ সদস্য আচরণবিধি ভঙ্গ করলে কমিশন প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনে কত পার্সেন্ট (শতাংশ) ভোট পড়লো সেটা বিষয় নয়। নির্বাচন নির্বাচনের গতিতে হবে। সংবিধানে লেখা নেই কত ভোট কাস্ট হতে হবে। তবে সময়মতো নির্বাচন না হলে সংবিধানে একটা শূন্যতা তৈরি হবে। তাই সময়মতো নির্বাচন হবে। কেউ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না। আমরা বলে দিয়েছি, যত বড় পার্সেন্ট কাস্ট হবে তাই দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, আমরা সকল নিবন্ধিত দলকে চিঠি দিয়েছি। কারা নির্বাচনে আসতে চায়… কারা আসল না, সেটা দেখার সুযোগ নেই।’
তিনি যোগ করেন, ‘নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ নেই। আমরা আশাবাদী ভোটাররা উপস্থিত হবেন। ভোটারদের উদ্ভূদ্ধ করতে আমরা কাজ করব।
বিএনপি নির্বাচনে এলে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা শুনছি তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসতে চায়। দলটি যদি পর্দার আড়ালে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে আসতে চায়, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী তফসিল পেছানোর সুযোগ আছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচনেক প্রভাবিত করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তফসিলের আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি। আগে যদি পারি, এখন কেন পারব না?
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলির প্রশ্নে জামালপুরের ডিসির ভাইরাল হওয়া বক্তব্য উল্লেখ করে ইসি আনিছুর বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনে রদবদলের প্রয়োজন পড়লে করা হবে। তখন প্রশাসন আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। আমরা তবুও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওই ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশাসন এখন আমাদের। সুতরাং প্রয়োজন পড়লে আমরা প্রশাসনেও রদবদল আনতে পারি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মু. মুশফিকুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ম.: শাহগীর আলম, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শাখাওয়াত হোসেন ও চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।