নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন ভারত বা অন্য কোনো প্রতিক্রিয়াশীল, আধিপত্যবাদী শক্তি, ষড়যন্ত্রকারীরা ঠেকাতে পারবে না।
রোববার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রজন্ম দলের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, দেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। স্বৈরতন্ত্রের পতনের পর গণতন্ত্রের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, গণতন্ত্রকে উত্তরণের জন্য যেটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে নির্বাচন। সে নির্বাচন বিলম্বিত করার অর্থ হচ্ছে সময়কে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া। নির্বাচন বিলম্বিত হলে পার্শ্ববর্তী দেশ যাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সে কুচক্রী মহল, ষড়যন্ত্রকারী, গণহত্যাকারী এবং লুটপাটকারীদেরকে সময় দেয়া। যাতে তারা বাংলাদেশে অস্থিতিশীল করতে পারে।
তিনি বলেন, বড় একটি দেশ গতবছর থেকে গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের আশীর্বাদপুষ্ট শেখ হাসিনা তাদের দেশে পালিয়ে যাওয়ার পর, এই গোষ্ঠী অনবরতভাবে মিথ্যা কথা সারাদেশে প্রচার করছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নেতারা আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ড. ইউনূসকে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান তার (ড. ইউনুস) সঙ্গে যখন বৈঠক করেছে তখনই বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসা শুরু হয়েছে। এই স্থিতিশীলতাকে কোনো কোনো মহল-রাজনৈতিক দল, কোনো কোনো ব্যক্তি হীনমন্যতার পরিচয় দিচ্ছে। যার উদাহরণ আমরা কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে দেখেছি।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সালাউদ্দিন সাহেব এখন একটি পার্টির মুখপাত্র। তার সমালোচনা করা যাবে না, সেটি নয়। কিন্তু, কোনো আপত্তিকর বক্তব্য কোনো স্বাধীনতার পর্যায়ে পড়ে না। সেটি একটি উস্কানীমূলক বক্তব্য। উষ্কানী দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে স্বৈরতন্ত্রকে আমন্ত্রণ জানাবেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ৭১ সালে এ জাতি সরাসরি রণাঙ্গনে থেকে যুদ্ধ করেছে। ৭১ নিয়ে কোনো আপোষ নেই, গণতন্ত্র নেই আপোষ নেই। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের ব্যাপারেও কোনো আপোষ নেই। এগুলোর ব্যাপারে যতই উষ্কানি দেন না কেন, আমরা সেটির প্রতিশোধ নিবো আগামী নির্বাচনে। আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করবো বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
সকল রাজনৈতিক দলকে আহবান জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। নির্বাচিত সরকারের মধ্য দিয়ে দেশ শাসন করি। এ প্রত্যাশা রেখে আমরা সকলে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যারা কটুক্তি করেছে, সেটির প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং হুশিয়ারি করছি। এমন কোনো বক্তব্য দেয়া ঠিক হবে না যা বাংলাদেশের অস্থিরতাকে আরো বেশি উষ্কে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রে মত প্রকাশের সুযোগ আছে, বিএনপি সেটা ধারণ করে। ধারণ করে বলেই অশ্লীল এবং ঘৃণ্য বক্তব্য দেয়ার পরেও বিএনপি প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু, কোনো জায়গায় কোনো বক্তাকে আক্রমণ করেছে এমন কোনো ঘটনা নেই। বিএনপির নেতাকর্মীরা অত্যন্ত ধৈর্যশীল। বিএনপির নেতাকর্মীরা গণতন্ত্রের অনুসারী। স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে যারা বিশ্বাস করে তারা ধৈর্যশীল।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জনি হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।