Dhaka বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিজেদের অবস্থার উন্নতি না হলে বিআরটিএ বন্ধের চিন্তা করা হবে : সড়ক উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ’কে বন্ধের কথা চিন্তা করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে বিআরটিএ ভবন পরিদর্শন ও কনফারেন্স রুমে রোড সেফটি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিআরটিএকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল নিজেদের অবস্থার উন্নতি করার জন্য। গ্রহণযোগ্যভাবে উন্নতি না হলেও তাদের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আমরা বিআরটিএ-কে প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখব। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে। এটাকে আরও বাড়ানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বিআরটিএ-এর কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি তাদের এটাও বলেছি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিআরটিএ-এর কাজের যদি উন্নতি না হয়, তাহলে আমরা বিআরটিএ বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করব।

সড়ক দুর্ঘটনার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আমাদের সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ে তথ্য উপাত্ত দিয়েছে। গত বছর সারাদেশে ৭ হাজার ২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১২ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। যা তার আগের বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। আমরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পারিনি, এর জন্য দায় নিচ্ছি।

সড়ক উপদেষ্টা বলেন, জীবনের কোনো মূল্য হয় না। কিন্তু অপরাধ স্বীকারের অংশ হিসেবে আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিআরটিএ-এর কর্মকর্তাদের পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, গাড়ির ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স না থাকার জন্য যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে বিআরটিএ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সরাসরি দায়ী করা হবে। এসব মৃত্যুর দায়িত্ব তাদের ওপর আসবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমি বিআরটিএকে নির্দেশনা দিয়েছি, তারা যেন ফিটনেসবিহীন যানবাহন পুনঃপরীক্ষার জন্য মালিকদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফোন বা মেসেজ দেয়। এ মেসেজের লেখা থাকবে আপনার বাস ফের ফিটনেস পরীক্ষার সময় এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আপনি আপনার বাসের ফিটনেস পরীক্ষা করুন। এসময়ের মধ্যে যদি কেউ ফিটনেস পরীক্ষা না করে তাহলে তার রুট পারমিট বাতিল করা হবে। একইভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চালকরা মাদকাসক্ত কি না তা পরীক্ষা করা হবে। প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এটা আমরা কমাতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা।

সড়ক দুর্ঘটনায় যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন, তাদের আর্থিক সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বিআরটিএকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু এ কাজ অনেক ধীরগতিতে চলছে। তা দ্রুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এখনো বিআরটিএ’তে সাড়ে চার লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে আছে জানিয়ে সেতু উপদেষ্টা বলেন, এ সাড়ে চার লাখ লাইসেন্স দ্রুত সময়ে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। আশাকরি আগামী মার্চের মধ্যে তা বিতরণ করা সম্ভব হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নিজেদের অবস্থার উন্নতি না হলে বিআরটিএ বন্ধের চিন্তা করা হবে : সড়ক উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ’কে বন্ধের কথা চিন্তা করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে বিআরটিএ ভবন পরিদর্শন ও কনফারেন্স রুমে রোড সেফটি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিআরটিএকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল নিজেদের অবস্থার উন্নতি করার জন্য। গ্রহণযোগ্যভাবে উন্নতি না হলেও তাদের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আমরা বিআরটিএ-কে প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখব। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে। এটাকে আরও বাড়ানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বিআরটিএ-এর কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি তাদের এটাও বলেছি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিআরটিএ-এর কাজের যদি উন্নতি না হয়, তাহলে আমরা বিআরটিএ বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করব।

সড়ক দুর্ঘটনার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আমাদের সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ে তথ্য উপাত্ত দিয়েছে। গত বছর সারাদেশে ৭ হাজার ২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১২ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। যা তার আগের বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। আমরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পারিনি, এর জন্য দায় নিচ্ছি।

সড়ক উপদেষ্টা বলেন, জীবনের কোনো মূল্য হয় না। কিন্তু অপরাধ স্বীকারের অংশ হিসেবে আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিআরটিএ-এর কর্মকর্তাদের পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, গাড়ির ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স না থাকার জন্য যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে বিআরটিএ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সরাসরি দায়ী করা হবে। এসব মৃত্যুর দায়িত্ব তাদের ওপর আসবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমি বিআরটিএকে নির্দেশনা দিয়েছি, তারা যেন ফিটনেসবিহীন যানবাহন পুনঃপরীক্ষার জন্য মালিকদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফোন বা মেসেজ দেয়। এ মেসেজের লেখা থাকবে আপনার বাস ফের ফিটনেস পরীক্ষার সময় এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আপনি আপনার বাসের ফিটনেস পরীক্ষা করুন। এসময়ের মধ্যে যদি কেউ ফিটনেস পরীক্ষা না করে তাহলে তার রুট পারমিট বাতিল করা হবে। একইভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় গণপরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চালকরা মাদকাসক্ত কি না তা পরীক্ষা করা হবে। প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। এটা আমরা কমাতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা।

সড়ক দুর্ঘটনায় যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন, তাদের আর্থিক সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বিআরটিএকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু এ কাজ অনেক ধীরগতিতে চলছে। তা দ্রুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এখনো বিআরটিএ’তে সাড়ে চার লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে আছে জানিয়ে সেতু উপদেষ্টা বলেন, এ সাড়ে চার লাখ লাইসেন্স দ্রুত সময়ে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। আশাকরি আগামী মার্চের মধ্যে তা বিতরণ করা সম্ভব হবে।