নাটোর জেলা প্রতিনিধি :
নাটোরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে এক তরুণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ধর্ষণের আগে বাড়ি থেকে অপহরণ করার দায়ে ওই তরুণকে অপর একটি ধারায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুটি সাজাই একসঙ্গে চলবে।
সোমবার (১৩ মে) দুপুওে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তরুণের নাম সাব্বির আলী (২৩)। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামির উপস্থিতিতে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। বিচারক রায়ের সারাংশ পড়ে শোনান। রায়ে আসামিকে ধর্ষণ ও অপহরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, স্কুল যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিত সাব্বির আলী। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় সাব্বিরের বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে ওই ছাত্রীর পরিবার রাজি না হলে তাকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর ওই ছাত্রীর বাবা-মা চিকিৎসার জন্য রাজশাহী গেলে পরদিন রাত ১০টার দিকে তাকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যান আসামি ও তার সহযোগীরা। পরে ভিকটিমকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে জোর করে বিয়ে করেন সাব্বির। তখন ভিকটিমের বয়স ছিল ১২ বছর। পরে হত্যার ভয় দেখিয়ে ভাড়া বাসায় রেখে ওই ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন সাব্বির।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে লালপুর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে লালপুর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল ইসলাম ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসে। আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রধান আসামি সাব্বির আলীকে দণ্ড দেন এবং অপর দুই আসামি আবদুল মান্নান ও মুক্তার হোসেনকে খালাস দেন।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান দণ্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, দুটি আলাদা অপরাধে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত আলাদা দণ্ড দিয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন (২২ বছর) কারাদণ্ড ও অপহরণের দায়ে ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। উভয় দণ্ড আসামি একই সঙ্গে ভোগ করবেন বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।