Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ওস্তাদ রশিদ খান

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:১৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১৯১ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

৫৫ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতের খ্যাতিমান শিল্পী রশিদ খান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান রশিদ খান। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে।

বেশ কয়েক বছর আগে রশিদ খানের প্রস্টেটে ক্যানসার হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। এর মধ্যেই তার মস্তিষ্কে একাধিকবার রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়েছে।

মাসখানেক ধরেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত এই শিল্পী। ৫৫ বছর বয়সী এই শিল্পীকে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যেই তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই মারা যান।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেলেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে। শোনা গিয়েছিল, স্ট্রোকের ফলে তার বাঁ দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও ছিল।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন এ শিল্পী। তবে আজ (৯ জানুয়ারি) সকালে হঠাৎ তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তার মৃত্যুতে ভক্ত-অনুরাগীরা শোক প্রকাশ করছেন।

আজ সকালের দিকে রশিদ খানের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে আইসিউতে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, ‘শিল্পীর অবস্থা অতি সঙ্কটজনক। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’

দুপুরে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পীর খোঁজ নিয়ে তিনি বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের বাইরে। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী তথা সংগীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন।

এর পরেই রশিদের চিকিৎসক বলেন, এতদিন হাসপাতালে থাকার ফলে সংক্রমণ হয়েছিল। তাকে ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়। আর ‘রিভাইভ’ করতে পারিনি। ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

এর পর মমতা বলেন, রশিদ আমার ভাইয়ের মতো, গঙ্গাসাগর থেকে জয়নগরে গিয়ে ফোন এসেছিল। নবান্নে ফিরে খবর আসে, কিছু একটা হয়েছে। রশিদ আলি খান বিশ্ববিখ্যাত নাম। ওর পরিচয় দিতে হবে না। বাংলাকে ভালোবেসে বাংলায় থেকে গিয়েছেন। বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়ে প্রচার করেছেন।

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রশিদ খানের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল ওস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। যিনি ছিলেন রশিদের দাদা।

ছোটবেলা থেকেই তিনি বেড়ে উঠেছেন সঙ্গীত পরিবারে। মূলত শাস্ত্রীয় সংগীত গাইলেও ফিউশন, হিন্দি ও বাংলা ছবিতে জনপ্রিয় গান গেয়েছেন এই শিল্পী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি।

পাশাপাশি বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় সিনেমাতেও রয়েছে তার গান। যে তালিকায় আছে ‘যাব উই মিট’, ‘কিসনা’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘রাজ ৩’-র মতো সিনেমা। এছাড়া বাংলাদেশেও একাধিকবার সংগীত পরিবেশন করেছেন এই শিল্পী। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী ও ২০২২ সালে পদ্মভূষণ সম্মান লাভ করেন ওস্তাদ রশিদ খান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ওস্তাদ রশিদ খান

প্রকাশের সময় : ০৭:১৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক : 

৫৫ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতের খ্যাতিমান শিল্পী রশিদ খান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান রশিদ খান। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে।

বেশ কয়েক বছর আগে রশিদ খানের প্রস্টেটে ক্যানসার হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। এর মধ্যেই তার মস্তিষ্কে একাধিকবার রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়েছে।

মাসখানেক ধরেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত এই শিল্পী। ৫৫ বছর বয়সী এই শিল্পীকে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যেই তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই মারা যান।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেলেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে। শোনা গিয়েছিল, স্ট্রোকের ফলে তার বাঁ দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও ছিল।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন এ শিল্পী। তবে আজ (৯ জানুয়ারি) সকালে হঠাৎ তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তার মৃত্যুতে ভক্ত-অনুরাগীরা শোক প্রকাশ করছেন।

আজ সকালের দিকে রশিদ খানের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে আইসিউতে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, ‘শিল্পীর অবস্থা অতি সঙ্কটজনক। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’

দুপুরে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পীর খোঁজ নিয়ে তিনি বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের বাইরে। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী তথা সংগীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন।

এর পরেই রশিদের চিকিৎসক বলেন, এতদিন হাসপাতালে থাকার ফলে সংক্রমণ হয়েছিল। তাকে ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়। আর ‘রিভাইভ’ করতে পারিনি। ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

এর পর মমতা বলেন, রশিদ আমার ভাইয়ের মতো, গঙ্গাসাগর থেকে জয়নগরে গিয়ে ফোন এসেছিল। নবান্নে ফিরে খবর আসে, কিছু একটা হয়েছে। রশিদ আলি খান বিশ্ববিখ্যাত নাম। ওর পরিচয় দিতে হবে না। বাংলাকে ভালোবেসে বাংলায় থেকে গিয়েছেন। বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়ে প্রচার করেছেন।

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রশিদ খানের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল ওস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। যিনি ছিলেন রশিদের দাদা।

ছোটবেলা থেকেই তিনি বেড়ে উঠেছেন সঙ্গীত পরিবারে। মূলত শাস্ত্রীয় সংগীত গাইলেও ফিউশন, হিন্দি ও বাংলা ছবিতে জনপ্রিয় গান গেয়েছেন এই শিল্পী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি।

পাশাপাশি বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় সিনেমাতেও রয়েছে তার গান। যে তালিকায় আছে ‘যাব উই মিট’, ‘কিসনা’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘রাজ ৩’-র মতো সিনেমা। এছাড়া বাংলাদেশেও একাধিকবার সংগীত পরিবেশন করেছেন এই শিল্পী। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী ও ২০২২ সালে পদ্মভূষণ সম্মান লাভ করেন ওস্তাদ রশিদ খান।