Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নয়াদিল্লিতে রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের নয়াদিল্লিতে রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে ১১ জন নারী ও ৪জন শিশু মারা গেছেন।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়, শনিবার রাতে মহাকুম্ভ উপলক্ষে বিশেষ দুটি ট্রেনের বিলম্ব হয়। ওই সময় রেলস্টেশনে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০ নারী, তিন শিশু ও দুই পুরুষ এলএনজেপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া লেডি হার্ডিং হাসপাতালে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রেলওয়ে বিভাগ ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি ও সামান্য আহতদের এক লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কুম্ভ মেলা উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু দুটি ট্রেন আসতে বিলম্ব হয়। পরে রাত ৮টার দিকে স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্লাটফর্মে হুড়োহুড়ি শুরু হয় এবং এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এনডিটিবির খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনাস্থলে যান দমকল বাহিনীর সদস্যরাও।

রেলওয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। ওই দুই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল বলেও যাত্রীদের অভিযোগ। কেউ কেউ দাবি করতে থাকেন, দু’টি ট্রেন বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ভিড়ের মধ্যে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেকেই দাবি করেন, পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় ওই দুই প্ল্যাটফর্মে। যদিও ভারতীয় রেলের দাবি এই সবই গুজব ছিল।

এই ঘটনার পরেই শোক প্রকাশ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “পদপিষ্টের ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা কররছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে প্রশাসন।”

এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। মুখ্যসচিব ও পুলিশ কমিশনারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

যদিও উত্তর রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে কোনও পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেনি। গুজব ছড়ানোর কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। রেলের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রয়াগরাজে যাওয়ার জন্য দুটি স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে।

এদিকে ভারতের রেল মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, রেল পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের। এই ভিড়ের মধ্যে পড়ে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রেল পুলিশের ডিসি বলেন, “প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। স্টেশনে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় ছিল সেই সময়ে। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরিতে ছিল। তাই ওই দুই ট্রেনের যাত্রীরাও ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই কারণেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।”

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

নয়াদিল্লিতে রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের নয়াদিল্লিতে রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে ১১ জন নারী ও ৪জন শিশু মারা গেছেন।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়, শনিবার রাতে মহাকুম্ভ উপলক্ষে বিশেষ দুটি ট্রেনের বিলম্ব হয়। ওই সময় রেলস্টেশনে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০ নারী, তিন শিশু ও দুই পুরুষ এলএনজেপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া লেডি হার্ডিং হাসপাতালে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রেলওয়ে বিভাগ ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি ও সামান্য আহতদের এক লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কুম্ভ মেলা উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু দুটি ট্রেন আসতে বিলম্ব হয়। পরে রাত ৮টার দিকে স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্লাটফর্মে হুড়োহুড়ি শুরু হয় এবং এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এনডিটিবির খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনাস্থলে যান দমকল বাহিনীর সদস্যরাও।

রেলওয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। ওই দুই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল বলেও যাত্রীদের অভিযোগ। কেউ কেউ দাবি করতে থাকেন, দু’টি ট্রেন বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ভিড়ের মধ্যে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেকেই দাবি করেন, পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় ওই দুই প্ল্যাটফর্মে। যদিও ভারতীয় রেলের দাবি এই সবই গুজব ছিল।

এই ঘটনার পরেই শোক প্রকাশ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “পদপিষ্টের ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা কররছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে প্রশাসন।”

এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। মুখ্যসচিব ও পুলিশ কমিশনারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

যদিও উত্তর রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে কোনও পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেনি। গুজব ছড়ানোর কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। রেলের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রয়াগরাজে যাওয়ার জন্য দুটি স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে।

এদিকে ভারতের রেল মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, রেল পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের। এই ভিড়ের মধ্যে পড়ে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রেল পুলিশের ডিসি বলেন, “প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। স্টেশনে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় ছিল সেই সময়ে। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরিতে ছিল। তাই ওই দুই ট্রেনের যাত্রীরাও ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই কারণেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।”