নড়াইল জেলা প্রতিনিধি :
নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের শড়াতলা গ্রামে গৃহবধূ আছিয়া বেগমকে (২২) গলাকেটে ও পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মো. রনি শেখ (২৬) এবং তাঁর বন্ধু মেহেদী হাসান হৃদয় ওরফে আব্বাস ফকিরকে (২৪) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আলমাচ হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রনি শেখ শড়াতলা গ্রামের লিটন শেখ লিটুর ছেলে এবং আব্বাস একই গ্রামের মো. জামির হোসেন ওরফে জামির ফকিরের ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) অ্যাডভোকেট নূর মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অপর একটি ধারায় (২০১ ধারা) দুজনকেই সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আসামির স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পরকীয়ার জের ধরে ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর সকালে নড়াইল সদর উপজেলায় শড়াতলা গ্রামে গৃহবধূ আছিয়া বেগমকে তাঁর স্বামী প্রথমে গলাকেটে হত্যা করে। পরে ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে স্বামীসহ তাঁর সহযোগী আব্বাস পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। রনি শেখ চার বছর আগে একই গ্রামের আছিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর আছিয়ার ছেলে সন্তান হয়। বিয়ের পর আছিয়ার বাবা জামাই-মেয়েকে নয় শতক জমি কিনে বাড়িও করে দেন। রনি একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে মাঠ পর্যায়ে চাকরি করতেন। সন্তানের ৬ মাস বয়সের সময় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী আছিয়াকে তালাক দেন স্বামী রনি শেখ। তালাকের তিন মাস পর স্থানীয়ভাবে সালিস-মীমাংসার পর আছিয়াকে পুনরায় বিয়ে করেন রনি।
আসামি রনি মোবাইল কোম্পানির সিম বিক্রির সুবাদে লোহাগড়া উপজেলার গন্ডব গ্রামের এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরকীয়ার জেরে স্বামী রনির সঙ্গে স্ত্রীর প্রায় ঝগড়া ও পারিবারিক কলহ হতো। বিষয়টি নিয়ে রনি তাঁর বাল্যবন্ধু আব্বাসের সঙ্গে পরামর্শ করে দুজনে মিলে আছিয়াকে প্রথমে গলাকেটে হত্যা করে এবং পরে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম ইমদাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রায় রত কার্যকরের দাবি করেছেন।