Dhaka শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে বিকল্প নেতৃত্ব নেই, প্রধানমন্ত্রী জাতিকে এই ধারণা দিতে চান : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী জাতিকে ধারণা দিতে চান দেশে বিকল্প কোনো নেতৃত্ব নেই। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৫ মে) গুলশানে দলের নেতাদের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিদেশের সফরটি একেবারেই ফলাফলশূন্য। বিদ্যুৎখাতকে দুর্নীতির সর্বোচ্চখাত হিসেবে নিয়েছে সরকার। সরকারি দলের লোকজনই এই দুর্নীতির সাথে জড়িত। জনগণের পকেট কেটে সারচার্জ দিতে হয়।

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে হঠাৎ করে কেন প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বোধহয় বিরক্ত।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমাদের প্রতি রাগান্বিত। উনি এত রেগেছেন কেন পশ্চিমাদের প্রতি! সম্ভবত নিরাপত্তা বোধ করছেন না। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা খুব সুন্দর করে কথা বলেন। তিনি সবসময় ইনসাল্ট করে কথা বলেন। জাতিকে তিনি একটা ধারণা দিতে চান যে, এখানে বিকল্প কোনও নেতৃত্ব নেই। তিনি এই যে সফরটা করেছেন, সফর সম্পর্কে তিনি ধারণা দিতে চান— সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। কিন্তু আমরা যেটা জানতে পেরেছি, জাতীয় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে এ সফরের ফলাফল জিরো প্লাস। আইএমএফ শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে কিছু বলেনি। সফরের অর্জন জনগণ বিচার করবে। বিশেষ কোনও অর্জন হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।

‘এতদিন পর প্রধানমন্ত্রী স্যাংশন নিয়ে কথা বলছেন কেন’ সে বিষয়ে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি কেন এতদিন পর স্যাংশনের ওপর বিষোদগার করছেন? তিনি ভালো করে জানেন, যারা দেয় তারা কিসের ওপর স্যাংশন দেয়। কিছুদিন আগে রাশিয়ার জাহাজ স্যাশনের কারণে ঢুকতে পারেনি, বাংলাদেশ ফেরত দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ কী কেনে তা মোটামুটি আমরা সবাই জানি, বুঝতে পারি। তিনি সম্ভবত ইরিটেটেড হয়ে আছেন পশ্চিমাদের প্রতি।

রিজার্ভ সংকটের কারণে সামনে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমদানি করেন, তারা ডলারের কারণে আমদানি করতে পারছেন না। প্রধান কারণ হচ্ছে রিজার্ভের পরিমাণ যা, তা দিয়ে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পদ্মা সেতুর যখন ঋণ পরিশোধ করতে হবে তখন সামনে আরও মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। আজকে পত্রিকায় এসেছে বিমানবন্দরের জন্য আগামী বছর থেকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। মারাত্মক সংকট সৃষ্টি সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আওয়ামী লীগ সরকার গত কয়েক দশকে বিদ্যুৎ খাতকে দুর্নীতির খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নেই। তাদের লোকেরা দুর্নীতি করেছে। এখন সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে।

প্রধানমন্ত্রী ময়ূর সিংহাসনে বসে আছেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ময়ূর সিংহাসনে বসি না, আমরা জনগণের কাতারে জনগণের চেয়ারে বসি।

মির্জা ফখরুল বলেন, জাপানের সঙ্গে কিছু ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সফরের এ বিষয়টি আগেই ঠিক হয়েছিল, সেটাই হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে তিনি গিয়েছিলেন মূলত বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের যে সম্পর্ক, সে উপলক্ষে একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখতে। সেখানে তার কী অর্জন, তা আপনারাই বিবেচনা করবেন। আর যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলেন দেশটির নতুন রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে। সরকারপ্রধান হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার নতুন প্রধানমন্ত্রী ও রাজার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। এখানে বিশেষ কোনো অর্জন হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাদের নিয়মিত প্রটোকলের বাইরে কোন প্রটোকল না দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছে সরকার। তাই পশ্চিমাদের ওপর রাগান্বিত তিনি। আমরা আশা করবো, কোনও দেশের সঙ্গে যেন বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্ক নষ্ট না হয়।

বৈঠকে বিএনপির স্হায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা পরিষদের আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার অংশ নেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

দেশে বিকল্প নেতৃত্ব নেই, প্রধানমন্ত্রী জাতিকে এই ধারণা দিতে চান : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১০:৫৯:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী জাতিকে ধারণা দিতে চান দেশে বিকল্প কোনো নেতৃত্ব নেই। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৫ মে) গুলশানে দলের নেতাদের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিদেশের সফরটি একেবারেই ফলাফলশূন্য। বিদ্যুৎখাতকে দুর্নীতির সর্বোচ্চখাত হিসেবে নিয়েছে সরকার। সরকারি দলের লোকজনই এই দুর্নীতির সাথে জড়িত। জনগণের পকেট কেটে সারচার্জ দিতে হয়।

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে হঠাৎ করে কেন প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বোধহয় বিরক্ত।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমাদের প্রতি রাগান্বিত। উনি এত রেগেছেন কেন পশ্চিমাদের প্রতি! সম্ভবত নিরাপত্তা বোধ করছেন না। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা খুব সুন্দর করে কথা বলেন। তিনি সবসময় ইনসাল্ট করে কথা বলেন। জাতিকে তিনি একটা ধারণা দিতে চান যে, এখানে বিকল্প কোনও নেতৃত্ব নেই। তিনি এই যে সফরটা করেছেন, সফর সম্পর্কে তিনি ধারণা দিতে চান— সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। কিন্তু আমরা যেটা জানতে পেরেছি, জাতীয় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে এ সফরের ফলাফল জিরো প্লাস। আইএমএফ শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে কিছু বলেনি। সফরের অর্জন জনগণ বিচার করবে। বিশেষ কোনও অর্জন হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।

‘এতদিন পর প্রধানমন্ত্রী স্যাংশন নিয়ে কথা বলছেন কেন’ সে বিষয়ে প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি কেন এতদিন পর স্যাংশনের ওপর বিষোদগার করছেন? তিনি ভালো করে জানেন, যারা দেয় তারা কিসের ওপর স্যাংশন দেয়। কিছুদিন আগে রাশিয়ার জাহাজ স্যাশনের কারণে ঢুকতে পারেনি, বাংলাদেশ ফেরত দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ কী কেনে তা মোটামুটি আমরা সবাই জানি, বুঝতে পারি। তিনি সম্ভবত ইরিটেটেড হয়ে আছেন পশ্চিমাদের প্রতি।

রিজার্ভ সংকটের কারণে সামনে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমদানি করেন, তারা ডলারের কারণে আমদানি করতে পারছেন না। প্রধান কারণ হচ্ছে রিজার্ভের পরিমাণ যা, তা দিয়ে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পদ্মা সেতুর যখন ঋণ পরিশোধ করতে হবে তখন সামনে আরও মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। আজকে পত্রিকায় এসেছে বিমানবন্দরের জন্য আগামী বছর থেকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। মারাত্মক সংকট সৃষ্টি সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আওয়ামী লীগ সরকার গত কয়েক দশকে বিদ্যুৎ খাতকে দুর্নীতির খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নেই। তাদের লোকেরা দুর্নীতি করেছে। এখন সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে।

প্রধানমন্ত্রী ময়ূর সিংহাসনে বসে আছেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ময়ূর সিংহাসনে বসি না, আমরা জনগণের কাতারে জনগণের চেয়ারে বসি।

মির্জা ফখরুল বলেন, জাপানের সঙ্গে কিছু ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সফরের এ বিষয়টি আগেই ঠিক হয়েছিল, সেটাই হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে তিনি গিয়েছিলেন মূলত বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের যে সম্পর্ক, সে উপলক্ষে একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখতে। সেখানে তার কী অর্জন, তা আপনারাই বিবেচনা করবেন। আর যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলেন দেশটির নতুন রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে। সরকারপ্রধান হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার নতুন প্রধানমন্ত্রী ও রাজার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। এখানে বিশেষ কোনো অর্জন হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাদের নিয়মিত প্রটোকলের বাইরে কোন প্রটোকল না দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছে সরকার। তাই পশ্চিমাদের ওপর রাগান্বিত তিনি। আমরা আশা করবো, কোনও দেশের সঙ্গে যেন বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্ক নষ্ট না হয়।

বৈঠকে বিএনপির স্হায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা পরিষদের আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার অংশ নেন।