Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশ গড়তে ঐক্যের বিকল্প নেই : মির্জা ফখরুল

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দেশ গড়তে ঐক্যের বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের মাঝে কেউ বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি করবো। এ সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। আমরাও সংস্কার চাই। তবে এদেশের সাধারণ মানুষ সংস্কার বুঝে না। তারা বুঝে মোটা চাল, আর মোটা কাপড়।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা বাস্তবায়নে বিকেলে লাকসাম উপজেলা, লাকসাম পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে লাকসাম স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে নির্বাচন দিন। আর কালক্ষেপণ করবেন না। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাবো। দেশের উন্নয়ন ও শৃঙ্খলার জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার জরুরি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আজকে সবাই কিন্তু অস্থির অবস্থায় আছি। ঠিক জানি না কখন, কোথায় কী হচ্ছে। বুঝতেও পারছি না। এই জায়গা থেকে আমি অন্তর্র্বতী সরকার প্রধান প্রফেসর ইউনূসকে অনুরোধ করবো- জাতিকে অস্থিরতার মধ্যে না রেখে দয়া করে খুব দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করবো- এমন কোনো কথাবার্তা বললেন না যাতে জাতির ঐক্য বিনষ্ট হয়। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীল দলের মতো কাজ করতে চাই। এখনো করি। আমরা অতীতে সরকারে ছিলাম, ইনশাআল্লাহ আবার জনগণের ভোটে সরকারে যাব।

তিনি বলেন, শেখ মুজিবের মেয়ে গত ১৫ বছরে এদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। আমাদের প্রশাসনকেও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিগত তিনটা নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। রাতের বেলা সিল মেরে ব্যালট ভরে রাখা আর ১৫৪টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী করেছে নিজেদের। সর্বশেষ ২০২৪ এর জানুয়ারিতে ডামি ইলেকশন করেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। এই হচ্ছে নির্বাচনের পরিস্থিতি। অর্থাৎ আমার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটা ধ্বংস করে দেওয়া।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। আরেকটা স্লোগান দিয়েছেন ফয়সালা হবে রাজপথে। এখন ফয়সালা কোথায় হয়েছে? রাজপথে হয়েছে। ছাত্র-জনতার পদভারে তারা পালিয়ে গেল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিচার ব্যবস্থা, অর্থব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় সকল বিভাগ ধ্বংস করে গেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নিজেরা নিজেরা ভোট করে তারা সরকার গঠন করেছে। লাকসামের হিরু-হুমায়ুনসহ সাড়ে সাতশ নেতাদের গুম করা হয়েছে। তাদের সন্তানরা এখনো চোখের পানি ফেলছে। আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে লাকসামের মানুষ। যারা অপকর্ম করে তারা এখানকার এমপি তাজুল ইসলামের মতো, শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’

তিনি বলেন, আমরা একটা কথা বারবার বলে আসছি, সেই কথাটার অনেকেই সমালোচনা করেন। আমরা বলছি যে তাড়াতাড়ি নির্বাচনটা দেন। কেন বলছি? ভোট যদি তাড়াতাড়ি হয় একটি সরকার আসবে। যে সরকারের পেছনে জনগণ থাকবে। আর জনগণ না থাকলে সে সরকার কি কাজ করতে পারবে? আজকের সরকার যত বড়ই হোক, পেছনে জনগণ থাকতে হবে। আমরা সেজন্যই বলছি আর বিলম্ব না করে নির্বাচন দিন। তার জন্য যতোটুকু পরিবর্তন করা দরকার, যতটুকু সংস্কার দরকার সেইটুকু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। আজকে নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করতে হবে, প্রশাসনকে ঠিক করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে ঠিক করতে হবে। এটা ঠিক করুন। রোড ম্যাপ দিন কবে কবে ভোট হবে, কবে সংস্কার শেষ হবে।

বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমদ মানিক, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাদুল বারী আবু, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল অব. আনোয়ারুল আজীম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কফিল উদ্দিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ৫ দফা দাবিতে ১৫ দিনের আলটিমেটাম (ভিডিও)

দেশ গড়তে ঐক্যের বিকল্প নেই : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দেশ গড়তে ঐক্যের বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের মাঝে কেউ বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি করবো। এ সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। আমরাও সংস্কার চাই। তবে এদেশের সাধারণ মানুষ সংস্কার বুঝে না। তারা বুঝে মোটা চাল, আর মোটা কাপড়।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা বাস্তবায়নে বিকেলে লাকসাম উপজেলা, লাকসাম পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে লাকসাম স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে নির্বাচন দিন। আর কালক্ষেপণ করবেন না। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাবো। দেশের উন্নয়ন ও শৃঙ্খলার জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার জরুরি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আজকে সবাই কিন্তু অস্থির অবস্থায় আছি। ঠিক জানি না কখন, কোথায় কী হচ্ছে। বুঝতেও পারছি না। এই জায়গা থেকে আমি অন্তর্র্বতী সরকার প্রধান প্রফেসর ইউনূসকে অনুরোধ করবো- জাতিকে অস্থিরতার মধ্যে না রেখে দয়া করে খুব দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করবো- এমন কোনো কথাবার্তা বললেন না যাতে জাতির ঐক্য বিনষ্ট হয়। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীল দলের মতো কাজ করতে চাই। এখনো করি। আমরা অতীতে সরকারে ছিলাম, ইনশাআল্লাহ আবার জনগণের ভোটে সরকারে যাব।

তিনি বলেন, শেখ মুজিবের মেয়ে গত ১৫ বছরে এদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। আমাদের প্রশাসনকেও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিগত তিনটা নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। রাতের বেলা সিল মেরে ব্যালট ভরে রাখা আর ১৫৪টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী করেছে নিজেদের। সর্বশেষ ২০২৪ এর জানুয়ারিতে ডামি ইলেকশন করেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। এই হচ্ছে নির্বাচনের পরিস্থিতি। অর্থাৎ আমার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটা ধ্বংস করে দেওয়া।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছেন টেক ব্যাক বাংলাদেশ। আরেকটা স্লোগান দিয়েছেন ফয়সালা হবে রাজপথে। এখন ফয়সালা কোথায় হয়েছে? রাজপথে হয়েছে। ছাত্র-জনতার পদভারে তারা পালিয়ে গেল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিচার ব্যবস্থা, অর্থব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় সকল বিভাগ ধ্বংস করে গেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নিজেরা নিজেরা ভোট করে তারা সরকার গঠন করেছে। লাকসামের হিরু-হুমায়ুনসহ সাড়ে সাতশ নেতাদের গুম করা হয়েছে। তাদের সন্তানরা এখনো চোখের পানি ফেলছে। আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে লাকসামের মানুষ। যারা অপকর্ম করে তারা এখানকার এমপি তাজুল ইসলামের মতো, শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’

তিনি বলেন, আমরা একটা কথা বারবার বলে আসছি, সেই কথাটার অনেকেই সমালোচনা করেন। আমরা বলছি যে তাড়াতাড়ি নির্বাচনটা দেন। কেন বলছি? ভোট যদি তাড়াতাড়ি হয় একটি সরকার আসবে। যে সরকারের পেছনে জনগণ থাকবে। আর জনগণ না থাকলে সে সরকার কি কাজ করতে পারবে? আজকের সরকার যত বড়ই হোক, পেছনে জনগণ থাকতে হবে। আমরা সেজন্যই বলছি আর বিলম্ব না করে নির্বাচন দিন। তার জন্য যতোটুকু পরিবর্তন করা দরকার, যতটুকু সংস্কার দরকার সেইটুকু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। আজকে নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করতে হবে, প্রশাসনকে ঠিক করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে ঠিক করতে হবে। এটা ঠিক করুন। রোড ম্যাপ দিন কবে কবে ভোট হবে, কবে সংস্কার শেষ হবে।

বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমদ মানিক, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাদুল বারী আবু, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল অব. আনোয়ারুল আজীম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কফিল উদ্দিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী প্রমুখ।