Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্ভোগের আরেক নাম বালিয়াঘাট সড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে জনতা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত মাত্র ৫ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙাচোরা একমাত্র সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার মানুষদের। বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আসা লোকজনও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে এখানকার মোটরসাইকেল ও অটো চালকদের। সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরপুর সড়কটি এখন এলাকার মানুষদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের বন্যায় সড়কে দেয়া ব্লক উল্টে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন স্থান হাওরের ঢেউয়ে ভেঙে গেছে। পুরো সড়ক জুড়েই ছোট বড় গর্তে ভরপুর। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, তেলীগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বালিয়াঘাট নতুন বাজার ও শ্রীপুর বাজারে আসা লোকজন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এদিকে বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে কাউকান্দি বাজার পর্যন্ত সড়কটি গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, বড় বড় ব্রিজ দিয়ে কি হবে যদি আভ্যন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কার না করা হয়।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, গত ১০ বছর আগে বালিয়াঘাট নতুন বাজর সড়কটির কিছু স্থানে ব্লক বসালেও এখন পর্যন্ত সড়ক আর পাকা করা হয়নি। ব্লকগুলো ফাঁকা হয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। মাঝে মধ্যে সড়কের ভাঙাচুরা গর্তগুলো সংস্কার করা হলেও বৃষ্টির পানি, হাওরের ঢেউ এবং ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে আবারো ভেঙে গেছে। ফলে অটো ও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী নিয়ে প্রায় সময়েই এখানে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন।

বালিয়াঘাট গ্রামের রেজাউল জানান, জরুরি ভিত্তিতে বর্ষা মৌসুম আসার পূর্বেই এ সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন। না হয় এটি আর সড়ক থাকবে না।
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজন জানান, আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এমন ভাঙাচুরা সড়ক দিয়ে একবার গেলে দ্বিতীয়বার আর যেতে ইচ্ছে করে না। আমরা এ সড়কটির দ্রুত সংস্কার চাই। যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে পারে।

স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আমির আলী বলেন, এ সড়কটির অবস্থা খুবেই নাজুক। চলাচলের জন্য পুরোটাই একেবারে অনুপযোগী। সড়কটি যাতে দ্রুত সংস্কার হয়, সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত।

মোটরসাইকেল চালক জজ মিয়া বলেন, পেটের দায়ে আমরা মোটরসাইকেল চালাই। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে মন চায় না। কিন্তু নিরুপায় হয়ে আমাদের গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ভাঙ্গাচুরা সড়কে গাড়ি চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে এবং কয়েকদিন পর পর এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে।

টমটম চালক মহিম উদ্দিন জানান, গত বছরের বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা এলজিইডি থেকে এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। প্রতিনিয়ত তারা ঝুঁকি নিয়ে ভাঙাচুরা সড়ক দিয়েই গাড়ি চালাচ্ছন।

শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী হায়দার বলেন, জনবহুল এই সড়কটি এলজিইডি’র আওতাধীন নেয়া হয়েছে। আসা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।

তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল্লাহ খান বলেন, এই সড়কটির সার্ভের কাজ চলমান। কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

দুর্ভোগের আরেক নাম বালিয়াঘাট সড়ক

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে জনতা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত মাত্র ৫ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙাচোরা একমাত্র সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার মানুষদের। বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আসা লোকজনও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে এখানকার মোটরসাইকেল ও অটো চালকদের। সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরপুর সড়কটি এখন এলাকার মানুষদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের বন্যায় সড়কে দেয়া ব্লক উল্টে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন স্থান হাওরের ঢেউয়ে ভেঙে গেছে। পুরো সড়ক জুড়েই ছোট বড় গর্তে ভরপুর। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, তেলীগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বালিয়াঘাট নতুন বাজার ও শ্রীপুর বাজারে আসা লোকজন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এদিকে বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে কাউকান্দি বাজার পর্যন্ত সড়কটি গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, বড় বড় ব্রিজ দিয়ে কি হবে যদি আভ্যন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কার না করা হয়।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, গত ১০ বছর আগে বালিয়াঘাট নতুন বাজর সড়কটির কিছু স্থানে ব্লক বসালেও এখন পর্যন্ত সড়ক আর পাকা করা হয়নি। ব্লকগুলো ফাঁকা হয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। মাঝে মধ্যে সড়কের ভাঙাচুরা গর্তগুলো সংস্কার করা হলেও বৃষ্টির পানি, হাওরের ঢেউ এবং ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে আবারো ভেঙে গেছে। ফলে অটো ও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী নিয়ে প্রায় সময়েই এখানে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন।

বালিয়াঘাট গ্রামের রেজাউল জানান, জরুরি ভিত্তিতে বর্ষা মৌসুম আসার পূর্বেই এ সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন। না হয় এটি আর সড়ক থাকবে না।
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজন জানান, আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এমন ভাঙাচুরা সড়ক দিয়ে একবার গেলে দ্বিতীয়বার আর যেতে ইচ্ছে করে না। আমরা এ সড়কটির দ্রুত সংস্কার চাই। যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে পারে।

স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আমির আলী বলেন, এ সড়কটির অবস্থা খুবেই নাজুক। চলাচলের জন্য পুরোটাই একেবারে অনুপযোগী। সড়কটি যাতে দ্রুত সংস্কার হয়, সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত।

মোটরসাইকেল চালক জজ মিয়া বলেন, পেটের দায়ে আমরা মোটরসাইকেল চালাই। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে মন চায় না। কিন্তু নিরুপায় হয়ে আমাদের গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ভাঙ্গাচুরা সড়কে গাড়ি চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে এবং কয়েকদিন পর পর এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে।

টমটম চালক মহিম উদ্দিন জানান, গত বছরের বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা এলজিইডি থেকে এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। প্রতিনিয়ত তারা ঝুঁকি নিয়ে ভাঙাচুরা সড়ক দিয়েই গাড়ি চালাচ্ছন।

শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী হায়দার বলেন, জনবহুল এই সড়কটি এলজিইডি’র আওতাধীন নেয়া হয়েছে। আসা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।

তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল্লাহ খান বলেন, এই সড়কটির সার্ভের কাজ চলমান। কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।