নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দিল্লির এক সেলফিতেই বিএনপির রাতের ঘুম হারাম। তাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের আশা ভেঙে গেছে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে লাফালাফি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক করেছেন। এই বুঝি ক্ষমতা আসে, মুয়ুর সিংহাসন। দিন যায়, মাস যায়, দেখতে দেখতে ১৫ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর। মানুষের মনে আস্থা রাখতে পারছে না।
তিনি বলেন, এখন কাকে দেখাবে? কে নিষেধাজ্ঞা দেবে? কে ভিসানীতি দেখাবে? এইসব আমরা ভয় পাই না। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, ওদের তো নেতা নেই। বিএনপির ইউরোপ-আমেরিকার স্বপ্নও ভেঙে গেছে।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। তাই কাউকে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের ভালোবাসা নিয়েই আছে। এ দল সন্ত্রাসী, সাম্প্রদায়িক কিংবা অপকর্মকারীদের দল নয়। জনকল্যাণে আওয়ামী লীগ সবসময় সতর্ক অবস্থান জানান দেয়।
অর্থ খরচ করে ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি কেনা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি একেক সময় একেক জায়গায় ভর করে। হঠাৎ দেখলাম ইউনূস সাহেবের জন্য ১৬০ জনের বিশাল চিঠি। এই চিঠির দাম কত? এই স্টেটমেন্টের দাম দুই মিলিয়ন ডলার। ওই চিঠি কিনতে দুই মিলিয়ন ডলার লেগেছে। কোথায় পান এত টাকা? শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করে এগুলো চলছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ফখরুল বলেন আওয়ামী লীগ ড. ইউনূসকে অপমান করে এবং নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত গণ্যমাণ্য ব্যক্তিকে ছোট করে। যে মানুষ শহীদ মিনারে আসে না, স্মৃতিসৌধে আসে না, ১৫ আগস্টে কোনো শোক প্রকাশ নেই, এমনকি জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নেই…. তিনি তো আমাদের দুঃখ-কষ্টে নেই, তাহলে সে মানুষকে আপন ভাববে কী করে? আমাদের জন্য তার কোনো দরদ নেই। দেশের কোনো সংকটে তার কোনো অবদান নেই। তাহলে আমরা তাকে কেন ভালোবাসবো?
তিনি বলেন, নোবেল বিজয়ী হয়েও তিনি আমাদের দেশের কোনো দুঃখ-কষ্টে নেই। তার জন্য বিএনপির এত মায়াকান্না কেন আমি জানতে চাই। তারা ভেবেছে ওয়ান ইলেভেনের মতো একটি নাগরিক কমিটি করে সুশীল সরকার গঠন করবে। সেদিন চলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ কাকে ভোট দেবে সেটি তারা মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দল নয়, সাম্প্রদায়িক দল নয় ও অপকর্মের দল নয়। আওয়ামী লীগ সত্য ও জনগণের পক্ষে। যেকোনো অবস্থানে আওয়ামী লীগ সুদৃঢ় অবস্থানের জানান দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির আন্দোলনে জনগণ নেই। শুধু আছে নেতাকর্মী। বিএনপি নেতারা কর্মীদেরকে আশ্বাস দিচ্ছে যে— ভয় পেয়ো না আমেরিকা ও ইউরোপ আছে। তারা কর্মীদের কত কথা শোনাচ্ছে! অথচ একটি সেলফি দেখে কর্মীরা আর আশা রাখতে পারছে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, টেমস নদীর তীরে বসে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন বিএনপির নেতা। তলেতলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে না।
বিএনপি ভেবেছে ১/১১ এর মতো একটা সুশীল সরকার আসবে। তা আর হবে না। জনগণ কাকে ভোট দিবে ঠিক করে ফেলেছে। জরিপে ৭০% লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দিবে। নেতিবাচক রাজনীতির জন্য জনগণ বিএনপিকে না করে দিয়েছে। আগামী নির্বাচন বলে দিবে কে ক্ষমতার মঞ্চে থাকবে। বুঝতে পারলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। ফাইনাল খেলা হবে নির্বাচনের মাঠে বলেও জানান তিনি।
এ সময় যুবলীগকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের বলিষ্ঠ অবস্থান নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন তিনি।
যুবলীগের প্রশংসা করে কাদের বলেন, যুবলীগ রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে এক বৈশাখী ঝড়। নেত্রী কোনো ভুল করেননি। এখন পর্যন্ত যুবলীগ আন্দোলন সংগ্রামে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ। যুবলীগ এখন পর্যন্ত অন্য সংগঠনের অনুকরণীয়। ভালো কাজের প্রশংসা হওয়া উচিত। তাহলে আরও বেশি করে ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবে। যার যা প্রাপ্য তা স্বীকার করা উচিত। ভালো কাজের প্রশংসা পাওয়া উচিত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম রাজনীতিতে যুবলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে এটাই ভালো কাজ। এখানে যারা আসেন তারা সারাজীবন যুবলীগ করবে না। খারাপ যুবক আমাদের প্রয়োজন নেই। ভালো দুইজন অনেক ভালো। খারাপ ২০ জন অনেক খারাপ। খারাপরা নিজের অর্জনকে বির্সজন দেয়। খারাপ আচরণের জন্য আমাদের মানুষের কাছে ছোট করে। আমরা জনগণের দল, জনগণের সঙ্গে আছি, জনগণকে ভালোবাসি, আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িক দল না।
যুবলীগের চেয়ারম্যান ভালো বক্তব্য দেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। গদবাধা কথা এখন আর কেউ শুনতে চায় না। কথা বলতে হবে, রাজনীতির বস্তুগত প্রস্তুতি, সুসংগঠিত প্রস্তুতির আলোকে, বঙ্গবন্ধু ও আমাদের নেত্রীর যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের আলোকে বব্তৃতা দিতে হবে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।