নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরবরাহ কম ও বন্যায় ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাতে বাজারে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতি জাতের চালের দাম খুচরা পর্যায়ে গড়ে ৬ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। যার ফলে সাধারণ ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির দাম আরও কমেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। ফলে অল্প টাকায় ব্যাগ ভরে সবজি কিনতে দেখা গেছে নগরবাসী।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম, অন্যান্য চালের দামও বাড়তি। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি মিনিকেটের দাম ছিল ৭৫ টাকা, যা বর্তমানে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেটের পর সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে নাজিরশাইল চালের দাম। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ছিল ৭০ থেকে ৭৮ টাকা, শুক্রবার তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়।
দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। দুই সপ্তাহ আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে ক্রেতাদের খরচ করতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। এছাড়া বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৪ থেকে ৯৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মানভেদে শিম ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ৩০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পাকা টমেটো কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, খিরাই ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং জলপাই ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৭০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, ঢেরস ৮০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা এবং কাঁচামরিচের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধনে পাতা ৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, কলমি শাক ১০, পুঁই শাক ৪০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
চলতি সপ্তাহে আলু ও পেয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের ৫৫-৬০ টাকার আলু প্রতি কেজিতে ৫ টাকা কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ৫ টাকা কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি রসুন ২৫০ টাকা ও ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি ২২০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বাহারী মাছে ভরপুর থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা বেড়েছে। আজকের বাজারে গোলসা মাছ ৭০০ টাকায়, গরিবের পাঙাস মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে । এছাড়াও দেশি কৈ ৮০০, চাষের কৈ ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০, বাইম ৮০০, রুই মাছ আকৃতি ভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০, বড় কাতল মাছ ৪৫০, ছোট কাতল ৩৫০, কার্প মাছ ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০, তেলাপিয়া ২৩০, চিংড়ি ৮০০, মলা মাছ ৩৫০ টাকা এবং শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে।
এদিকে গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে গরু-মুরগির মাংসের বাজারে । দোকানগুলোতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১০৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। এছাড়াও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা । দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। বোতলজাত ৫ লিটারের সয়াবিন ৮৫০ এবং এক লিটার ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খোলা পামওয়েল প্রতি লিটার ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিপিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। প্রতি ডজন ডিম ১৩০- ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।