Dhaka শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দাম বেড়েছে গরুর মাংসের, উত্তাপ কমেনি কাঁচা বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৭৫০ টাকা। আসন্ন ঈদুল ফিতরের কারণে দাম বেড়েছে বলে দাবি মাংস ব্যবসায়ীদের। স্বস্তি ফেরেনি সবজির বাজারেও। কাঁচা বাজার যেন সাধারণ মানুষের নাগালে আর আসছেই না। সবকিছুর বাড়তি দামে বাধ্য হয়েই কম কিনছেন সীমিত আয়ের মানুষেরা। এতে বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। আগে যে মাসিক খরচ হতো তা দিয়ে আর চলতে পারছে না তারা।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

মাংস বিক্রেতারা বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরের কারণে গরুর দাম বেড়েছে। বেশি দামে গরু কিনতে হচ্ছে বলে বাধ্য হয়ে তারা মাংসের দাম বাড়িয়েছেন।

তবে বিভিন্ন বাজারে দর কষাকষি করে নিলে কেজিতে ১০/২০ টাকা কমে কেনা যাচ্ছে গরুর মাংস। এসব বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা প্রতি কেজি। তবে বকরির মাংস পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

মাংসের বাজারের উত্তাপ ছড়িয়েছে সবজিতেও। রমজান শেষ হয়ে আসলেও অস্বস্তি কমেনি সবজির দামে। সবজি কিনতে গেলে মিলছে না ক্রেতা-বিক্রেতা কারও হিসাব। ফলে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে, কেউবা অল্প সবজি কিনে ফিরছেন।

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা৷ ঝিঙা ১২০ টাকা, করল্লা ও উচ্ছে ১০০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ১৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা কেজি। শসার কেজি ১২০ টাকা, এলাচি লেবুর হালি ৮০ টাকা, আর অন্যান্য লেবুর হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা হালিম মিয়া বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সবজির এতো দাম কখনো দেখিনি। রমজান হিসেবে দাম কম হওয়ার কথা। কারণ রমজানের শেষের অংশে সবজির চাহিদা কমে যায়। তারপরও এতো দাম কেন বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, আলু আর পেঁপে ছাড়া কোনো সবজি ৬০ টাকার নিচে নেই। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার ওপরে।

সবজির দাম বেশির কারণ জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা লিটন বলেন, জিনিস ভালো খাইলে দামও বেশি দেওয়া লাগে। এখানে কোনও হাইব্রিড নাই, সব দেশি সবজি।

বেসরকারি চাকরিজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, রমজানে সব কিছুর দাম বেশি। শসা, টমেটো, বেগুনসহ আরও কিছু সবজি কিনেছি। সবকিছুর দামই আমার কাছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি লেগেছে।
এছাড়া মুদি দোকান ঘুরে জানা যায় তেল-ডালের মতো দ্রব্যাদির দাম। মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা ও খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার।

মাছের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেখানেও আসেনি স্বস্তি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি ও এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৮৫০ টাকা কেজি। এছাড়া রুই মাছ ৩৫০- ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭৫০-৮০০ টাকা ও কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা কেজি।

বাজার করতে আসা জসিমউদদীন মানিক বলেন, আমি চিংড়ি আর বেলে মাছ কিনেছি। আমার কাছে দাম আজকে বেশি লাগে নাই। চিংড়ি কিনেছি ৮০০ টাকা আর বেলে কিনেছি ৫০০ টাকা কেজি। তবে মুরগির দাম বেড়েছে। শসার দাম বলে ১২০ টাকা কেজি! কি করবো বলেন।

পাশাপাশি দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৯০- ২১৫ টাকা। এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ২১০- ২২০ টাকা কেজি। কক মুরগি ৩৩০ টাকা ও গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা কেজি।

মুরগি বিক্রেতা সুমন বলেন, মুরগির দাম গত সপ্তাহ থেকে কিছুটা বাড়ছে। ঈদ আসতেছে তো তাই দাম একটু বেশি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন মন্তব্য করেই বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়াতে খরচও দিন দিন বাড়ছে। আগে দশ হাজার টাকায় মাসের বাজার হয়ে যেতো, এখন পনেরো হাজারেও হয় না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

দাম বেড়েছে গরুর মাংসের, উত্তাপ কমেনি কাঁচা বাজারে

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৭৫০ টাকা। আসন্ন ঈদুল ফিতরের কারণে দাম বেড়েছে বলে দাবি মাংস ব্যবসায়ীদের। স্বস্তি ফেরেনি সবজির বাজারেও। কাঁচা বাজার যেন সাধারণ মানুষের নাগালে আর আসছেই না। সবকিছুর বাড়তি দামে বাধ্য হয়েই কম কিনছেন সীমিত আয়ের মানুষেরা। এতে বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। আগে যে মাসিক খরচ হতো তা দিয়ে আর চলতে পারছে না তারা।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

মাংস বিক্রেতারা বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরের কারণে গরুর দাম বেড়েছে। বেশি দামে গরু কিনতে হচ্ছে বলে বাধ্য হয়ে তারা মাংসের দাম বাড়িয়েছেন।

তবে বিভিন্ন বাজারে দর কষাকষি করে নিলে কেজিতে ১০/২০ টাকা কমে কেনা যাচ্ছে গরুর মাংস। এসব বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা প্রতি কেজি। তবে বকরির মাংস পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

মাংসের বাজারের উত্তাপ ছড়িয়েছে সবজিতেও। রমজান শেষ হয়ে আসলেও অস্বস্তি কমেনি সবজির দামে। সবজি কিনতে গেলে মিলছে না ক্রেতা-বিক্রেতা কারও হিসাব। ফলে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে, কেউবা অল্প সবজি কিনে ফিরছেন।

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা৷ ঝিঙা ১২০ টাকা, করল্লা ও উচ্ছে ১০০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ১৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা কেজি। শসার কেজি ১২০ টাকা, এলাচি লেবুর হালি ৮০ টাকা, আর অন্যান্য লেবুর হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা হালিম মিয়া বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সবজির এতো দাম কখনো দেখিনি। রমজান হিসেবে দাম কম হওয়ার কথা। কারণ রমজানের শেষের অংশে সবজির চাহিদা কমে যায়। তারপরও এতো দাম কেন বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, আলু আর পেঁপে ছাড়া কোনো সবজি ৬০ টাকার নিচে নেই। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার ওপরে।

সবজির দাম বেশির কারণ জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা লিটন বলেন, জিনিস ভালো খাইলে দামও বেশি দেওয়া লাগে। এখানে কোনও হাইব্রিড নাই, সব দেশি সবজি।

বেসরকারি চাকরিজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, রমজানে সব কিছুর দাম বেশি। শসা, টমেটো, বেগুনসহ আরও কিছু সবজি কিনেছি। সবকিছুর দামই আমার কাছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি লেগেছে।
এছাড়া মুদি দোকান ঘুরে জানা যায় তেল-ডালের মতো দ্রব্যাদির দাম। মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা ও খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার।

মাছের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেখানেও আসেনি স্বস্তি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি ও এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৮৫০ টাকা কেজি। এছাড়া রুই মাছ ৩৫০- ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭৫০-৮০০ টাকা ও কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা কেজি।

বাজার করতে আসা জসিমউদদীন মানিক বলেন, আমি চিংড়ি আর বেলে মাছ কিনেছি। আমার কাছে দাম আজকে বেশি লাগে নাই। চিংড়ি কিনেছি ৮০০ টাকা আর বেলে কিনেছি ৫০০ টাকা কেজি। তবে মুরগির দাম বেড়েছে। শসার দাম বলে ১২০ টাকা কেজি! কি করবো বলেন।

পাশাপাশি দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৯০- ২১৫ টাকা। এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ২১০- ২২০ টাকা কেজি। কক মুরগি ৩৩০ টাকা ও গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা কেজি।

মুরগি বিক্রেতা সুমন বলেন, মুরগির দাম গত সপ্তাহ থেকে কিছুটা বাড়ছে। ঈদ আসতেছে তো তাই দাম একটু বেশি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন মন্তব্য করেই বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়াতে খরচও দিন দিন বাড়ছে। আগে দশ হাজার টাকায় মাসের বাজার হয়ে যেতো, এখন পনেরো হাজারেও হয় না।