নিজস্ব প্রতিবেদক :
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। সন্ধ্যার পর থেকে যা আরও কয়েকগুণ বাড়বে। এই মহাসড়কটি দিয়ে কয়েকটি জেলার মানুষ চলাচল করে থাকে। এবারের ঈদযাত্রায় তাদের জন্য ত্রিশালের ভেঙে পড়ে থাকা সেতুটি ভোগান্তির কারণ হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন যাত্রীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি ভেঙে পড়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের একপাশের লেন বন্ধ থাকায় ত্রিশাল থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্য যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে আজ সন্ধ্যার পর থেকে এই মহাসড়কে যে পরিমাণে যানবাহনের চাপ বাড়বে তাতে তীব্র যানজটের শঙ্কা রয়েছে।
চারলেনের সড়কটি ভাঙা সেতু এলাকায় এসে একলেন হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। তবে ভোগান্তি দূর করতে সেখানে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়ন থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল অনুমতিহীনভাবে ১২০ টন ওজনের লোড নিয়ে বিদ্যুতের একটি ট্রান্সফরমারবাহী লরি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাটে খিরু নদীর সেতু পারাপারের সময় মাঝখানের স্প্যানসহ ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এতে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চারলেনের মধ্যে দুইলেন। এরপর দুইমাস পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি ভেঙে পড়া সেতুটির মেরামত কাজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোনো অনুমতি ছাড়াই ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) গ্রিডের ১২০ টন ওজনের ট্রান্সফরমারবাহী ৪২ চাকার লরি দিয়ে সরবরাহ করছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৮০র দশকে নির্মিত ছিল বেইলি ব্রিজটি। নদীতে পানি কম থাকায় প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চারলেনের মধ্যে দুই লেন।
ওই ঘটনায় সরকারের ৩০ কোটি টাকা ক্ষতির দাবি করে মামলায়ও হয়। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে দুইমাস। চিটাগাং ড্রাইড্রপ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সেতুটি মেরামতের কাজ দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কার্যাদেশ অনুযায়ী ৬ জুন থেকে আগস্টের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে এখনও শুরু হয়নি ভেঙে পড়া সেতুটির মেরামত কাজ। ফলে প্রতিদিন জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বিভিন্নস্থানের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। আসন্ন ঈদযাত্রায় বহুগুণ বাড়বে যানবাহনের চাপ। এতে ওই স্থানে দেখা দিতে পারে তীব্র যানজট ও ভোগান্তি এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন জানান, যানজট স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে ত্রিশাল থানা পুলিশ। পুলিশের একটি টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, চিটাগাং ড্রাইড্রপ কোম্পানি লিমিটেডকে সেতুটি মেরামতের কাজ দেওয়া হয়েছে। আগস্টের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। জানা মতে মাপ অনুযায়ী স্টিলগুলো তৈরির কাজ শুরু করেছে তারা।
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, দুইমাস আগে সেতুটি ভেঙে পড়ায় ঈদকে সামনে রেখে আমরা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। দুই লেনের গাড়ি এখন একটি সেতু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে। এখানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্ব্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গাড়ির চাপ বাড়লে কিছুটা যানজট থাকলেও বড় ধরণের ভোগান্তি হবে না আশা করছি।