আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
তুরস্কে একটি স্কি রিসোর্টের হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় আতঙ্কিত হয়ে হোটেলের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েন। আহত হয়েছেন অর্ধশত। আগুনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে বোলু প্রদেশের কার্তালকায়া স্কি রিসোর্টে এই আগুন লাগে। এসময় হোটেলের অনেক অতিথি আতঙ্কে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন ও আনাদোলু নিউজ এজেন্সি।
আগুন লাগার সময় কাঠের তৈরি রিসোর্টে অন্তত ২৩৪ জন অতিথি ছিলেন।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া বলেছেন, হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৬৬ জন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, রিসোর্টের গ্র্যান্ড কার্টাল হোটেলের ১২ তলায় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ১১ তলা ভবনটির আগুন এবং ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা।
বোলু শহরের গভর্নর আব্দুল আজিজ আইদিন রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী টিআরটি-কে বলেন, রিসোর্টের রেস্তোরাঁর মেঝেতে ভোর ৩:৩০ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়।
আগুনের খবরে দেশটির ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট সেখানে মোতায়েন করা হয়। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকটি দমকল ইঞ্জিন ও অ্যাম্বুলেন্স আগুনে পোড়া ভবনের নিচে অবস্থান করছে। এ সময় হোটেলের বিভিন্ন তলার জানালায় বিছানার চাঁদর বেঁধে ঝুলিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন অতিথিরা।
তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিকে হোটেলের একজন অতিথি বলেন, আগুন থেকে বাঁচার জন্য লোকজন জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলের ছাদে দু’জন নারীকে দেখা যায়। আগুন কাছাকাছি আসায় তারা সেখান থেকে লাফিয়ে পড়েন।
হোটেলের আরেকজন অতিথি একোল টিভিকে বলেন, তিনি ও তার পরিবার আগুনের তাপে জেগে উঠেছিলেন। তারা আগুনের সতর্ক সংকেত শুনতে পাননি। পরে ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া হোটেলের করিডোরে প্রবেশ করেন তারা। সেখান থেকে নিচের তলার জানালা দিয়ে তুষারের ওপর লাফ দেন তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ারলিকায়া বলেন, কয়েকটি স্কি ঢালের গোড়ায় নির্মিত ওই হোটেলটিতে অগ্নিকাণ্ডের সময় ২৩৮ জন অতিথি ছিলেন। আগুন নিভিয়ে ফেলার পর সকালের দিকেও হোটেলটি থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। পুড়ে যাওয়া হোটেলটি শীতল করার প্রচেষ্টা চলছে। হোটেলের পেছনের অংশটি ঢালে হওয়ায় আগুন নেভানোর চেষ্টা কেবল সামনে ও পাশের দিক থেকে চালানো হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে টেলিফোনে কল পাওয়ার প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।