Dhaka শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন মাসে ৩২২ জন নারী ও শিশুকে ধর্ষণ

অধিকারের লোগো

গত তিন মাসে দেশে ৩২২ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২ নারী ও ৬ শিশুকে। এসব ঘটনায় আত্মহত্যা করেছেন ২ জন। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে আরো ৩৮ জনকে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নারীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

ধর্ষিতদের মধ্যে ১২১ জন নারী, ১৮৬ জন মেয়ে শিশু রয়েছে। ১৫ জনের বয়স জানা সম্ভব হয়নি। গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪২ জন নারী ও ৩৪ জন শিশু।
শুক্রবার মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ‘ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে’ এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনার ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করে হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসেও নারীরা ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, যৌতুক সহিংসতা এবং পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নারীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা চালানো অভিযোগ রয়েছে। এই সময়ে যৌন হয়রানিও ব্যাপকভাবে অব্যাহত ছিল। রিপোর্টে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরকার, ক্ষমতাসীন দলের ব্যক্তি ও নেতাদের সমালোচনা করার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ : ৯ দফা দাবি

এদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব মামলা দায়ের করেন। স্বাধীনভাবে তথ্য ও মতপ্রকাশ করা বাংলাদেশের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ১৭ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন, লাঞ্ছিত হয়েছেন ৯ জন, আক্রমণের শিকার ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৮ জন, গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ জন, মামলা হয়েছে ১৩ জনের বিরুদ্ধে।

রিপোর্টে বলা হয়, সরকারি দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত কাজের জন্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা যাবে না মর্মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে গত ৮ই সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এ ধরনের বিধান কার্যকর হলে সরকারি কর্মকর্তারা বিশেষ সুরক্ষা পাবেন এবং তাদের দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও অন্যায়ের বিষয়ে দায়মুক্তি লাভ করবেন। এই ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘দেশের সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত ৩ মাসে ৫৫ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। হত্যাকাণ্ডের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা সব সময়ই দাবি করেন যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

তিন মাসে ৩২২ জন নারী ও শিশুকে ধর্ষণ

প্রকাশের সময় : ০৬:২৫:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০২০

গত তিন মাসে দেশে ৩২২ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২ নারী ও ৬ শিশুকে। এসব ঘটনায় আত্মহত্যা করেছেন ২ জন। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে আরো ৩৮ জনকে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নারীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

ধর্ষিতদের মধ্যে ১২১ জন নারী, ১৮৬ জন মেয়ে শিশু রয়েছে। ১৫ জনের বয়স জানা সম্ভব হয়নি। গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪২ জন নারী ও ৩৪ জন শিশু।
শুক্রবার মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ‘ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে’ এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনার ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করে হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসেও নারীরা ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, যৌতুক সহিংসতা এবং পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নারীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা চালানো অভিযোগ রয়েছে। এই সময়ে যৌন হয়রানিও ব্যাপকভাবে অব্যাহত ছিল। রিপোর্টে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরকার, ক্ষমতাসীন দলের ব্যক্তি ও নেতাদের সমালোচনা করার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ : ৯ দফা দাবি

এদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব মামলা দায়ের করেন। স্বাধীনভাবে তথ্য ও মতপ্রকাশ করা বাংলাদেশের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ১৭ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন, লাঞ্ছিত হয়েছেন ৯ জন, আক্রমণের শিকার ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ৮ জন, গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ জন, মামলা হয়েছে ১৩ জনের বিরুদ্ধে।

রিপোর্টে বলা হয়, সরকারি দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত কাজের জন্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা যাবে না মর্মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে গত ৮ই সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এ ধরনের বিধান কার্যকর হলে সরকারি কর্মকর্তারা বিশেষ সুরক্ষা পাবেন এবং তাদের দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও অন্যায়ের বিষয়ে দায়মুক্তি লাভ করবেন। এই ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘দেশের সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত ৩ মাসে ৫৫ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। হত্যাকাণ্ডের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা সব সময়ই দাবি করেন যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়েছেন।