স্পোর্টস ডেস্ক :
এক দিন বিরতির পর আবারও শুরু হয়েছে বিপিএলের মাঠে লড়াই। দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে দুর্বার রাজশাহী। এদিন বোলিং করতে নেমে মিরপুরে তাণ্ডব চালালেন তাসকিন আহমেদ। একাই তুলে নিলেন ঢাকা ক্যাপিটালসের সাত উইকেট, যা স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো বাংলাদেশীর সেরা বোলিং। তবে, তাতেও স্বস্তি মেলেনি ঢাকা ক্যাপিটালসের। তাসকিনের রেকর্ডগড়া ৭ উইকেটের পরও ১৭৪ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাসকিনের ইতিহাস গড়া বোলিং ছাপিয়ে বিজয়-বার্লের ঝড়ে ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে দুর্বার রাজশাহী।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) মিরপুরে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে খেলতে নেমে ১৮ ওভার ১ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রাজশাহী।
১৭৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৩ রানেই ভেঙে যায় রাজশাহীর উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে মোহাম্মদ হারিসকে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়। একপ্রান্তে তিনি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও তাঁর সঙ্গী জিসান আলম থাকেন নিষ্ক্রিয়। ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি জিসান।
দুই ওপেনার জিসান, হারিসের বিদায়ে রাজশাহীর স্কোর হয়ে যায় ৩.৫ ওভারে ২ উইকেটে ৩১ রান। তৃতীয় উইকেটে এরপর ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন বিজয়। তবে এই জুটি খেলেছে ৩৩ বল। দশম ওভারের প্রথম বলে ইয়াসিরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আলাউদ্দিন বাবু।
৭৩ রানে রাজশাহী ৩ উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নামেন রায়ান বার্ল। বিজয় ও বার্ল ধীরেসুস্থে জুটি গড়তে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা হয়েছেন আক্রমণাত্মক। ঢাকার বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে দুজনেই ফিফটি তুলে নিয়েছেন। চতুর্থ উইকেটে বিজয়-বার্ল গড়েছেন ৫৬ বলে ১০৬ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে ছক্কা মেরে রাজশাহীকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান বিজয়। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৩ রান এসেছে তাঁর ব্যাটেই। ৪৬ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ৩ ছক্কা মেরেছেন তিনি। বার্ল আরও বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন। ৩৩ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৫৫ রান। ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান, মুকিদুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন বাবু একটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা ক্যাপিটালস অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। অবশ্য ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিটির। দলীয় ১৪ রানেই দুই ওপেনারের বিদায়ে চাপ বাড়ছিল। ৫ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন লিটন। আরেক ওপেনার তানজিদ ১০ বলে ৯ রান করে আউট হন।
শুরুর ধাক্কা ভালোভাবেই সামলেছেন স্টিফেন এসকিনাজি এবং শাহাদাত হোসেন দিপু। দেখেশুনে খেলে দলের রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। ফিফটির পথে ছিলেন দুজনই। তবে ২৯ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়ে গেছেন এসকিনাজি।। দিপু অবশ্য থামলেন ফিফটি ছুঁয়েই। ৪১ বলে ৫০ রান করেছেন তরুণ এই ব্যাটার।
এ ছাড়া ঢাকার আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। দুর্বার রাজশাহীর হয়ে রেকর্ডগড়া স্পেলে ৭ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১১ আসরের ইতিহাসে এটাই এখন সেরা স্পেল। পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের ১৭ রানে ৬ উইকেট নেয়ার কীর্তিকে। নিজের দ্বিতীয় ফাইফারের দিনে তাসকিন বদলালেন ইতিহাস। সঙ্গে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারীও এখন তাসকিন।
যদিও এই রেকর্ডে তিনি শীর্ষে আছেন যৌথভাবে। এর আগে মালয়েশিয়ার সাজরুল ইদ্রুস চীনের বিপক্ষে ৮ রানের খরচায় নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। ভাইটালিটি ব্লাস্টের ম্যাচে লেস্টারের বোলার কলিন অ্যাকারম্যান বার্মিংহামের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ১৮ রানের খরচায় ৭ উইকেট। এদের পাশে ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় বোলার হিসেবে এক টি-টোয়েন্টি ইনিংসে ৭ উইকেট নেয়ার কীর্তি এখন বাংলাদেশের তাসকিনের।