Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তারপরও কি সড়ক সন্ত্রাস কমেছে?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯২ জন দেখেছেন

যাত্রাবাড়ীতে নিহত ট্রাফিক পুলিশের স্বজনের আহাজারি

মঙ্গলবার রাতে সড়ক সন্ত্রাসে প্রাণ হারান বাবুল শেখ নামের এক ট্রাফিক পুলিশ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় তিনি প্রাণ হারান। অথচ এ বাবুল সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করতেন। বাবুল শেখ রাতে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরছিলেন। এর আগেই সড়ক সন্ত্রাসে তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়। বাসায় আর ফেরা হলো না তার। দেশের সড়কগুলো আজও নিরাপদ হয়নি। প্রতিদিনই সড়কে ঝড়ছে প্রাণ। লাশের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। কিন্তু গাড়ি চালকদের হুঁশ ফিরছেনা।

সড়ক সন্ত্রাসে জেরবার হাজারো পরিবার। কত যে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এর ইয়াত্তা নেই। আর এ সড়ক সন্ত্রাসের মাস্তান হলো ড্রাইভার। ওদের মাস্তানিতে সড়ক হয়ে উঠেছে সবার জন্যই অনিরাপদ। সাধারণ মানুষ, পথচারী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ কেউ বাদ যান না এ সন্ত্রাসের কালো থাবা থেকে।

এমনকি ড্রাইভারও কখনো কখনো এ সন্ত্রাসে প্রাণ হারায়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলন হয়েছে। বাস চাপায় শিক্ষার্থী হত্যায় রাষ্ট্রের মেরামত চাই প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়কে প্রতিবাদ জানাতে হাজির হয়েছিল ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তারপরও কি সড়ক সন্ত্রাস কমেছে? না! বরং দিন দিন তা বাড়ছে।

এসব ঘাতক ড্রাইভারদের হাতেই ফের তুলে দেয়া হচ্ছে স্টিয়ারিং নামক অস্ত্র। রাজধানীতে যে কোন স্পটে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে সড়কে চলন্ত বাসের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা করতে গিয়েই কলেজছাত্র রাজীবের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শরীর থেকে। পাশাপাশি লেগে থাকা দুটি বাসের মধ্যে ঝুলে থাকে রাজীবের হাতটি। এ দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেন সবাই।

একটি বাসে কম করে হলেও ৪০ থেকে ৫০ জন যাত্রী থাকেন। এসব যাত্রী মাত্র তিনজনের কাছে জিম্মি। হেলপার, কন্ডাক্টর ও ড্রাইভারের কর্মকান্ডে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। ড্রাইভারদের সন্ত্রাসের প্রতিযোগিতা চলে সড়ক-মহাসড়কে। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে, ঘষাঘষি করে বাস চলে। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে যান।

কিন্তু ড্রাইভাররা মনে হয় এতে আনন্দ পান। উল্লাস করেন। রাজীবের হাতের ছবিটা সড়ক সন্ত্রাসের একটি নমুনা মাত্র। প্রতিদিন এমন কত যে ঘটনা ঘটে তার ইয়ত্তা নেই। ক’টিইবা মিডিয়ায় আসে। অথচ সড়কে পরিবহন চলাচলের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। নগরীর রাস্তায় কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। সবাই জিম্মি ড্রাইভারদের কাছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে পরিস্থিতি প্রতিদিনই খারাপ হচ্ছে। সিস্টেমটাই খুব বিশৃঙ্খলাপূর্ণ। আমরা যা দেখি, আসলে উপসর্গটা দেখি। আমরা এমন কোনো পরিকল্পনা করিনি যেখানে বাস ড্রাইভাররা সুষ্ঠুভাবে গাড়ি চালাবে।

আমরা যখন যে এসেছে, রুট পারমিট দিয়েছি। মালিকরাও ফিক্সড ইনকামে চলে গেছে। ফলে দিনের শেষে এখন চালকরাই ব্যবসাটা করছে পুরো রাস্তায়। পরিবহন মালিকরাও রাস্তার পরিস্থিতির জন্য ব্যবস্থাপনার অভাবের কথা তুলে ধরেন।



 

বুধবার রাজধানীর গুলিস্তান হলের সামনে দাঁড়িয়ে দেখা যায় গাড়ি চারদিক থেকে আসছে। হলের সামনে যাত্রীরা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। শিকড় পরিবহনের একটি গাড়ি যাত্রী তুলছিল। এ সময় অপর একটি শিকড় গাড়ি পেছন দিক থেকে ওই গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় একজন যাত্রী উঠতে গিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। কিন্তু এ দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। পেছনের গাড়ির চালক জানান, ওই গাড়ি আমার আগের সিরিয়ালের। ও কেন আমার গাড়ি আসার পরও দাঁড়িয়ে থাকবে? ধাক্কা না দিলে সে যাবে না। তাই ধাক্কা দিয়েছি।

একটু এগিয়ে পল্টন মোড়ে দেখা যায়, মনজিল পরিবহনের দুটি বাস ঘষাঘষি করে চলছে। এভাবে মিনিট খানেক চলার পর একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে সড়কে পড়ে যায়। আর দুটি বাসের ভেতর থেকেই যাত্রীরা চিৎকার করছিল। কিন্তু কে শুনে কার কথা।

প্রায়ই দেখা যায়, এক গাড়ি অন্য গাড়িকে সাইড না দেয়ার দৃশ্য। এক পর্যায়ে পেছনের গাড়ি একটু সুযোগ পেলেই গাড়ি এগিয়ে দেয়। এ অবস্থায় লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। কখনো কখনো যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হন। সড়কে ড্রাইভারদের সন্ত্রাসের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

এ সন্ত্রাসে হাজারো পরিবারকে জীবনভর কান্নার সাগরে ভাসতে হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশও দায়সারা দায়িত্ব পালন করে। গাড়িতে মূল স্ট্যান্ড থেকে ওঠার সময় ধীরস্থির ভাবে উঠলেও পথে পথে গাড়ি চলন্ত অবস্থায় যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে। আবার নামতে গেলে কখনো সড়কের মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে নামতে বলে চালক আর হেলপার। এভাবে রিস্ক নিয়ে রাজধানীর যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন : ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস

বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর) এ জন্য সাত কারণকে চিহ্নিত করেছে। সংগঠনের মহাসচিব আশীষ কুমার দে জানিয়েছেন, যাত্রীদের অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে চালকদের কাছে। তিনি সাতটি কারণের মধ্যে প্রথম কারণ উল্লেখ করেন বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোকে। এছাড়া অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, নিয়ম ভঙ্গ করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং করার প্রবণতা, চালকদের দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল সড়ককে দায়ী করেন।

সড়ক দুর্ঘটনার নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের জরিপে ওঠে আসে ভয়াবহ তথ্য। ২০১৯ সালে শুধু সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে ৪৭০২টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫২২৭ জন। সবচেয়ে বেশি ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে রাজধানী ঢাকায়। নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে। কিন্তু প্রতিবছরই সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।

এই সড়ক সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হতে সবার আগে চালকদের প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। এজন্য কঠোর নজরদারি করতে হবে। সড়কগুলোকে লেনে ভাগ করে নির্দিষ্ট গাড়িকে লেনের বাইরে চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। এটা করতে পারলে সড়ক সন্ত্রাস হ্রাস পাবে অনেকটা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

তারপরও কি সড়ক সন্ত্রাস কমেছে?

প্রকাশের সময় : ০৬:০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০২০

মঙ্গলবার রাতে সড়ক সন্ত্রাসে প্রাণ হারান বাবুল শেখ নামের এক ট্রাফিক পুলিশ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় তিনি প্রাণ হারান। অথচ এ বাবুল সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করতেন। বাবুল শেখ রাতে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরছিলেন। এর আগেই সড়ক সন্ত্রাসে তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়। বাসায় আর ফেরা হলো না তার। দেশের সড়কগুলো আজও নিরাপদ হয়নি। প্রতিদিনই সড়কে ঝড়ছে প্রাণ। লাশের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। কিন্তু গাড়ি চালকদের হুঁশ ফিরছেনা।

সড়ক সন্ত্রাসে জেরবার হাজারো পরিবার। কত যে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এর ইয়াত্তা নেই। আর এ সড়ক সন্ত্রাসের মাস্তান হলো ড্রাইভার। ওদের মাস্তানিতে সড়ক হয়ে উঠেছে সবার জন্যই অনিরাপদ। সাধারণ মানুষ, পথচারী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ কেউ বাদ যান না এ সন্ত্রাসের কালো থাবা থেকে।

এমনকি ড্রাইভারও কখনো কখনো এ সন্ত্রাসে প্রাণ হারায়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলন হয়েছে। বাস চাপায় শিক্ষার্থী হত্যায় রাষ্ট্রের মেরামত চাই প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়কে প্রতিবাদ জানাতে হাজির হয়েছিল ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তারপরও কি সড়ক সন্ত্রাস কমেছে? না! বরং দিন দিন তা বাড়ছে।

এসব ঘাতক ড্রাইভারদের হাতেই ফের তুলে দেয়া হচ্ছে স্টিয়ারিং নামক অস্ত্র। রাজধানীতে যে কোন স্পটে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে সড়কে চলন্ত বাসের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা করতে গিয়েই কলেজছাত্র রাজীবের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শরীর থেকে। পাশাপাশি লেগে থাকা দুটি বাসের মধ্যে ঝুলে থাকে রাজীবের হাতটি। এ দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেন সবাই।

একটি বাসে কম করে হলেও ৪০ থেকে ৫০ জন যাত্রী থাকেন। এসব যাত্রী মাত্র তিনজনের কাছে জিম্মি। হেলপার, কন্ডাক্টর ও ড্রাইভারের কর্মকান্ডে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। ড্রাইভারদের সন্ত্রাসের প্রতিযোগিতা চলে সড়ক-মহাসড়কে। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে, ঘষাঘষি করে বাস চলে। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে যান।

কিন্তু ড্রাইভাররা মনে হয় এতে আনন্দ পান। উল্লাস করেন। রাজীবের হাতের ছবিটা সড়ক সন্ত্রাসের একটি নমুনা মাত্র। প্রতিদিন এমন কত যে ঘটনা ঘটে তার ইয়ত্তা নেই। ক’টিইবা মিডিয়ায় আসে। অথচ সড়কে পরিবহন চলাচলের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। নগরীর রাস্তায় কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। সবাই জিম্মি ড্রাইভারদের কাছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে পরিস্থিতি প্রতিদিনই খারাপ হচ্ছে। সিস্টেমটাই খুব বিশৃঙ্খলাপূর্ণ। আমরা যা দেখি, আসলে উপসর্গটা দেখি। আমরা এমন কোনো পরিকল্পনা করিনি যেখানে বাস ড্রাইভাররা সুষ্ঠুভাবে গাড়ি চালাবে।

আমরা যখন যে এসেছে, রুট পারমিট দিয়েছি। মালিকরাও ফিক্সড ইনকামে চলে গেছে। ফলে দিনের শেষে এখন চালকরাই ব্যবসাটা করছে পুরো রাস্তায়। পরিবহন মালিকরাও রাস্তার পরিস্থিতির জন্য ব্যবস্থাপনার অভাবের কথা তুলে ধরেন।



 

বুধবার রাজধানীর গুলিস্তান হলের সামনে দাঁড়িয়ে দেখা যায় গাড়ি চারদিক থেকে আসছে। হলের সামনে যাত্রীরা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। শিকড় পরিবহনের একটি গাড়ি যাত্রী তুলছিল। এ সময় অপর একটি শিকড় গাড়ি পেছন দিক থেকে ওই গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় একজন যাত্রী উঠতে গিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। কিন্তু এ দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। পেছনের গাড়ির চালক জানান, ওই গাড়ি আমার আগের সিরিয়ালের। ও কেন আমার গাড়ি আসার পরও দাঁড়িয়ে থাকবে? ধাক্কা না দিলে সে যাবে না। তাই ধাক্কা দিয়েছি।

একটু এগিয়ে পল্টন মোড়ে দেখা যায়, মনজিল পরিবহনের দুটি বাস ঘষাঘষি করে চলছে। এভাবে মিনিট খানেক চলার পর একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে সড়কে পড়ে যায়। আর দুটি বাসের ভেতর থেকেই যাত্রীরা চিৎকার করছিল। কিন্তু কে শুনে কার কথা।

প্রায়ই দেখা যায়, এক গাড়ি অন্য গাড়িকে সাইড না দেয়ার দৃশ্য। এক পর্যায়ে পেছনের গাড়ি একটু সুযোগ পেলেই গাড়ি এগিয়ে দেয়। এ অবস্থায় লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। কখনো কখনো যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হন। সড়কে ড্রাইভারদের সন্ত্রাসের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

এ সন্ত্রাসে হাজারো পরিবারকে জীবনভর কান্নার সাগরে ভাসতে হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশও দায়সারা দায়িত্ব পালন করে। গাড়িতে মূল স্ট্যান্ড থেকে ওঠার সময় ধীরস্থির ভাবে উঠলেও পথে পথে গাড়ি চলন্ত অবস্থায় যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে। আবার নামতে গেলে কখনো সড়কের মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে নামতে বলে চালক আর হেলপার। এভাবে রিস্ক নিয়ে রাজধানীর যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন : ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস

বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর) এ জন্য সাত কারণকে চিহ্নিত করেছে। সংগঠনের মহাসচিব আশীষ কুমার দে জানিয়েছেন, যাত্রীদের অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে চালকদের কাছে। তিনি সাতটি কারণের মধ্যে প্রথম কারণ উল্লেখ করেন বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোকে। এছাড়া অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, নিয়ম ভঙ্গ করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং করার প্রবণতা, চালকদের দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল সড়ককে দায়ী করেন।

সড়ক দুর্ঘটনার নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের জরিপে ওঠে আসে ভয়াবহ তথ্য। ২০১৯ সালে শুধু সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে ৪৭০২টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫২২৭ জন। সবচেয়ে বেশি ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে রাজধানী ঢাকায়। নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে। কিন্তু প্রতিবছরই সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।

এই সড়ক সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হতে সবার আগে চালকদের প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। এজন্য কঠোর নজরদারি করতে হবে। সড়কগুলোকে লেনে ভাগ করে নির্দিষ্ট গাড়িকে লেনের বাইরে চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। এটা করতে পারলে সড়ক সন্ত্রাস হ্রাস পাবে অনেকটা।