Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তামাকজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মৃত্যু : সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এম আব্দুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে বিষয়টি উত্থাপিত হয়।

তিনি বলেন, তামাক ব্যবহার, ধুমপান ও পরোক্ষ ধুমপানের কারণে বাংলাদেশে বছরে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের বাংলাদেশ ফ্যাক্টশিট ২০১৮-তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

মন্ত্রী বলেন, তামাকজনিত কারণে মৃত্যুহার কমানোর জন্য তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগ-অধিদপ্তর-দপ্তর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, তামাকের ব্যবহার কমানোর জন্য তামাকের উপর উচ্চহারে করারোপ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের পূর্বেই তামাকের উপর উচ্চহারে করারোপ করা প্রয়োজন। চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের পূর্বেই তামাকের উপর কর বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব সম্বলিত ডিও লেটার অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছিল।

ই-সিগারেট নামে নতুন একটি নেশাজাতীয় তামাক পণ্য বাজারে চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিশু, কিশোর-তরুণদের তামাকের নেশায় ধাবিত করতে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো এ পণ্য বাজারে এনেছে। এরই মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ ৩২টির বেশি দেশে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হয়েছে। আরও অনেক দেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশেও ই-সিগারেট আমাদানি নিষিদ্ধ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তামাক ব্যবহার, ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বাংলাদেশে বছরে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের বাংলাদেশ ফ্যাক্টশিট ২০১৮ তে বলা হয়েছে— বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার নামে রোগীদের হয়রানি করা হয় এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে কোনও অনিয়ম দেখা গেলে আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলো যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণে ‘স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা আইন-২০২৩’ প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। আইনটি প্রণয়ন হলে বেসরকারি পর্যায়ে রোগ নির্ণয়সহ স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশে হৃদ্রোগ, লিভার, কিডনি, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বহুবিধ কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া দেশে বুদ্ধিভিত্তিক পেশার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মানুষের কায়িক পরিশ্রম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। উপরন্তু তামাক, বিড়ি, সিগারেটের ব্যবহার অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উল্লিখিত রোগের অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে।’

করোনার ব্যয় প্রকাশ সমীচীন হবে না

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, চীন, ভারত ও কোভ্যাক্স থেকে সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মতামত এবং অর্থ বিভাগ, সিসিজিপি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। নন-ক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনায় সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ৯ হাজার ৭০৮ জন এইডস রোগী রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬ হাজার ৭৫ জন এবং মারা গেছে এক হাজার ৮২০ জন।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে উৎপাদিত হয়। বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের ওষুধ রফতানি হয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুন-আগস্ট পর্যন্ত দুই হাজার ২৪৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৮ টাকার ওষুধ রফতানি হয়েছে।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

তামাকজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মৃত্যু : সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এম আব্দুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে বিষয়টি উত্থাপিত হয়।

তিনি বলেন, তামাক ব্যবহার, ধুমপান ও পরোক্ষ ধুমপানের কারণে বাংলাদেশে বছরে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের বাংলাদেশ ফ্যাক্টশিট ২০১৮-তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

মন্ত্রী বলেন, তামাকজনিত কারণে মৃত্যুহার কমানোর জন্য তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগ-অধিদপ্তর-দপ্তর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, তামাকের ব্যবহার কমানোর জন্য তামাকের উপর উচ্চহারে করারোপ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের পূর্বেই তামাকের উপর উচ্চহারে করারোপ করা প্রয়োজন। চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের পূর্বেই তামাকের উপর কর বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব সম্বলিত ডিও লেটার অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছিল।

ই-সিগারেট নামে নতুন একটি নেশাজাতীয় তামাক পণ্য বাজারে চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিশু, কিশোর-তরুণদের তামাকের নেশায় ধাবিত করতে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো এ পণ্য বাজারে এনেছে। এরই মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ ৩২টির বেশি দেশে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হয়েছে। আরও অনেক দেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশেও ই-সিগারেট আমাদানি নিষিদ্ধ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তামাক ব্যবহার, ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বাংলাদেশে বছরে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের বাংলাদেশ ফ্যাক্টশিট ২০১৮ তে বলা হয়েছে— বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার নামে রোগীদের হয়রানি করা হয় এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে কোনও অনিয়ম দেখা গেলে আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলো যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণে ‘স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা আইন-২০২৩’ প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। আইনটি প্রণয়ন হলে বেসরকারি পর্যায়ে রোগ নির্ণয়সহ স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশে হৃদ্রোগ, লিভার, কিডনি, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বহুবিধ কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া দেশে বুদ্ধিভিত্তিক পেশার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মানুষের কায়িক পরিশ্রম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। উপরন্তু তামাক, বিড়ি, সিগারেটের ব্যবহার অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উল্লিখিত রোগের অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে।’

করোনার ব্যয় প্রকাশ সমীচীন হবে না

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, চীন, ভারত ও কোভ্যাক্স থেকে সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মতামত এবং অর্থ বিভাগ, সিসিজিপি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। নন-ক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনায় সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ৯ হাজার ৭০৮ জন এইডস রোগী রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬ হাজার ৭৫ জন এবং মারা গেছে এক হাজার ৮২০ জন।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে উৎপাদিত হয়। বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের ওষুধ রফতানি হয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুন-আগস্ট পর্যন্ত দুই হাজার ২৪৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৮ টাকার ওষুধ রফতানি হয়েছে।