নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, খোদা না করুন– অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা এই (নির্বাচন) প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না। আমরা চাই যথাসময়ে নির্বাচন হোক। তফসিল ঘোষণা করার যে সময় নির্ধারণ করা আছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আছি। খোদা না করুন, অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা এই প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না। তফসিল ঘোষণা করার কথা, এটা যদি বিলম্বিত করার কথা বলি, তাহলে তো নির্বাচন বিলম্বিত করার কথা বলা হবে। আমাদের দলের পক্ষ থেকে এখনো ওভাবে বলার মতো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
ঘোষিত নির্ধারিত সময়ে ভোটের জন্য তফসিল ঘোষণার পক্ষেও বিএনপির সায় থাকার কথা বলেছেন নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কাজেই আমরা আশা করি যে, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হতে পারে, কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানীতে উনি (খালেদা জিয়া) দ্রুতই সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন এবং এসে উনি এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন।
জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমরা তো বরাবর যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। আজকে থেকে না; এখন থেকে ১৪/১৫ বছর থেকে চাইছি। কারণ, আমরা নির্বাচন চাচ্ছি, জনগণের অধিকার আমরা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই, তার ভোটের অধিকার তাদেরকে দিতে চাই। এবং সে অধিকার প্রয়োগ করেই যেন তারা নির্ধারণ করতে পারে যে আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব কে পাবে। তাদের এই অধিকার বিলম্বিত হোক এটা আমরা চাই না।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির মধ্যে আগামী রোববার কমিশন সভা রয়েছে। ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে ইসির। এরপর দ্বিতীয় সপ্তাহের যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে।
ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়ার্ধে একই দিনে সংসদ ও গণভোট হবে।
দলের নির্বাচনি প্রস্তুতির মধ্যে বিএনপি এদিন বিকালেও ৩৬ জন নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এর আগে ঘোষণা করা হয়েছিল ২৩৬ প্রার্থীর নাম।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। শুক্রবার ভোরে তাকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে তফসিল নিয়েও কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বিএনপি চেয়ারপারসনের সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে দোয়া চান।
তিনি বলেন, আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। আল্লাহর মেহেরবাণীতে কাল ভোরবেলা চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন, আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। …এটা বিবেচনায় রেখে আজকেও আরও কিছু প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি। অর্থাৎ আমরা নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আছি। খোদা না করুন, অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা এই প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না।
দলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এমন অবস্থানও তুলে ধরেন তিনি।
“আমাদের দলের পক্ষ থেকে এভাবে আলোচনা করা হচ্ছে এবং আমরা এখনও বলছি যে যথাসময়ে নির্বাচন হোক, যেটা ঘোষণা হয়েছে সেই অনুযায়ী। এবং সে কারণে যখন তফসিল ঘোষণা করার কথা, এটা যদি বিলম্বিত করার কথা বলি তাহলে তো নির্বাচন বিলম্বিত করার কথা বলা হবে। আমরা এটা ওভাবে বলার কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের দলের নেই।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে কখন আসছেন তা-ও চূড়ান্ত হয়নি। ভোটারও হননি তিনি।
দেশে ও প্রবাসে ভোটার নিবন্ধন হয়ে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
নির্বাচন করতে হলে তারেক রহমানকে ভোটার হতে হবে। তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির এ পর্যায়ে কমিশন চাইলে তাকে ভোটার করার করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। প্রবাসে ও দেশে ভোটার হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভোটার তালিকাভুক্ত হতে কোনো ধরনের সংকট নেই।
“এটা নিয়ে আলোচনারই কিছু আছে মনে করি না। তিনি তো বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি (তারেক রহমান) ভোটার তালিকায় আইসা পড়বেন, নাম উঠানোর (ভোটার তালিকায়) জন্য সময় পার হয়ে যায় নাই তো।”
ইসি চাইলে যথাসময়ে ভোটার করার এখতিয়ারের বিষয়টি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরাও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হচ্ছি না। আপনারও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন– চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।
নিজস্ব প্রতিবেদক 























