নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তার দল চায় না তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। তার দল মনে করে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ তিন মাসের বেশি হওয়া উচিত না। যদিও কমিশন প্রস্তাব করেছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস হওয়া উচিত।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠকের মধ্য বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের ব্যাপারে তার দল আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনসহ তাতে জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছে। এর বাইরে সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবে। যদি কোনও সময় যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়, তাহলে যাতে পার্লামেন্ট মেম্বাররা তার জন্য ভোট দিতে পারে, সেটা ৭০ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আমরা নোট অব ডিসেন্ট দেবো।
তিনি বলেন, ‘তার দল সংসদের সব স্থায়ী কমিটির প্রধানদের পদে বিরোধী দল থেকে দেওয়ার ব্যাপারে একমত নয়। কয়েকটা কমিটিতে প্রধান বিরোধী দল থেকে করা যেতে পারে। তবে সব স্থায়ী কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে দেওয়াকে তারা বাস্তবসম্মত প্রস্তাব মনে করে না। বিএনপি এখনও নারী আসন নিয়ে আলোচনা করেনি।
তিনি আরো বলেন, কমিশনের সুপারিশ ছিল আস্থা ভোট, অর্থবিল ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিল বাদে বাকি সমস্ত বিষয়ে জাতীয় সংসদের সদস্যরা স্বাধীন থাকবেন। কিন্তু আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে আমরা এই তিনটি বিষয় ছাড়াও জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়কে এখানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছি।
রাষ্ট্রে যদি কোনো কারণে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়, তবে জাতীয় সংসদে অবশ্যই এ বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধু সরকারি দল নয়, সমস্ত দলকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেই জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে জানিয়ে সালাগউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি ছাড়া অন্য দুই বিষয়ে প্রায় সবাই-ই একমত হয়েছেন। কেউ কেউ বিস্তারিত আলাপের জন্য সময় চেয়েছেন। এই তিনটা বিষয়ে যদি একমত হওয়া যায়, তবে আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টা আলাদাভাবে উপস্থাপন করব এবং আমাদের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে এটা থাকবে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কেও মত দেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তাদের প্রস্তাবনা ছিল সব স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের হবে। এটা বাস্তবতা বহির্ভূত। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে হতে পারে, কিন্তু সবাই যদি বিরোধী দল থেকে হয়, তবে সরকার তার কার্য পরিচালনা করতে সবসময় বাধাগ্রস্ত হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঈদের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনায় বসছে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং জুলাই মাসে একটি ঐকমত্যভিত্তিক ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের লক্ষ্যেই ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই আলোচনা চলছে।