নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দুনিয়ার কারও সঙ্গেই রাশিয়া কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না বলে দাবি করেছেন ঢাকাস্থ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত এ দাবি করেন।
বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো বিপ্লব বা অভ্যুত্থান হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার সম্প্রতি দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সালে তৎকালীন সোভিয়েত নৌ-বাহিনীর সদস্যরা চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে মাইন অপসারণে সহায়তা করেছিল। সেটা তুলে ধরতেই আমরা এখানে সংবাদ সম্মেলন করছি। তবুও প্রশ্ন যেহেতু এসেছে এ জন্য বলছি, এখানে পশ্চিমা দেশগুলো কী করেছে এবং করছে তা আমি আগে বলেছি। তবে এটা এই নয় যে, এখানে প্রভাব বিস্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। তাদের সঙ্গে আমাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।
গত ১৫ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ বিষয়ে এক বিবৃতি দেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তের’ মতো করে বাংলাদেশকে আরও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হতে পারে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্কের কথা বলেন রুশ মুখপাত্র।
বাংলাদেশ বিষয়ে রুশ মুখপাত্রের বিবৃতির দুই দিন পর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মোমেন বাংলাদেশে আরব বসন্তের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া কী বলেছে, এটা আমাদের ইস্যু নয়। অনেকে অনেক ধরনের কথা বলবে, আমরা এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে, আমার তো মনে হয় না বাংলাদেশে আরব বসন্তের কোনো সম্ভাবনা আছে।’
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে মাইন অপসারণে সহায়তা করেছিল রাশিয়ার নৌ-বাহিনী। সে সময় রাশিয়ার নৌ-বাহিনীর সাবেক দুই সদস্য বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে এসেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।
রাশিয়ার নৌ-বাহিনীর সাবেক সদস্য ভিটালি গুবেনকো চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে মাইন অপসারণের স্মৃতিচারণ করে বলেন, মাইন অপসারণের জন্য ১৯৭২ সালে আমি চট্টগ্রাম আসি। সে সময় কাজটি খুব কঠিন ছিল। দুই বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মাইন অপসারণ করা হয়। পরে বন্দর দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। তখন স্থানীয় জনগণ খুব সহযোগিতা করেছিল।
বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫০ বছর পর এসে নতুন এক বাংলাদেশ দেখছি। এখানে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এটা দেখে খুব আনন্দ হচ্ছে।