পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগে ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহী নৌযান খাতে। সেই সংকট আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসে ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির সিরিজ ১৬তম এই বিলাসবহুল নৌযান। সুন্দরবন নেভিগেশনের স্বত্ত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও।
সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, নৌপরিবহনে নতুন সংযুক্ত হতে যাওয়া সুন্দরবন-১৬ দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী যতগুলো লঞ্চ রয়েছে তার মধ্যে সর্ববৃহৎ। লঞ্চটিতে যাত্রী ধরে রাখতে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। চেষ্টা করেছি আগের যতগুলো লঞ্চ রয়েছে তার থেকেও ভালো সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করার। আগামী এক মাসের মধ্যে যাত্রীসেবায় যুক্ত হবে লঞ্চটি।
শিপইয়ার্ডে কোম্পানির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চটি হবে সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির ফ্লাগশিপ। কোম্পানির অন্যান্য লঞ্চের ক্যাপসুল ডিজাইন থেকে বাহ্যিক কাঠামোতে পরিবর্তন এনে ডেক ও কেবিনের সামনে চলাচলের প্রশস্ত জায়গা, পর্যাপ্ত টয়লেট, ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রী সেবায় লঞ্চে থাকবে প্রশিক্ষিত কর্মী। নিচ তলা থেকে চার তলায় ৫ হাজারের অধিক এলইডি ও সাধারণ লাইটের সংযোজনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
দৈর্ঘ্যে ৩০০ এবং প্রস্থে ৫৪ ফুটের লঞ্চটি সরকারিভাবে ১২০০ থেকে ১৫০০ যাত্রীর ধারণক্ষমতার অনুমতি পেতে পারে। তবে প্রয়োজন সাপেক্ষে ১০ হাজারের মতো যাত্রী বহন করা যাবে। এতে লিফট, ডুপ্লেক্সতো থাকছেই। তাছাড়া দুই শতাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন ভিআইপি, সেমি ভিআইপি, ইকোনমি, ফ্যামিলি, সিঙ্গেল ও ডাবল শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সোফার ব্যবস্থাও থাকবে। লঞ্চে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া থাকবে রাতে চলাচলের জন্য উন্নত প্রযুক্তির রাডার ও জিপিএস। নদীর ডুবোচর ও পানির পরিমাণ নির্ধারণ করে বসানো হচ্ছে ইকো সাউন্ডার।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সুন্দরবন নেভিগেশন থেকে এখনো আমাদের জানায়নি কবে নাগাদ লঞ্চটি নামাবে। যেহেতু নতুন লঞ্চের সার্ভে ও ফিটনেস সনদ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় দেয়, সেজন্য বিস্তারিত না বলতে পারছি না। যদি আগামী এক মাসের মধ্যে লঞ্চটি যুক্ত হয়, তাহলে এটি ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের জন্য বড় ধরনের সুখবর।