Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (ঢাকা উড়াল সড়ক) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রান্তের কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে তিনি প্রথম ধাপের এ উদ্বোধন করেন। পরে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এ প্রকল্প সম্পর্কে সচিবের দেওয়া প্রেজেন্টেশন দেখেন ও ব্রিফ শোনেন।

উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সরকার দলীয় নেতা এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

উদ্বোধনের পর টোল পরিশোধ করে প্রধানমন্ত্রী তার গাড়িবহর নিয়ে উড়ালসড়কে উঠেন। এক্সপ্রেসওয়ের বিজয় সরণি প্রান্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার গাড়িবহর নিয়ে আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে যান। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের বক্তব্য দেবেন।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ৬০ কিলোমিটার গতির একটি গাড়ি মাত্র ১০ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে দুপুর সোয়া ২টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শিল্পী রাজিবের ‘বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ’ গান দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্বোধন ঘিরে এক্সপ্রেসওয়ের দুপাশ প্ল্যাকার্ড ও পতাকা দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।

এদিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে সকাল থেকে দলে দলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুরোনো বাণিজ্যমেলার মাঠে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই মাঠে জনতার ঢল নামে।

তবে দুপুর ১টার দিকে হঠাৎই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের কড়া নিরাপত্তায় উদ্বোধনস্থলে ঢুকতে দিতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুর আড়াইটায় একই চিত্র দেখা যায় প্রবেশমুখগুলোতে।
দেশের প্রথম এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এর প্রথম অংশের উদ্বোধন হলো আজ। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। আগামীকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য এক্সপ্রেসওয়েটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

উড়াল সড়কটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনসহ ভ্রমণে সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এ উড়াল সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।

এরই মধ্যে এই উড়াল রুটের টোল প্লাজা ও ওঠানামার র‌্যাম্পের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। দ্রুতগতির এ উড়াল সড়কে কাওলা, কুড়িল, মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও ও ফার্মগেটে টোলপ্লাজা থাকবে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রমে সময় লাগবে ১২-১৫ মিনিট। বর্তমানে এ অংশটুকু যেতে আসতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের জন্য যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২১ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের টোলহার জানায়। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) টোল ফি (টাকা ও ভ্যাটসহ) নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (৬ চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

শনিবার থেকেই এ টোলহার কার্যকর হবে। নির্ধারিত অংশের যেকোনো স্থানে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে এ টোলহার প্রযোজ্য হবে।

শনিবার নির্ধারিত কিছু গাড়ি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সবধরনের যানবাহনের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে।

তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে পথচারীদের চলাচল এবং বাইসাইকেল চলানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপাতত মোটরসাইকেল-অটোরিকশার মতো তিন চাকার যানবাহন চলাচল করবে না বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিক দেশের বৃহত্তম প্রকল্প।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (ঢাকা উড়াল সড়ক) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রান্তের কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে তিনি প্রথম ধাপের এ উদ্বোধন করেন। পরে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এ প্রকল্প সম্পর্কে সচিবের দেওয়া প্রেজেন্টেশন দেখেন ও ব্রিফ শোনেন।

উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সরকার দলীয় নেতা এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

উদ্বোধনের পর টোল পরিশোধ করে প্রধানমন্ত্রী তার গাড়িবহর নিয়ে উড়ালসড়কে উঠেন। এক্সপ্রেসওয়ের বিজয় সরণি প্রান্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার গাড়িবহর নিয়ে আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে যান। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের বক্তব্য দেবেন।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ৬০ কিলোমিটার গতির একটি গাড়ি মাত্র ১০ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে দুপুর সোয়া ২টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শিল্পী রাজিবের ‘বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ’ গান দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্বোধন ঘিরে এক্সপ্রেসওয়ের দুপাশ প্ল্যাকার্ড ও পতাকা দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।

এদিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে সকাল থেকে দলে দলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুরোনো বাণিজ্যমেলার মাঠে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই মাঠে জনতার ঢল নামে।

তবে দুপুর ১টার দিকে হঠাৎই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের কড়া নিরাপত্তায় উদ্বোধনস্থলে ঢুকতে দিতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুর আড়াইটায় একই চিত্র দেখা যায় প্রবেশমুখগুলোতে।
দেশের প্রথম এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এর প্রথম অংশের উদ্বোধন হলো আজ। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। আগামীকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য এক্সপ্রেসওয়েটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

উড়াল সড়কটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনসহ ভ্রমণে সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এ উড়াল সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।

এরই মধ্যে এই উড়াল রুটের টোল প্লাজা ও ওঠানামার র‌্যাম্পের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। দ্রুতগতির এ উড়াল সড়কে কাওলা, কুড়িল, মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও ও ফার্মগেটে টোলপ্লাজা থাকবে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রমে সময় লাগবে ১২-১৫ মিনিট। বর্তমানে এ অংশটুকু যেতে আসতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের জন্য যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২১ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের টোলহার জানায়। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) টোল ফি (টাকা ও ভ্যাটসহ) নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (৬ চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

শনিবার থেকেই এ টোলহার কার্যকর হবে। নির্ধারিত অংশের যেকোনো স্থানে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে এ টোলহার প্রযোজ্য হবে।

শনিবার নির্ধারিত কিছু গাড়ি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সবধরনের যানবাহনের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে।

তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে পথচারীদের চলাচল এবং বাইসাইকেল চলানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপাতত মোটরসাইকেল-অটোরিকশার মতো তিন চাকার যানবাহন চলাচল করবে না বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিক দেশের বৃহত্তম প্রকল্প।