নিজস্ব প্রতিবেদক :
এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের এবারও আশঙ্কাজনক রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের সর্বোচ্চ এক হাজার ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় নতুন করে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এটিও এ বছরে সর্বোচ্চ। ফলে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৮ জনে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়ই ৪৩৪ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৬৭ জন, বরিশালে ৭৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮৩ জন, খুলনায় ১৩৪ জন, ময়মনসিংহে ৪৮ জন ও রাজশাহীতে ৫৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত এক দিনে সারাদেশে ১০৯০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৬ হাজার ৩৩১ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার ৭৮৬ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
১ জানুয়ারি থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৃত ১৫৮ জনের মধ্যে ৫১ দশমিক তিন শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।