Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আপনারা জানেন ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। ৬টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো খুবই ইতিবাচকভাবে সংস্কার কাজে সাড়া দিয়েছে, তাদের মতামত তুলে ধরছেন। কোন রাজনৈতিক দল কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে, কোনটিতে দ্বিমত হয়েছে- সেসব তারা জানাচ্ছেন। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত সুখকর বিষয় যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে মত দিচ্ছেন। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার কাজ এখন চলমান আছে।

সরকারপ্রধান বলেন, কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে যে সকল বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে সেগুলো চিহ্নিত করা এবং তার একটা তালিকা প্রস্তুত করা। যেসব দল এতে একমত হয়েছে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া। এই তালিকাটিই হবে জুলাই চার্টার বা জুলাই সনদ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দায়িত্ব, জাতির সামনে পুরো প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা এবং প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা চাই, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনায় নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি।

বিগত সরকারের আমলে চর দখলের মতো ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা

তিনি বলেন, দখলের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে। এসব টাকা আবার বিদেশে পাচার করা হয়েছে । তবে বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে। ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে।

হাসিনা সরকারের আমলে টাকা পাচারের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত সরকারের লুটপাটের মহোৎসবে গত ১৫ বছরে ২৪৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। পাচারের একটি পদ্ধতি সবাইকে অবাক করেছে। একজন ব্যক্তি বিদেশে তার অধ্যয়নরত সন্তানের কাছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলার বা ৪০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের প্রেক্ষিত বদলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের দেশের নারীরা দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে বহু বছর ধরে অনেক বাধা পেরিয়ে একটু একটু করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও এ দেশের নারীরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বৈষম্যের শিকার।

প্রধান উপদেষ্ট বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে তার মধ্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল সবচাইতে বেশি। গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা দুঃসাহসিক ভূমিকা রেখেছে। পুরোনোকে দূরে ঠেলে দিয়ে নতুনের ভিত্তি স্থাপনের প্রতিজ্ঞা নিয়েছে। তারা ব্যাপক সংস্কারের কথা বলেছে। সর্বত্র নারীদের ভূমিকা আরও জোরালো করার কথা বলেছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের প্রেক্ষিত বদলে দিয়েছে। জুলাইয়ের পর নারীদের অবস্থান ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন হবে সেটাই আমরা চাই। আমরা বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে চাই। আর এই নতুন ভাবনায় নারীদের অবস্থান উচ্চতম পর্যায়ে অগ্রাধিকার পাক সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের সকল সদস্য, পাড়া-প্রতিবেশী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্কুল—আপনারা আপনাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে যেন কোনো বৈষম্য না সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করুন। আসুন, নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে শিশুদের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করি।

ড. ইউনূস বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশে বিরাজমান বৈষম্যগুলো চিহ্নিত করে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বৈষম্য নিরসনে আমাদের প্রত্যেককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলে, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা, নারীকে খাটো করে রাখার প্রবৃত্তি যারা ধারণ করে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তি সকল প্রকার বাধা ভেঙে দেয়ার মহাশক্তি আমাদেরকে দিয়েছে। সে বাধা যত শক্তই হোক, যত উঁচুই হোক। সকল দূরত্ব ঘোচানোর জন্য প্রযুক্তিকে অবশ্যই যেন আমরা ব্যবহার করতে আরম্ভ করি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদের সুরক্ষায় পুলিশ হটলাইন নম্বর চালু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে শর্ট-কোড চালু করা হচ্ছে। কল-টেকার হিসেবে শতভাগ নারী কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যেন নির্দ্বিধায় কথা বলা যায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে, বিচার বিলম্বে বাধা দুর করা হচ্ছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ডিএনএ ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। খুব দ্রুতই বিশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নতুন অনেক বিচারক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ভিকটিম শিশুরা যাতে দ্রুত বিচার পায় সেজন্য আলাদাভাবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের সবার মতো আমিও অত্যন্ত আনন্দিত যে এবার নারী ফুটবল টিম দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। দেশজুড়ে আয়োজিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ এ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৭ লক্ষ ৪০ হাজার মেয়েরা প্রায় তিন হাজার খেলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করেছে। উৎসবে দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত অঞ্চল, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং ২১টি নৃগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীসহ সকলের সার্বজনীন অংশগ্রহণ ছিল।

তিনি বলেন, এ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো তরুণদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা, সহযোগিতার নীতি প্রচার এবং তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা যাতে করে তারা আত্মনির্ভর হতে পারে, দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠতে পারে। আমরা তারুণ্যের এই উৎসব সারা বছর জুড়ে উদযাপন করার ঘোষণা দিয়েছি। এ উৎসবে আমরা গ্রাম উপজেলা শহর বন্দর সকল এলাকার আবালবৃদ্ধবণিতাকে এবং স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের সবাইকে নানা প্রকারের সৃজনশীল কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রতিটি এলাকায় এই উৎসবে যোগদান করতে মেয়েদের যেন বিশেষভাবে উৎসাহিত করা যায় সেজন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। কোথায় এটা কীভাবে উদযাপিত হচ্ছে সে ব্যাপারে জানার জন্য আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করলাম। বিভিন্ন পর্যায়ে দেশের সেরা গ্রাম, সেরা উপজেলা সেরা শহর, সেরা প্রতিষ্ঠান, সেরাব ব্যক্তিকে পুরস্কার দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকবো।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারী অধিকারের পাশাপাশি একইরকম গুরুত্বের সঙ্গে মনে রাখতে হবে সংখ্যালঘুদের নাগরিক অধিকার। সমতল ও পাহাড়ের জাতিগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার। কারো কোনো নাগরিক অধিকারকে অবহেলা করলেই এ জাতির জন্য মহাসংকট সৃষ্টি করবে। নাগরিক হিসেবে আমরা কেউ যেন অন্য নাগরিকের অধিকার হরণের দায়ে অভিযুক্ত হতে না পারি সে ব্যাপারে আমাদের নিশ্চিত থাকতে হবে। তাহলেই সত্যিকার নতুন বাংলাদেশ জন্মলাভ করবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য কওে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, আমরা সে সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত হাজারও শহীদ ও আহত, যারা বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের প্রতি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে আমি সশ্রদ্ধ সালাম জানাচ্ছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, সে সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে চাই।

ভাষণে ২৫ শে মার্চের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ মানব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত এক হত্যাযজ্ঞের দিন। ১৯৭১ সালের আজকের রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরপরাধ, নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। ২৫ শে মার্চ থেকেই এ দেশের মানুষ সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ৯ মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ হারানো শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের, যাদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত নারীর আত্মত্যাগ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের এই বীরদের প্রতি আমার সালাম।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৬ বছরের শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিলেন, সাধারণ মানুষ এর ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তারা পালিয়ে যাবার সময় এক লন্ডভন্ড অর্থনীতি রেখে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে। এ সরকারের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগামী জুন মাসের মধ্যে এটি ৮ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা উপলক্ষে সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি আমাদের ওপর বর্ষিত হোক। এবারের শবে কদরের পবিত্র রজনীতে মহান আল্লাহ যেন তার সব বান্দার মোনাজাত কবুল করেন তা প্রার্থনা করছি। একইসঙ্গে পবিত্র ঈদে সকলকে জানাই ঈদ মোবারক। ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে নির্বিঘ্নে ও আনন্দ সহকারে নিজ নিজ বাড়ি যাবেন। আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করবেন। গরিব পরিবারের খোঁজ খবর নেবেন, তাদের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য চিন্তা ভাবনা করবেন, আপনার সন্তানদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন এই কামনা করছি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ঈদের জামায়াতে দলমত নির্বিশেষে সবাই যেন পরাজিত শক্তির সব প্ররোচনা সত্ত্বেও সুদৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকেন সেজন্য আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবেন এই আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের জীবন সার্থক হোক, আনন্দময় হোক। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারবে না : গয়েশ্বর

ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:১৬:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আপনারা জানেন ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। ৬টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো খুবই ইতিবাচকভাবে সংস্কার কাজে সাড়া দিয়েছে, তাদের মতামত তুলে ধরছেন। কোন রাজনৈতিক দল কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে, কোনটিতে দ্বিমত হয়েছে- সেসব তারা জানাচ্ছেন। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত সুখকর বিষয় যে, প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে মত দিচ্ছেন। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার কাজ এখন চলমান আছে।

সরকারপ্রধান বলেন, কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে যে সকল বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে সেগুলো চিহ্নিত করা এবং তার একটা তালিকা প্রস্তুত করা। যেসব দল এতে একমত হয়েছে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া। এই তালিকাটিই হবে জুলাই চার্টার বা জুলাই সনদ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দায়িত্ব, জাতির সামনে পুরো প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা এবং প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা চাই, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনায় নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে শুরু করবে বলে আশা করছি।

বিগত সরকারের আমলে চর দখলের মতো ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা

তিনি বলেন, দখলের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে। এসব টাকা আবার বিদেশে পাচার করা হয়েছে । তবে বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে। ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে।

হাসিনা সরকারের আমলে টাকা পাচারের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত সরকারের লুটপাটের মহোৎসবে গত ১৫ বছরে ২৪৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। পাচারের একটি পদ্ধতি সবাইকে অবাক করেছে। একজন ব্যক্তি বিদেশে তার অধ্যয়নরত সন্তানের কাছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলার বা ৪০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের প্রেক্ষিত বদলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের দেশের নারীরা দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে বহু বছর ধরে অনেক বাধা পেরিয়ে একটু একটু করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও এ দেশের নারীরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বৈষম্যের শিকার।

প্রধান উপদেষ্ট বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে তার মধ্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল সবচাইতে বেশি। গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা দুঃসাহসিক ভূমিকা রেখেছে। পুরোনোকে দূরে ঠেলে দিয়ে নতুনের ভিত্তি স্থাপনের প্রতিজ্ঞা নিয়েছে। তারা ব্যাপক সংস্কারের কথা বলেছে। সর্বত্র নারীদের ভূমিকা আরও জোরালো করার কথা বলেছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের প্রেক্ষিত বদলে দিয়েছে। জুলাইয়ের পর নারীদের অবস্থান ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন হবে সেটাই আমরা চাই। আমরা বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে চাই। আর এই নতুন ভাবনায় নারীদের অবস্থান উচ্চতম পর্যায়ে অগ্রাধিকার পাক সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের সকল সদস্য, পাড়া-প্রতিবেশী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্কুল—আপনারা আপনাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে যেন কোনো বৈষম্য না সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করুন। আসুন, নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে শিশুদের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করি।

ড. ইউনূস বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশে বিরাজমান বৈষম্যগুলো চিহ্নিত করে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বৈষম্য নিরসনে আমাদের প্রত্যেককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলে, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা, নারীকে খাটো করে রাখার প্রবৃত্তি যারা ধারণ করে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তি সকল প্রকার বাধা ভেঙে দেয়ার মহাশক্তি আমাদেরকে দিয়েছে। সে বাধা যত শক্তই হোক, যত উঁচুই হোক। সকল দূরত্ব ঘোচানোর জন্য প্রযুক্তিকে অবশ্যই যেন আমরা ব্যবহার করতে আরম্ভ করি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদের সুরক্ষায় পুলিশ হটলাইন নম্বর চালু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে শর্ট-কোড চালু করা হচ্ছে। কল-টেকার হিসেবে শতভাগ নারী কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যেন নির্দ্বিধায় কথা বলা যায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে, বিচার বিলম্বে বাধা দুর করা হচ্ছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ডিএনএ ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। খুব দ্রুতই বিশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নতুন অনেক বিচারক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ভিকটিম শিশুরা যাতে দ্রুত বিচার পায় সেজন্য আলাদাভাবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের সবার মতো আমিও অত্যন্ত আনন্দিত যে এবার নারী ফুটবল টিম দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। দেশজুড়ে আয়োজিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ এ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৭ লক্ষ ৪০ হাজার মেয়েরা প্রায় তিন হাজার খেলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করেছে। উৎসবে দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত অঞ্চল, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং ২১টি নৃগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীসহ সকলের সার্বজনীন অংশগ্রহণ ছিল।

তিনি বলেন, এ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো তরুণদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা, সহযোগিতার নীতি প্রচার এবং তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা যাতে করে তারা আত্মনির্ভর হতে পারে, দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠতে পারে। আমরা তারুণ্যের এই উৎসব সারা বছর জুড়ে উদযাপন করার ঘোষণা দিয়েছি। এ উৎসবে আমরা গ্রাম উপজেলা শহর বন্দর সকল এলাকার আবালবৃদ্ধবণিতাকে এবং স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের সবাইকে নানা প্রকারের সৃজনশীল কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রতিটি এলাকায় এই উৎসবে যোগদান করতে মেয়েদের যেন বিশেষভাবে উৎসাহিত করা যায় সেজন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। কোথায় এটা কীভাবে উদযাপিত হচ্ছে সে ব্যাপারে জানার জন্য আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করলাম। বিভিন্ন পর্যায়ে দেশের সেরা গ্রাম, সেরা উপজেলা সেরা শহর, সেরা প্রতিষ্ঠান, সেরাব ব্যক্তিকে পুরস্কার দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকবো।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারী অধিকারের পাশাপাশি একইরকম গুরুত্বের সঙ্গে মনে রাখতে হবে সংখ্যালঘুদের নাগরিক অধিকার। সমতল ও পাহাড়ের জাতিগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার। কারো কোনো নাগরিক অধিকারকে অবহেলা করলেই এ জাতির জন্য মহাসংকট সৃষ্টি করবে। নাগরিক হিসেবে আমরা কেউ যেন অন্য নাগরিকের অধিকার হরণের দায়ে অভিযুক্ত হতে না পারি সে ব্যাপারে আমাদের নিশ্চিত থাকতে হবে। তাহলেই সত্যিকার নতুন বাংলাদেশ জন্মলাভ করবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য কওে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, আমরা সে সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত হাজারও শহীদ ও আহত, যারা বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের প্রতি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে আমি সশ্রদ্ধ সালাম জানাচ্ছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, সে সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে চাই।

ভাষণে ২৫ শে মার্চের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ মানব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কিত এক হত্যাযজ্ঞের দিন। ১৯৭১ সালের আজকের রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরপরাধ, নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। ২৫ শে মার্চ থেকেই এ দেশের মানুষ সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ৯ মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ হারানো শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের, যাদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত নারীর আত্মত্যাগ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের এই বীরদের প্রতি আমার সালাম।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৬ বছরের শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিলেন, সাধারণ মানুষ এর ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তারা পালিয়ে যাবার সময় এক লন্ডভন্ড অর্থনীতি রেখে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে। এ সরকারের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগামী জুন মাসের মধ্যে এটি ৮ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা উপলক্ষে সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি আমাদের ওপর বর্ষিত হোক। এবারের শবে কদরের পবিত্র রজনীতে মহান আল্লাহ যেন তার সব বান্দার মোনাজাত কবুল করেন তা প্রার্থনা করছি। একইসঙ্গে পবিত্র ঈদে সকলকে জানাই ঈদ মোবারক। ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে নির্বিঘ্নে ও আনন্দ সহকারে নিজ নিজ বাড়ি যাবেন। আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করবেন। গরিব পরিবারের খোঁজ খবর নেবেন, তাদের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য চিন্তা ভাবনা করবেন, আপনার সন্তানদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন এই কামনা করছি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ঈদের জামায়াতে দলমত নির্বিশেষে সবাই যেন পরাজিত শক্তির সব প্ররোচনা সত্ত্বেও সুদৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকেন সেজন্য আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবেন এই আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের জীবন সার্থক হোক, আনন্দময় হোক। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।