পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :
পাঁচ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন ছাত্রদল নেতা মো. নাজমুল মৃধা। অল্প সময় পাওয়ায় নির্ধারিত জানাজার আগেই আয়োজন করা হয় বিশেষ জানাজার নামাজ। জানাজায় অংশগ্রহণ করলেও বাবার কবরে মাটি দেওয়ার সময়টুকু পাননি তিনি।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় অংশ নেন ছাত্রদল নেতা মো. নাজমুল মৃধা।
বেলা ৩ টার দিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে ওই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার সময় নাজমুলের হাতকড়া খুলে দেওয়া হলেও খোলা হয়নি পায়ের ডান্ডাবেড়ি।
নাজমুল মৃধা পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। জানাজা শেষে তাকে আবার পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নাজমুল মৃধার বাবা মো. মোতালেব হোসেন মৃধা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মোতালেব হোসেন দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। ছেলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আজ বেলা তিনটার দিকে পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে বিশেষ জানাজার আয়োজন করা হয়।
পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় স্থানীয় সুবিদখালী সরকারি রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ছাত্রদল নেতা নাজমুল মৃধার বড় ভাই মো. রাসেল মৃধা বলেন, নাজমুল মৃধা মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী এলাকায় তাদের বাড়ির সামনে থেকে নাজমুল মৃধাকে আটক করে পুলিশ। পরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বাবার জানাজায় অংশ নিতে এবং শেষ দেখার জন্য আজ বেলা একটা থেকে ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তাকে প্যারোলে মুক্তি দেন আদালত। জানাজার সময় হাতকড়া খুলে দিলেও পায়ের ডান্ডাবেড়ি খুলে দেয়নি পুলিশ।
রাসেল মৃধা আরও বলেন, আমার ভাই ছাত্রদলের রাজনীতি করার অপরাধে পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় তাকে বাবার জানাজায় অংশ নিতে হলো। এর চেয়ে দুঃখের, কষ্টের কী হতে পারে? ভাই আমার বাবার কবরে মাটিও দিয়ে যেতে পারল না। প্যারোলের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় শুধু ভাইয়ের জন্য ছোট পরিসরে একটি জানাজা নামাজের আয়োজন করা হয়েছিল। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নাজমুল মৃধাকে ৫ ঘণ্টার জন্য শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিলেন আদালত। নিরাপত্তার স্বার্থে তার পায়ের ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি।