Dhaka শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রেনে আগুন দেওয়ার আগে ১৭ মিনিটের ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে যা হয়েছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের (হাইপ্রোফাইল) নেতারা ভিডিও কনফারেন্সে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাদের ১৭ মিনিটের ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মিটিংটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে এই মিটিংয়ে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত ৯ টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

ভোট ঠেকাতে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের আগের দিন শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে ট্রেনে আগুনে চারজন নিহত হয়েছে। আরও আটজন দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।

গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন, যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপ্লব, মো. সালাউদ্দিন, মো. কবির, মো. হাসান আহমেদ।

ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার ব্যাপারে যুবদল নেতা কাজী মনসুর জানান–বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। মিটিংয়ে দুইটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত– ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো, যাতে ভোটাররা ভয়ে ভোটকেন্দ্রে না আসে। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার।

ডিবি জানায়, মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন, ট্রেনে কে আগুন দিতে পারবেন– তখন একজন রাজি হয় হয়। পরে রবিউল ইসলাম বলেন– কিশোরগঞ্জ থেকে আগত কোনো ট্রেন ঢাকায় প্রবেশের পর বা নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী মিটিংয়ে থাকা একজনকে ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেন রবিউল ইসলাম নয়ন।

এ প্রসঙ্গে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধানে যুবদলের কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসীদের দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুন লাগানো হয়। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়– ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০-১২ জনের মধ্যে একজন বলেন তিনি আগুন লাগাতে পারবেন।

ট্রেনে আগুন দিতে সম্মত হওয়ার ব্যক্তিটি কে, তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান ডিবি প্রধান। তিনি বলেন, ওই ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া আরও তিন ব্যক্তি আগুন লাগাতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রাবাড়ী আশপাশের এলাকায় এলে আগুন দেওয়া হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মোহাম্মদপুরের সহকারী পুলিশ কমিশনারসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ট্রেনে আগুন দেওয়ার আগে ১৭ মিনিটের ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে যা হয়েছিল

প্রকাশের সময় : ০৯:২৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের (হাইপ্রোফাইল) নেতারা ভিডিও কনফারেন্সে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাদের ১৭ মিনিটের ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মিটিংটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে এই মিটিংয়ে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত ৯ টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

ভোট ঠেকাতে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের আগের দিন শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে ট্রেনে আগুনে চারজন নিহত হয়েছে। আরও আটজন দ্বগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।

গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন, যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপ্লব, মো. সালাউদ্দিন, মো. কবির, মো. হাসান আহমেদ।

ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার ব্যাপারে যুবদল নেতা কাজী মনসুর জানান–বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। মিটিংয়ে দুইটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত– ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো, যাতে ভোটাররা ভয়ে ভোটকেন্দ্রে না আসে। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার।

ডিবি জানায়, মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন, ট্রেনে কে আগুন দিতে পারবেন– তখন একজন রাজি হয় হয়। পরে রবিউল ইসলাম বলেন– কিশোরগঞ্জ থেকে আগত কোনো ট্রেন ঢাকায় প্রবেশের পর বা নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী মিটিংয়ে থাকা একজনকে ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেন রবিউল ইসলাম নয়ন।

এ প্রসঙ্গে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধানে যুবদলের কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসীদের দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুন লাগানো হয়। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়– ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০-১২ জনের মধ্যে একজন বলেন তিনি আগুন লাগাতে পারবেন।

ট্রেনে আগুন দিতে সম্মত হওয়ার ব্যক্তিটি কে, তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান ডিবি প্রধান। তিনি বলেন, ওই ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া আরও তিন ব্যক্তি আগুন লাগাতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রাবাড়ী আশপাশের এলাকায় এলে আগুন দেওয়া হয়।