Dhaka রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় শতভাগ আসনের ফলাফল ঘোষণা শেষে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনের সংসদে ১৫১ আসন পেলেই সরকার গঠন করা যায়। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে দলটি টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।

এর আগে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ২৯৮টি আসনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৩টি আসন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এ পর্যন্ত ৬১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ১১টি আসনে বিজয়ী হন। যে ২৬ আসনে আওয়ামী লীগ লাঙ্গলকে ছাড় দিয়েছিল, তার মধ্যে ১৫টি তারা খুইয়ে বসেছে। তাছাড়া সমঝোতার বাইরে কোনো আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী জিততে পারেননি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য ২৬টি দলের প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র তিনজন জয়ের দেখা পেয়েছে। আওয়ামী লীগের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন জিতেছে।

নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি; এই ২৮টি দল প্রার্থী দেয়।

অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬৫। জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন ২৬৪ জন। তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের ৯৬ জন ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ ২৩ দলের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি।

তুলনামূলক কম ভোটারের উপস্থিতি, কয়েকটি আসনে গোলযোগ আর অনিয়ম-অভিযোগের মধ্যে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়। সব আসনেই ব্যালট পেপার ব্যবহার করে ভোট নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ-৩ আসনে একটি কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করায় ফল ঘোষণা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট আগেই স্থগিত করেছিল নির্বাচন কমিশন।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ নারী। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিল ৮৫২ জন।

ভোটে সারাদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন। বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী, যাদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতা।

ভোটের সকালে মুন্সীগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের সামনে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২৯৯ আসনের ৪২ হাজার কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মের কারণে ভোট স্থগিত হয় অন্তত সাতটি কেন্দ্র।

বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই কেন্দ্রেগুলোতে গণনা শেষ করে ফলাফল প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা পাঠান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
এরই মধ্যে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমকে জানান, প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে এবারের জাতীয় নির্বাচনে।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল সমন্বিত করে আসনভিত্তিক সর্বশেষ ফলাফল ঘোষণা করেন। ওই ফল তারা ঢাকায় নির্বাচন কমিশনেও পাঠাচ্ছেন। নির্বাচন ভবনে স্থাপিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বানের ‘ফলাফল সংগ্রহ পরিবেশন কেন্দ্র’ থেকে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ

প্রকাশের সময় : ১২:৪০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় শতভাগ আসনের ফলাফল ঘোষণা শেষে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনের সংসদে ১৫১ আসন পেলেই সরকার গঠন করা যায়। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে দলটি টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।

এর আগে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ২৯৮টি আসনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৩টি আসন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এ পর্যন্ত ৬১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ১১টি আসনে বিজয়ী হন। যে ২৬ আসনে আওয়ামী লীগ লাঙ্গলকে ছাড় দিয়েছিল, তার মধ্যে ১৫টি তারা খুইয়ে বসেছে। তাছাড়া সমঝোতার বাইরে কোনো আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী জিততে পারেননি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য ২৬টি দলের প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র তিনজন জয়ের দেখা পেয়েছে। আওয়ামী লীগের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন জিতেছে।

নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি; এই ২৮টি দল প্রার্থী দেয়।

অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬৫। জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন ২৬৪ জন। তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের ৯৬ জন ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ ২৩ দলের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি।

তুলনামূলক কম ভোটারের উপস্থিতি, কয়েকটি আসনে গোলযোগ আর অনিয়ম-অভিযোগের মধ্যে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়। সব আসনেই ব্যালট পেপার ব্যবহার করে ভোট নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ-৩ আসনে একটি কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করায় ফল ঘোষণা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট আগেই স্থগিত করেছিল নির্বাচন কমিশন।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ নারী। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিল ৮৫২ জন।

ভোটে সারাদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন। বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী, যাদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতা।

ভোটের সকালে মুন্সীগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের সামনে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২৯৯ আসনের ৪২ হাজার কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মের কারণে ভোট স্থগিত হয় অন্তত সাতটি কেন্দ্র।

বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই কেন্দ্রেগুলোতে গণনা শেষ করে ফলাফল প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা পাঠান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
এরই মধ্যে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমকে জানান, প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে এবারের জাতীয় নির্বাচনে।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল সমন্বিত করে আসনভিত্তিক সর্বশেষ ফলাফল ঘোষণা করেন। ওই ফল তারা ঢাকায় নির্বাচন কমিশনেও পাঠাচ্ছেন। নির্বাচন ভবনে স্থাপিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বানের ‘ফলাফল সংগ্রহ পরিবেশন কেন্দ্র’ থেকে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।