Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলের নদী পার হতে ভরসা খেয়া ও বাঁশের সাঁকো

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও টাঙ্গাইলের সখীপুর-বাসাইল সীমান্ত এলাকার বংশাই নদের ওপর সেতু নির্মিত হয়নি। দুই পারের বাসিন্দাদের ভরসা খেয়া ও বাঁশের সাঁকো। এতে দুর্ভোগে রয়েছে তিন উপজেলার অন্তত ৩৫ গ্রামের বাসিন্দা। বংশাই নদের দুই পাশে তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ‘কাউলজানী বাজার-কালিয়ান’ খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি।

জানা গেছে, সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা মিলে টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসন। সেতু না থাকায় সখিপুরের কালিয়ান ও বাসাইলের কাউলজানী এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বাসাইলঘেঁষা কালিহাতী উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব এলাকাও সখীপুর উপজেলা থেকে বংশাই নদে বিভক্ত। তিনটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খেয়াঘাটের মধ্যে ‘কাউলজানী বাজার-কালিয়ান’ খেয়া ঘাটটি অন্যতম।

সখীপুর উপজেলার পশ্চিমে কালিয়ান, বাসাইল উপজেলার পূর্ব-উত্তরে কাউলজানী এবং কালিহাতী উপজেলার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে গান্ধিনা। তিনটি উপজেলার মোহনা কাউলজানী বাজার-কালিয়ান এলাকা বংশাই নদ দ্বারা বিভক্ত। এ নদে সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন কালিয়ান, দাড়িয়াপুর, গড়গোবিন্দপুরসহ ৩৫টি গ্রাম।

কালিয়ান গ্রামের বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান জানান, এলাকার মানুষের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার পর এ নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণ হবে।

কিন্তু ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের সেই দাবি এখনো পূরণ হয়নি। একটি সেতুর জন্য কমপক্ষে ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ঝুঁকি নিয়ে নদ পারাপার হচ্ছে। নদের দুই পারের কৃষকরাও তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। অনেক সময় সাঁকো বা খেয়া নৌকায় মুমূর্ষু রোগী পারাপার করে হাসপাতালে পৌঁছানোও সম্ভব হয় না।

নদের পূর্বপাশে সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামে রয়েছে সাপ্তাহিক হাট, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসা। অন্যদিকে নদের পশ্চিমে বাসাইলের কাউলজানী গ্রামে রয়েছে সাপ্তাহিক হাটসহ দুটি বাজার, বালিকা বিদ্যালয়সহ দুটি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

নৌকার মাঝি নরেন তরণী দাস জানান, বর্ষার ছয় মাস খেয়ায় ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই পথচারীদের নদ পারাপারের একমাত্র ভরসা। মধ্যরাতে দূরের লোকজন খেয়াপারে এসে বিপদে পড়েন।

কাউলজানী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ শাহীন বলেন, বাসাইলের কাউলজানীতে আবাদি জমি ও সখীপুর উপজেলায় আমাদের বসতবাড়ি রয়েছে। প্রতিনিয়ত দুই উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় অতিরিক্ত ১৮-২০ কিলোমিটার ঘুরে।

ঘাটপারের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, সখীপুরের ভূখণ্ড দুই ভাগে বিভক্ত। নিচু ও পাহাড়ি সমতল এলাকা। সেতুর অভাবে থেমে আছে নিচু এলাকার মানুষের যাতায়াতব্যবস্থা। সেতুটি নির্মাণে নির্বাচনের আগে অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেন, পরে কেউ তা মনে রাখেন না।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুল বাছেদ বলেন, সেতুটি নির্মাণে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের চিঠি পেলেই সেতুটি নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

টাঙ্গাইলের নদী পার হতে ভরসা খেয়া ও বাঁশের সাঁকো

প্রকাশের সময় : ০৬:০৮:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও টাঙ্গাইলের সখীপুর-বাসাইল সীমান্ত এলাকার বংশাই নদের ওপর সেতু নির্মিত হয়নি। দুই পারের বাসিন্দাদের ভরসা খেয়া ও বাঁশের সাঁকো। এতে দুর্ভোগে রয়েছে তিন উপজেলার অন্তত ৩৫ গ্রামের বাসিন্দা। বংশাই নদের দুই পাশে তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ‘কাউলজানী বাজার-কালিয়ান’ খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি।

জানা গেছে, সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা মিলে টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসন। সেতু না থাকায় সখিপুরের কালিয়ান ও বাসাইলের কাউলজানী এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বাসাইলঘেঁষা কালিহাতী উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব এলাকাও সখীপুর উপজেলা থেকে বংশাই নদে বিভক্ত। তিনটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খেয়াঘাটের মধ্যে ‘কাউলজানী বাজার-কালিয়ান’ খেয়া ঘাটটি অন্যতম।

সখীপুর উপজেলার পশ্চিমে কালিয়ান, বাসাইল উপজেলার পূর্ব-উত্তরে কাউলজানী এবং কালিহাতী উপজেলার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে গান্ধিনা। তিনটি উপজেলার মোহনা কাউলজানী বাজার-কালিয়ান এলাকা বংশাই নদ দ্বারা বিভক্ত। এ নদে সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন কালিয়ান, দাড়িয়াপুর, গড়গোবিন্দপুরসহ ৩৫টি গ্রাম।

কালিয়ান গ্রামের বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান জানান, এলাকার মানুষের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার পর এ নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণ হবে।

কিন্তু ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের সেই দাবি এখনো পূরণ হয়নি। একটি সেতুর জন্য কমপক্ষে ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ঝুঁকি নিয়ে নদ পারাপার হচ্ছে। নদের দুই পারের কৃষকরাও তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। অনেক সময় সাঁকো বা খেয়া নৌকায় মুমূর্ষু রোগী পারাপার করে হাসপাতালে পৌঁছানোও সম্ভব হয় না।

নদের পূর্বপাশে সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামে রয়েছে সাপ্তাহিক হাট, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসা। অন্যদিকে নদের পশ্চিমে বাসাইলের কাউলজানী গ্রামে রয়েছে সাপ্তাহিক হাটসহ দুটি বাজার, বালিকা বিদ্যালয়সহ দুটি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

নৌকার মাঝি নরেন তরণী দাস জানান, বর্ষার ছয় মাস খেয়ায় ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই পথচারীদের নদ পারাপারের একমাত্র ভরসা। মধ্যরাতে দূরের লোকজন খেয়াপারে এসে বিপদে পড়েন।

কাউলজানী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ শাহীন বলেন, বাসাইলের কাউলজানীতে আবাদি জমি ও সখীপুর উপজেলায় আমাদের বসতবাড়ি রয়েছে। প্রতিনিয়ত দুই উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় অতিরিক্ত ১৮-২০ কিলোমিটার ঘুরে।

ঘাটপারের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, সখীপুরের ভূখণ্ড দুই ভাগে বিভক্ত। নিচু ও পাহাড়ি সমতল এলাকা। সেতুর অভাবে থেমে আছে নিচু এলাকার মানুষের যাতায়াতব্যবস্থা। সেতুটি নির্মাণে নির্বাচনের আগে অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেন, পরে কেউ তা মনে রাখেন না।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুল বাছেদ বলেন, সেতুটি নির্মাণে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের চিঠি পেলেই সেতুটি নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।