নিজস্ব প্রতিবেদক :
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে পালানো বন্দির মধ্যে সাত শতাধিক বন্দি এখনো ধরা পড়েননি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তবে তাদের ধরতে সরকার তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে জরুরি সেবা (হটলাইন) উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন কারাগার থেকে ২ হাজার ২শর বেশি আসামি পালিয়েছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ মতো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৭শ হাজতি ধরা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, ছিনতাই-চাঁদাবাজি হচ্ছে অস্বীকার করছি না। তবে যারা এসব করছে তারা ধরাও পড়ছে। আবার যারা ছাড়া পাচ্ছে তারাও এ ধরনের কাজ করছে, এটা সত্যি কথা। আমরা চেষ্টা করছি যতভাবেই হোক ছিনতাই-চাঁদাবাজি কমিয়ে আনার জন্য।
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের স্বল্পতা নেই তবে আগের মতো কাজের উদ্যোম নেই। তাদের কাজের উদ্যোম বাড়াতে সর্বদা চেষ্টা করছি।
যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বেরিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের আবার তাড়াতাড়ি ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। যেই ধরা পড়বে তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
৫ আগস্টের পর অনেক দাগী আসামিকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ ক্ষমায় এখনো কেউ বের হয়নি। জামিন পেয়েছে তারা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখন থেকে (০৯৬১২০২১৬৯০) এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এখন থেকে এই হটলাইনে কল করলে বন্দী সম্পর্কিত তথ্য, বন্দী কেমন আছেন সে ব্যাপারে তথ্য, বন্দীর হাজিরার তারিখ, বন্দীর সাক্ষাতের তারিখ, ফোনে কথা বলার তারিখ, বন্দীর শারীরিক অবস্থা জনিত তথ্য, প্যারোলে মুক্তি সম্পর্কিত তথ্য, অভিযোগ ও পরামর্শ সম্পর্কিত তথ্য জানা যাবে।
আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের এই জরুরি সেবা সার্ভিসে নিয়োগ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের স্বল্পতা নাই। হয়তো আগের মতো কাজে উদ্যোমটা নেই। তাদের কাজের উদ্যোমটা যাতে বাড়ানো যায় তার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জুলাই আন্দোলনে আহতদের কারাগারে চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যারা জুলাই আগস্টে আহত হয়েছেন তাদেরকে আমরা এখানে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করব। এখানে যেন তাদের একটা কর্মসংস্থান তৈরি হয়।
চাঁদাবাজি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ছিনতাই-চাঁদাবাজি যে হচ্ছে না তা আমি বলব না। যারা এসব করছে তারা ধরা পড়ছে আবার ছাড়া পেয়ে আবারও এসব অপরাধে জড়াচ্ছে। এটা সত্য কথা। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেভাবে হোক এটাকে কমায় আনার জন্য।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. মোস্তফা কামাল, কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির, সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।