Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত : আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করতে পারবেন বলে জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা পৌনে ১২টায় রাজধানীর বেইলি রোড অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পূর্বের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্তিকরণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো। হয়তো সব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না। কিন্তু সবাইকেই ছাড় দেওয়ার মনোভাব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

বৈঠকের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের লক্ষ্য যেটা আমরা বারবার বলেছি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যে সহযোগিতা দেখাচ্ছেন এবং সময় ও সহযোগিতা করছেন সেজন্য রাজনীতিক দলগুলোর প্রতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা আশা করছি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে, আমাদের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি সমস্ত বিষয়গুলোতে যাতে আমরা সবাই একমত না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে মতে আসতে পারি।

তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হতে পারবো না, কিন্তু তারপরে আমরা জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেন খানিকটা ছাড় দিয়ে হলেও এক জায়গায় আসতে পারি। সবগুলো বিষয়ে শেষ করতে পারবো এমন নিশ্চয়তা নেই।

বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির তাসনিম জারা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের মোস্তাক হোসেনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

ঈদুল আজহার আগে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মূল আলোচনা শুরু করেছে কমিশন। এই আলোচনায় সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইরান থেকে দেশে ফিরেছেন আরো ৩০ বাংলাদেশি

জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত : আলী রীয়াজ

প্রকাশের সময় : ০১:২৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করতে পারবেন বলে জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা পৌনে ১২টায় রাজধানীর বেইলি রোড অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পূর্বের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্তিকরণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো। হয়তো সব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না। কিন্তু সবাইকেই ছাড় দেওয়ার মনোভাব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

বৈঠকের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের লক্ষ্য যেটা আমরা বারবার বলেছি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যে সহযোগিতা দেখাচ্ছেন এবং সময় ও সহযোগিতা করছেন সেজন্য রাজনীতিক দলগুলোর প্রতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা আশা করছি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে, আমাদের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি সমস্ত বিষয়গুলোতে যাতে আমরা সবাই একমত না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে মতে আসতে পারি।

তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হতে পারবো না, কিন্তু তারপরে আমরা জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেন খানিকটা ছাড় দিয়ে হলেও এক জায়গায় আসতে পারি। সবগুলো বিষয়ে শেষ করতে পারবো এমন নিশ্চয়তা নেই।

বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির তাসনিম জারা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের মোস্তাক হোসেনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

ঈদুল আজহার আগে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মূল আলোচনা শুরু করেছে কমিশন। এই আলোচনায় সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।