চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধারে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা উন্নয়ন সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের রক্তক্ষয়ী অভিযান নয়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চলছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নাবিকদের নিরাপত্তা সবার আগে। এছাড়া জাহাজের মধ্যে প্রচুর দাহ্য পদার্থ আছে। হুট করে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে জাহাজের ক্ষতি হয়।
তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নাবিকদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে জাহাজ মালিক ও দস্যুদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও আমাদের সহযোগিতা করছে। পূর্বে জাহাজ উদ্ধারে আমাদের ১০০ দিন সময় লাগলেও আমরা আশাবাদী এবার সহসাই জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার করতে পারব।
হাছান মাহমুদ বলেন, সোমালিয়ায় জিম্মিদশায় আটকে থাকা এমভি আবদুল্লাহ কেবল একটি জাহাজ নয়, এতে কোটি টাকার মূল্যবান কয়লাও রয়েছে। এসব কয়লা দাহ্য পদার্থ হওয়ায় যেকোনো সময় বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে।
জাহাজে ২৩ জন নানা স্তরের কর্মকর্তা রয়েছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের রক্ষা করাটা সবচেয়ে জরুরি। আর তাই শান্তিপূর্ণভাবে এগোনোর কোনো বিকল্প নেই।’ খুব দ্রুতই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে বলেও জানান মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সঙ্গে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। আসলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য; এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের নেত্রী যেগুলো মাঠে গলা ফাটায় – তারাও আবার ভারতীয় শাড়ি পড়বেন। ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন, সেহেরি খাবেন। ক’দিন আগে তাদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন- এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যেও মূল্য বাড়ানো।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক যারা দিয়েছে, তাদের সাথে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছেন। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিলেন, নাকি বঙ্গবাজার থেকে আমি জানি না!
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।