আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে জিম্বাবুয়ের আরও ১০ ব্যক্তি এবং তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (৪ মার্চ) নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে তা জব্দ করা হবে। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ১১ জন যুক্তরাষ্ট্রে অনানুষ্ঠানিক কোনো সফরে যেতে পারবেন না।
এদিকে নতুন এ পদক্ষেপের পাশাপাশি ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের কয়েকজন নাগরিকের ওপর দেওয়া একটি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের উপমন্ত্রী ওয়ালি আডেইয়েমো বলেন, ‘আমরা আজ (সোমবার) যেসব পরিবর্তন এনেছি, তার উদ্দেশ্য এটা পরিষ্কার করা যে আমাদের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু জিম্বাবুয়ের সাধারণ মানুষ নন। সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আমরা নতুন করে নজর দিচ্ছি।’
ওয়ালি আডেইয়েমো আরও বলেন, ‘নতুন লক্ষ্যবস্তুতে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট মনানগাগওয়ার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছেন জিম্বাবুয়ের জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ব্যবসায়ীরা।’
জিম্বাবুয়েতে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এ নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী জিম্বাবুয়ে সরকারের সদস্যসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সুশীল সমাজকে লক্ষ্যবস্তু করা এবং রাজনৈতিক কার্যকলাপের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে যা মৌলিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং সরকারলীয় নেতারাসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত লাভের জন্য জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন প্রত্যক্ষ করছি। এই শোষণ ও নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিসহ অন্যদের জবাবদিহি করার প্রচেষ্টার দিকে পুনরায় নজর দিচ্ছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯০ দশকের গোড়ার দিকে জিম্বাবুয়ের ওপর প্রথম অর্থনৈতিক এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে সেসময় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
মূলত তাদেরকে দেশে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য অভিযুক্ত করেছিল ওয়াশিংটন। এছাড়া যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যসহ বিভিন্ন দেশ জিম্বাবুয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।