নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় দুই সপ্তাহ পিছিয়েছে। এ নিয়ে রায়ের তারিখ চতুর্থ দফা পেছালো।

রোববার (১৪ মে) জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের দিন দুই সপ্তাহ পিছিয়েছেন।

আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে সময় আবেদন করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।

পরে ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন জানান, রাষ্ট্রপক্ষ রিট খারিজের জন্য আদালতে আবেদন করেছে। আমরা জবাব দাখিলের জন্য সময় আবেদন করেছি। দুই সপ্তাহ পর বিষয়টি আবার রায়ের জন্য আসবে।

এর আগে রায়ের দিন পেছানোর জন্য রাষ্ট্রপক্ষ সময় আবেদন করলেও এবার জাহাঙ্গীর আলমের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায়ের দিন পেছানো হলো।

পরে ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রপক্ষ রিট খারিজের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। আমরা জবাব দাখিলের জন্য সময় আবেদন করেছি। দুই সপ্তাহ পর বিষয়টি আবার রায়ের জন্য আসবে।

এর আগে গত ২ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায়ের দিন তৃতীয় দফা পিছিয়ে আজকের দিন ধার্য করা হয়।

তার আগে গত ৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফা পিছিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রুলের রায় ঘোষণার জন্য ২ মে দিন ধার্য করা হয়।

গত ১৫ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হয়। তার আগে গত বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এর আগে, ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট দায়ের করেন।

পরে একই বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশিষ্টদের দুই সপ্তহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মেয়র জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে এই মামলা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা দায়ের করা হয় একই অভিযোগে। পরে ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেন মেয়র জাহাঙ্গীর।

তবে সম্প্রতি তাকে আওয়ামী লীগ থেকে ক্ষমা করা হয়েছে।