নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক হিসেবে আটটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও দুটি রাজনৈতিক দল। নতুনভাবে জোটে যোগ দেওয়া দল দুটি হলো কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দল দুটির নাম ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন যুক্ত হওয়া দুই দলের নাম ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তবে এনসিপির কোনো নেতা সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা আট দল অনেক দিন ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করে আসছি। এখন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং কর্নেল অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন এলডিপি। আমাদের আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত, কিছু আলোচনা বাকি আছে। সেগুলো আশা করি শিগগির শেষ হবে। এরপর আমরা ঘোষণা করব।
তিনি বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমাদের আলোচনা আজকে সমাপ্ত হয়েছে। তাঁরা এখানে আসার সুযোগ পাননি। তাঁরা রাতে একটি প্রেস কনফারেন্স করে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।’
জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমাদের আসন সমঝোতা অলমোস্ট কমপ্লিট। সামান্য যা বাকি আছে, তা আলোচনার ভিত্তিতে আমরা সুন্দরভাবে শেষ করতে পারব আশা করি।’
জোট গঠন হলেও আসনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, আমরা কীসের ভিত্তিতে একত্রিত হয়েছি? আমাদের লক্ষ্যের কথা আমরা বলেছি। এটা আমাদের একটি মজবুত নির্বাচনী জোট। সারা বাংলাদেশের ৩০০ আসনে আমরা বসে নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন আসন আমাদের মধ্যে নির্ধারণ করেছি।
‘যেহেতু দুটি দল একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে, আরও অনেকগুলো দল আগ্রহী ছিল। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় এই মুহূর্তে এখানে সম্পৃক্ত করা আমাদের জন্য খুবই দুরূহ হয়ে গেছে। অনেকের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আমরা সেভাবে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারছি না। আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। কিন্তু জাতীয় জীবনে আমরা তাদের সঙ্গে একসাথে কাজ করব এই জাতিকে গড়ার জন্য। আমাদের আসন সমঝোতা অলমোস্ট কমপ্লিট। সামান্য একটু বিষয় যেগুলো রয়েছে, আমরা আশা করছি সেটা মনোনয়ন ফাইল করার পরপরই আমরা আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারব।’
সুষ্ঠু ভোটের জন্য জোট কঠিন ভূমিকা রাখবে জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, এখন জাতি একটা দীর্ঘ স্থায়ী মুক্তির দিকে এগোতে চায়, শান্তির দিকে এগোতে চায়, একটা সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়। আমাদের যুবসমাজের যে প্রত্যাশা, যেটার জন্য বুক চিতিয়ে তারা লড়াই করেছিল, জীবন দিয়েছিল; তাদের প্রত্যাশা পূরণ এখন আমাদের দায়িত্ব।
১০ দলের মধ্যে আসন বণ্টন কীভাবে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবাই সবার হাতে আসন তুলে দেব। যার যে যোগ্যতা, তার ভিত্তিতেই আসনগুলো তুলে দেব। খুব শিগগির আসন ঘোষণা করা হবে।’
আরও কোনো দলের যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এখন কেউ আসতে চাইলে আমরা সবাইকে কবুল করব, তবে এই মুহূর্তে সবাইকে একসঙ্গে অ্যাকোমডেট করা আমাদের জন্য কঠিন হতে পারে। তারপরও যদি কোনো বিশেষ বিষয় থাকে, তাহলে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।’
আগে থেকে এই জোটে থাকা আট দল হলো– বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) অলি আহমদ, খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চাঁদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাগপা মুখপাত্র ও সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















