আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ওয়াকাইয়ামা শহরের উন্মুক্ত এক ভেন্যুতে বক্তব্য দেওয়ার সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে লক্ষ্য করে বোমা জাতীয় একটি বস্তু নিক্ষেপ করার ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে জাপানের ওয়াকাইয়ামা শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেখানে কিশিদা বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল।
দেশটির সরকারি প্রচারমাধ্যম এনএইচকে এর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলে, বস্তুটি ‘স্মোক বোমা’ অর্থাৎ, ধোয়া সৃষ্টিকারী বোমা ছিল। নিক্ষেপের পর সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পরপরই কিশিদাকে অন্য একটি স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় ও সেখানে তাকে কঠোর নিরাপত্তায় রেখেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ওই তরুণের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
টুইটারে পোস্ট করা এনএইচকের ভিডিওতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন ভয়ে এদিক-ওদিক দৌঁড়ে পালাচ্ছে। সেখান থেকেই এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়ে। পুলিশ কর্মকর্তারা ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে মাটিতে চেপে ধরে রাখেন ও পরে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যান।
https://youtu.be/VzkqKjxwyAM
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, কিশিদার দিকে যে বস্তুটি ছুড়ে মারা হয়েছে, সেটি ছোট পাইপের মতো রূপালি একটি বস্তু। জাপানি বার্তা সংস্থা কিয়োদো বলে, প্রধানমন্ত্রীর দিকে স্মোক বোমার মতো কিছু একটা ছুড়ে মারা হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলে, কিশিদা ওয়াকাইয়ামার সাইকাজাকি মাছ বন্দর পরিদর্শন করার পর বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব ঘটনা ঘটে। ওয়াকাইয়ামা জেলার আসনে জাপানের প্রতিনিধি পরিষদের উপনির্বাচনে নিজ দলীয় প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন কিশিদা।
ওয়াকাইয়ামার সিটি কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, আমার সামনে দুই মিটারের মধ্যে নলাকার রূপালী একটি বস্তু উড়ে এসে পড়ে, এর পরপরই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এর পরপরই সবাই ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালাতে শুরু করে।
অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তিনি একটি ‘রূপালী নলাকার বস্তু’ দেখেছেন আর সেটি ‘ছুড়ে মারার পর কিছুক্ষণ পরে ছিল, তারপর বড় ধরনের একটি শব্দ শোনা যায়’।
পুলিশ বলছে, তারা একজনকে গ্রেফতার করেছেন। কিন্তু আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা। অন্যান্য ভিডিওতে দেখা যায়, বোমা বিস্ফোরণের পরেই লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
কিশিদার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য হিরোশি মরিয়ামা বলেন, গণতন্ত্রের ভিত্তি গঠনকারী নির্বাচনী প্রচারণার মাঝখানে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি ক্ষমার অযোগ্য নৃশংসতা।
জাপানে সহিংস আক্রমণ অত্যন্ত বিরল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এক নির্বাচনী প্রচারাভিযানে গিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। সূত্র: বিবিসি।