Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৫ জুন) গণভবন প্রাঙ্গণে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৩’ ও ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩’ উদ্বোধন উপলক্ষে গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।

এ সময় জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দেশবাসীকে বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ বছর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ খুবই যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাই ব্যাপকভাবে গাছ লাগান। যে যেখানে পারেন, যেভাবে পারেন অন্তত তিনটি করে গাছ লাগান। তাও যদি না পারেন অন্তত একটি গাছ লাগান।

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের বলবো, প্রত্যেকে যার যার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ লাগাতে পারো।

প্রধানমন্ত্রী নিজেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গাছ লাগিয়েছেন জানিয়ে বলেন, তারা ৬৫তম ব্যাচের যত শিক্ষার্থী ছিলেন, আজিমপুর স্কুলে গিয়ে একদিন গাছ লাগিয়ে এসেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজের হাতে লাগানো একটা গাছে যখন ফুল হয়, ফল হয়, সেটা দেখতেও ভালো লাগে, খেতেও ভালো লাগে। মনটাও ভালো হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ছাদ বাগান থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গা উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসুন। ফল-ফলাদি, তরি-তরকারি যে যা পারেন উৎপাদন করুন।

বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে সারা বিশ্বব্যাপী যে মূল্যস্ফীতি, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, খাদ্যমূল্য বেড়ে গেছে। অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষ যাতে এ থেকে রক্ষা পায় সেজন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষা করা, জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা এটা আমাদের কর্তব্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টেকসই বন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন বাড়ানোর জন্য সরকারি বনভূমিসহ প্রান্তিক ভূমিতে সামাজিক বনায়ন এবং উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে ওঠা চরভূমিতে উপকূলীয় বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, বন সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশীয় অনোপযোগী প্রজাতির বনায়ন করে অবক্ষয়িত বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছে। এভাবে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন ২৫ ভাগে উন্নীত করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ ও বন খাতের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য আমাদের সরকার কর্তৃক ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড প্লাস স্ট্রাটেজি’ গ্রহণ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গাছ লাগানোর নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৯৮৪ সালে সিদ্ধান্ত নেই এবং ১৯৮৫ সালে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর ওপর নির্দেশ, প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় অন্তত তিনটি করে গাছ লাগাবেন- একটি ফলজ, একটি বনজ ও একটি ভেষজ গাছ।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সবুজ-শ্যামল এ বাংলাদেশ এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দেশকে আরও সবুজে আচ্ছাদিত করার লক্ষ্যে এ বছরও জাতীয় পর্যায়সহ সারা দেশে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হচ্ছে এবং তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নত প্রজাতির বৃক্ষের সঙ্গে পরিচয় এবং চারা সংগ্রহের জন্য বৃক্ষমেলার আয়োজন সহায়ক হবে বলে আশা করি। তা ছাড়া বৃক্ষরোপণ অভিযানের মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মাঝে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে দেশবাসীকে বৃক্ষরোপণে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা যাবে বলে মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে তার যত্ন নেয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা নিরাপদ বাসযোগ্য আবাসভূমি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:৪০:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৫ জুন) গণভবন প্রাঙ্গণে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৩’ ও ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩’ উদ্বোধন উপলক্ষে গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।

এ সময় জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দেশবাসীকে বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ বছর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ খুবই যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাই ব্যাপকভাবে গাছ লাগান। যে যেখানে পারেন, যেভাবে পারেন অন্তত তিনটি করে গাছ লাগান। তাও যদি না পারেন অন্তত একটি গাছ লাগান।

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের বলবো, প্রত্যেকে যার যার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ লাগাতে পারো।

প্রধানমন্ত্রী নিজেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গাছ লাগিয়েছেন জানিয়ে বলেন, তারা ৬৫তম ব্যাচের যত শিক্ষার্থী ছিলেন, আজিমপুর স্কুলে গিয়ে একদিন গাছ লাগিয়ে এসেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজের হাতে লাগানো একটা গাছে যখন ফুল হয়, ফল হয়, সেটা দেখতেও ভালো লাগে, খেতেও ভালো লাগে। মনটাও ভালো হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ছাদ বাগান থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গা উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসুন। ফল-ফলাদি, তরি-তরকারি যে যা পারেন উৎপাদন করুন।

বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে সারা বিশ্বব্যাপী যে মূল্যস্ফীতি, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, খাদ্যমূল্য বেড়ে গেছে। অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষ যাতে এ থেকে রক্ষা পায় সেজন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষা করা, জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা এটা আমাদের কর্তব্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টেকসই বন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন বাড়ানোর জন্য সরকারি বনভূমিসহ প্রান্তিক ভূমিতে সামাজিক বনায়ন এবং উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে ওঠা চরভূমিতে উপকূলীয় বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, বন সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশীয় অনোপযোগী প্রজাতির বনায়ন করে অবক্ষয়িত বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছে। এভাবে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন ২৫ ভাগে উন্নীত করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ ও বন খাতের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য আমাদের সরকার কর্তৃক ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড প্লাস স্ট্রাটেজি’ গ্রহণ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গাছ লাগানোর নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৯৮৪ সালে সিদ্ধান্ত নেই এবং ১৯৮৫ সালে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর ওপর নির্দেশ, প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় অন্তত তিনটি করে গাছ লাগাবেন- একটি ফলজ, একটি বনজ ও একটি ভেষজ গাছ।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সবুজ-শ্যামল এ বাংলাদেশ এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দেশকে আরও সবুজে আচ্ছাদিত করার লক্ষ্যে এ বছরও জাতীয় পর্যায়সহ সারা দেশে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হচ্ছে এবং তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নত প্রজাতির বৃক্ষের সঙ্গে পরিচয় এবং চারা সংগ্রহের জন্য বৃক্ষমেলার আয়োজন সহায়ক হবে বলে আশা করি। তা ছাড়া বৃক্ষরোপণ অভিযানের মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মাঝে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে দেশবাসীকে বৃক্ষরোপণে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা যাবে বলে মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে তার যত্ন নেয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা নিরাপদ বাসযোগ্য আবাসভূমি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।