Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসরে রাশেদ বলীকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। গতবারের আসরেও তিনি রাশেদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) নগরীর লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় প্রায় ২৩ মিনিটের লড়াই শেষে আয়োজক কমিটি শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করে। রানার্সআপ হন একই জেলার রাশেদ বলী।

বেলা সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া ফাইনালে অংশ নেন বাঘা শরীফ ও রাশেদ বলী। গতবারের মতো এবারও এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব। আগেরবারও জয়ী হন বাঘা শরীফ।

খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিকেল চারটায় খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ।

বিকেল থেকেই লালদীঘি মাঠ ছিল উপচে পড়া দর্শকে ভরা। ঢোল-করতালির তালে তালে দর্শকদের উচ্ছ্বাসে মুখর ছিল পুরো মাঠ। বলীর লড়াইকে ঘিরে পুরো লালদীঘি এলাকা হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে বৈশাখী মেলা, যা এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে।

জব্বারের বলীখেলা ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং আব্দুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল জানান, বলীখেলার ১১৬তম আসরে এবার রেজিস্ট্রেশন করেছেন ১৪৭ জন বলী। জাতীয় পর্যায়ের বলীরাও এবারের আসরে অংশ নিয়েছেন।

তিনি জানান, গত বছর অংশ নিয়েছিলেন ৮৪ জন বলী। সেবারই প্রথমবার অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ফরিদ, যিনি স্থানীয়ভাবে ‘বাঘা শরীফ’ নামে পরিচিত। রানার্সআপ হয়েছিলেন রাশেদ, আর তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা।

চ্যাম্পিয়ন বলীর হাতে ট্রফি ও নগদ অর্থ পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন।

এদিকে, বলীখেলাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকে লালদীঘি ময়দানের আশপাশের এলাকাজুড়ে বৈশাখীমেলা জমে উঠেছে। মেলা আয়োজক কমিটি সূত্র জানিয়েছে, ১৯০৯ সালে এই মেলার আয়োজন শুরুর পর কখনও বন্ধ ছিল না। তবে দুই বছর করোনা মহামারির কারণে খেলা এবং বৈশাখী মেলার ১১১ ও ১১২তম আসর বাতিল করা হয়। এরপর থেকে পুনরায় প্রতি বছর যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা গেছে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলী খেলা। এরপর প্রতি বছর ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় জব্বারের বলী খেলা। এই খেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা। মেলায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৯:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসরে রাশেদ বলীকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। গতবারের আসরেও তিনি রাশেদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) নগরীর লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় প্রায় ২৩ মিনিটের লড়াই শেষে আয়োজক কমিটি শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করে। রানার্সআপ হন একই জেলার রাশেদ বলী।

বেলা সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া ফাইনালে অংশ নেন বাঘা শরীফ ও রাশেদ বলী। গতবারের মতো এবারও এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব। আগেরবারও জয়ী হন বাঘা শরীফ।

খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিকেল চারটায় খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ।

বিকেল থেকেই লালদীঘি মাঠ ছিল উপচে পড়া দর্শকে ভরা। ঢোল-করতালির তালে তালে দর্শকদের উচ্ছ্বাসে মুখর ছিল পুরো মাঠ। বলীর লড়াইকে ঘিরে পুরো লালদীঘি এলাকা হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে বৈশাখী মেলা, যা এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে।

জব্বারের বলীখেলা ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং আব্দুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল জানান, বলীখেলার ১১৬তম আসরে এবার রেজিস্ট্রেশন করেছেন ১৪৭ জন বলী। জাতীয় পর্যায়ের বলীরাও এবারের আসরে অংশ নিয়েছেন।

তিনি জানান, গত বছর অংশ নিয়েছিলেন ৮৪ জন বলী। সেবারই প্রথমবার অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ফরিদ, যিনি স্থানীয়ভাবে ‘বাঘা শরীফ’ নামে পরিচিত। রানার্সআপ হয়েছিলেন রাশেদ, আর তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা।

চ্যাম্পিয়ন বলীর হাতে ট্রফি ও নগদ অর্থ পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন।

এদিকে, বলীখেলাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকে লালদীঘি ময়দানের আশপাশের এলাকাজুড়ে বৈশাখীমেলা জমে উঠেছে। মেলা আয়োজক কমিটি সূত্র জানিয়েছে, ১৯০৯ সালে এই মেলার আয়োজন শুরুর পর কখনও বন্ধ ছিল না। তবে দুই বছর করোনা মহামারির কারণে খেলা এবং বৈশাখী মেলার ১১১ ও ১১২তম আসর বাতিল করা হয়। এরপর থেকে পুনরায় প্রতি বছর যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা গেছে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলী খেলা। এরপর প্রতি বছর ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় জব্বারের বলী খেলা। এই খেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা। মেলায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।