Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছুটির দিনে বইমেলায় দর্শনার্থীর ঢল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নবম দিনে গড়িয়েছে অমর একুশে বইমেলা। ছুটির দিন ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত একুশে বইমেলায় অন্য দিনের তুলনায় ভিড় বেশি হবে- এ নতুন কিছু নয়। তবে এই ছুটির দিনের ভিড়কেও অস্বাভাবিক বলছেন পাঠক-দর্শনার্থীরা।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে পাঠক, লেখক, প্রকাশ ও দর্শনার্থীর মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। ঘোরাঘুরির পাশাপাশি পছন্দের বই কিনছেন অনেকে। দর্শনার্থীদের এমন ভিড়ে আনন্দিত লেখক, প্রকাশ ও বিক্রয়কর্মীরা।

সরেজমিনে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, বইপ্রেমীদের কলরবে প্রাণবন্ত অমর একুশে বইমেলা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনসমাগম। ছুটির দিনে স্টলগুলোর চারপাশ ঘিরে রেখেছেন বইপ্রেমীরা। নতুন বইয়ের গন্ধ পেতে মরিয়া তারা।

মেলার প্রতিটি চত্বরে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উল্লাস। কেউ আড্ডা দিচ্ছেন কেউ বা আবার বন্ধু স্বজনদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে মেলার দৃষ্টিনন্দন স্টল ও প্যাভিলিয়ন দেখছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বইমেলায় এমনিতেই প্রচণ্ড ভিড়। এর মধ্যে শিশু কর্নারে তা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। পা ফেলার স্থান নেই কর্নারটিতে। সিসিমপুরের চরিত্রগুলো এদিন মেলায় উপস্থিত থাকলেও প্রচণ্ড ভিড়ে তাদের কাছে যাওয়া শিশুদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুক্তমঞ্চে শিশুদের খেলার স্থান থাকলেও বেশিরভাগ অভিভাবক মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। ফলে শিশুদের কাঁধে নিয়ে মঞ্চের কাছে ভিড় করতে দেখা যায় তাদের।

মোহাম্মদপুর থেকে দুই শিশুকে নিয়ে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, এত ভিড় যে বাচ্চাকে সিসিমপুরের মঞ্চের কাছেই নিয়ে যেতে পারানি। ভিড় দেখে নিয়ে চলে এসেছি।

কাঁধে শিশুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়াদুদ বলেন, বাচ্চা মঞ্চে কী হচ্ছে দেখতে চাচ্ছে। কিন্তু এত ভিড় যে কাছে যেতে পারছি না। তাই দূর থেকে দেখানোর চেষ্টা করছি।

এদিকে শিশু কর্নারে সিসিমপুরের সর্বশেষ আয়োজন সাড়ে ছয়টায় শুরু হয়েছে বলে তথ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

সময় প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রিয়াজ রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় ৯ দিনের মধ্যে আজকেই সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী এসেছেন। সকাল থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর পর্যন্ত পিক আওয়ার আমাদের। এ সময় বেশি বেচাকেনা হচ্ছে।

বইমেলার সুবর্ণলতা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী সাজ্জাদ বলেন, মানুষ মূলত ঘুরতে এসেছে। যতটা না বই কিনছে তার থেকেও বেশি মানুষ মেলা ঘুরে দেখছেন। ভিড়ের তোপে স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পাঠেচ্ছুক দর্শনার্থীরা বই দেখবেন এমন অবস্থা নেই।

আরেক বিক্রিয় প্রতিনিধি মুনিয়া বলেন, শুক্রবার হওয়ার বই মেলায় অনেক তারকা লেখক আসছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও অটোগ্রাফ নিতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন।

বইমেলায় আগত দর্শনার্থী আলিফ বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বইমেলায় এসেছিলাম। এত ভিড় দেখে মনে হচ্ছে আজকে বইমেলায় আসাটা ভুল ছিল। অন্যদিন বিকেলের দিকে এলে হয়তো এত ভিড় হতো না।

অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসাইন বলেন, আজকের জনসমাগম অনন্য। এখানে প্রকৃত ক্রেতা যারা তারা অবশ্যই বই কিনবেন। দর্শনার্থীরাও থাকবেন এটাই যে কোন মেলার স্বাভাবিক চিত্র। প্রকাশকদের উচিৎ ভালো বই এনে পাঠকদের আকৃষ্ট করা। আমরা ৬০টি বই এনেছি এবছরের মেলায়। বিক্রিও ভালো।

মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোনায়েদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি হুমায়ূন আহমেদের বই কিনেছি। প্রতিবছর মেলায় আগের প্রজন্মের লেখকদের বই পড়তে হচ্ছে। সৃজনশীল লেখক বের হচ্ছে খুবই কম।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, শুরুর দিকে এত ভিড় অন্য কোনো সময় দেখা যায়নি। প্রত্যেককে চেক করে মেলায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। এ কাজে এক রকম হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

ছুটির দিনে বইমেলায় দর্শনার্থীর ঢল

প্রকাশের সময় : ০৮:১১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নবম দিনে গড়িয়েছে অমর একুশে বইমেলা। ছুটির দিন ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত একুশে বইমেলায় অন্য দিনের তুলনায় ভিড় বেশি হবে- এ নতুন কিছু নয়। তবে এই ছুটির দিনের ভিড়কেও অস্বাভাবিক বলছেন পাঠক-দর্শনার্থীরা।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে পাঠক, লেখক, প্রকাশ ও দর্শনার্থীর মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। ঘোরাঘুরির পাশাপাশি পছন্দের বই কিনছেন অনেকে। দর্শনার্থীদের এমন ভিড়ে আনন্দিত লেখক, প্রকাশ ও বিক্রয়কর্মীরা।

সরেজমিনে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, বইপ্রেমীদের কলরবে প্রাণবন্ত অমর একুশে বইমেলা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনসমাগম। ছুটির দিনে স্টলগুলোর চারপাশ ঘিরে রেখেছেন বইপ্রেমীরা। নতুন বইয়ের গন্ধ পেতে মরিয়া তারা।

মেলার প্রতিটি চত্বরে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উল্লাস। কেউ আড্ডা দিচ্ছেন কেউ বা আবার বন্ধু স্বজনদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে মেলার দৃষ্টিনন্দন স্টল ও প্যাভিলিয়ন দেখছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বইমেলায় এমনিতেই প্রচণ্ড ভিড়। এর মধ্যে শিশু কর্নারে তা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। পা ফেলার স্থান নেই কর্নারটিতে। সিসিমপুরের চরিত্রগুলো এদিন মেলায় উপস্থিত থাকলেও প্রচণ্ড ভিড়ে তাদের কাছে যাওয়া শিশুদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুক্তমঞ্চে শিশুদের খেলার স্থান থাকলেও বেশিরভাগ অভিভাবক মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। ফলে শিশুদের কাঁধে নিয়ে মঞ্চের কাছে ভিড় করতে দেখা যায় তাদের।

মোহাম্মদপুর থেকে দুই শিশুকে নিয়ে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, এত ভিড় যে বাচ্চাকে সিসিমপুরের মঞ্চের কাছেই নিয়ে যেতে পারানি। ভিড় দেখে নিয়ে চলে এসেছি।

কাঁধে শিশুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়াদুদ বলেন, বাচ্চা মঞ্চে কী হচ্ছে দেখতে চাচ্ছে। কিন্তু এত ভিড় যে কাছে যেতে পারছি না। তাই দূর থেকে দেখানোর চেষ্টা করছি।

এদিকে শিশু কর্নারে সিসিমপুরের সর্বশেষ আয়োজন সাড়ে ছয়টায় শুরু হয়েছে বলে তথ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

সময় প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রিয়াজ রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় ৯ দিনের মধ্যে আজকেই সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী এসেছেন। সকাল থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর পর্যন্ত পিক আওয়ার আমাদের। এ সময় বেশি বেচাকেনা হচ্ছে।

বইমেলার সুবর্ণলতা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী সাজ্জাদ বলেন, মানুষ মূলত ঘুরতে এসেছে। যতটা না বই কিনছে তার থেকেও বেশি মানুষ মেলা ঘুরে দেখছেন। ভিড়ের তোপে স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পাঠেচ্ছুক দর্শনার্থীরা বই দেখবেন এমন অবস্থা নেই।

আরেক বিক্রিয় প্রতিনিধি মুনিয়া বলেন, শুক্রবার হওয়ার বই মেলায় অনেক তারকা লেখক আসছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও অটোগ্রাফ নিতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন।

বইমেলায় আগত দর্শনার্থী আলিফ বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বইমেলায় এসেছিলাম। এত ভিড় দেখে মনে হচ্ছে আজকে বইমেলায় আসাটা ভুল ছিল। অন্যদিন বিকেলের দিকে এলে হয়তো এত ভিড় হতো না।

অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসাইন বলেন, আজকের জনসমাগম অনন্য। এখানে প্রকৃত ক্রেতা যারা তারা অবশ্যই বই কিনবেন। দর্শনার্থীরাও থাকবেন এটাই যে কোন মেলার স্বাভাবিক চিত্র। প্রকাশকদের উচিৎ ভালো বই এনে পাঠকদের আকৃষ্ট করা। আমরা ৬০টি বই এনেছি এবছরের মেলায়। বিক্রিও ভালো।

মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোনায়েদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি হুমায়ূন আহমেদের বই কিনেছি। প্রতিবছর মেলায় আগের প্রজন্মের লেখকদের বই পড়তে হচ্ছে। সৃজনশীল লেখক বের হচ্ছে খুবই কম।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, শুরুর দিকে এত ভিড় অন্য কোনো সময় দেখা যায়নি। প্রত্যেককে চেক করে মেলায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। এ কাজে এক রকম হিমশিম খেতে হচ্ছে।