Dhaka বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটাতে পারবে না বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী

নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটাতে পারবে না বিএনপি-জামায়াত। কারণ তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে তবে আন্দোলন হয় না। বিএনপি একটি সন্ত্রসী দল, আর জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধী দল। তাদের কথা এ দেশের মানুষ শোনে না। তাদের কিছু লোক আছে তারাই নাচানাচি করে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, নেতা কোথায়? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া এখন জেলে। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নেতা কই? তাদের কথা মানুষ শোনে না। বিএনপি হত্যাকারী। জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। খালেদার ছেলে খুনি তারেক জিয়া। গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানকে হত্যা করেছে। এত টাকা কোথায় পায়? অস্ত্র চোরাচালানি করে। মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। পালিয়ে থাকে লন্ডনে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়েছিল জীবনে আর রাজনীতি করবে না। এখন লন্ডনে গিয়ে বসে আছে। সে এত টাকা কোথায় পায়! জনগণের টাকা আত্মসাৎ করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান অস্ত্র চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ অনেক নেতা-কর্মীকে মেরেছে। মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত।

তারেক রহমান পালিয়ে লন্ডনে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর সে সেখান থেকে আগুন জ্বালাতে বলছে। আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কত জ্বালা।

দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক বিএনপির নেতাকর্মীরা তা চায় না বলে অভিযোগ কওে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি অবরোধের নামে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে পড়াশোনা বিঘ্নিত করছে। তারেক এবং খালেদা জিয়া লেখাপড়ায় আগ্রহী নয় বলেই নিজেরা পড়াশোনা করেনি। তাই বছর শেষে বাচ্চাদের পরীক্ষার সময় অবরোধ দিচ্ছে আর করবেই বা না কেন, খালেদা জিয়া মেট্রিক ফেল আর তারেক জিয়া তিন স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছে।

এ সময় তিনি শিক্ষার উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা প্রি প্রাইমারি শুরু করেছি। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন করেছি, কওমি মাদ্রাসার উন্নয়ন করেছি। কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিয়েছি। প্রযুক্তির শিক্ষা আমরা নিশ্চিত করেছি। আমরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছি।

এর আগে নরসিংদীতে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে দেশের স্বার্থই বড়। আমেরিকার প্রস্তাবে রাজি হলে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং এত চমৎকার ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা বানানো সম্ভব হতো না।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন, কীভাবে আওয়ামী লীগকে হারানো যায়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়। এক রকম জোর করার কারণেই আমরা সেই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।

তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রপতি আমাদের দেশে এসেছিলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন- একই প্রস্তাব (গ্যাস রফতানি)। পরবর্তীকালে যখন লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন। তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। আমাদের পার্টি থেকে আমি এবং তখনকার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন খালেদা জিয়া এবং মান্নান ভুঁইয়া। সেখানে জিমি কার্টার আসেন দূত হিসেবে। এবারও তার একই প্রস্তাব। আমি একই কথা বলেছি যে, আমাকে সার্ভে করতে হবে, আমার দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে, পঞ্চাশ বছরের রিজার্ভ থাকতে হবে, তারপর উদ্বৃত্ত গ্যাস বিক্রির কথা আমি চিন্তা করবো। তাছাড়া দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে এই দৈন্যতায় অন্তত বঙ্গবন্ধুর কন্যা ভোগে না। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না।

সরকারপ্রধান বলেন, আজকে একবার চিন্তা করেন, সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে কি আজকে এত চমৎকার সার কারখানা আমরা করতে পারতাম? কোনোদিনই হতো না! ‘কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার চোখের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার রাষ্ট্রপতি এসে তার পিঠে হাত দিয়ে বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম, চাচা এখন চলেন। আমি বুঝতে পেরেছি কী হবে। কিন্তু আমি এটা কেয়ার করিনি। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়। আমরা সেখান থেকে চলে এসেছিলাম’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকারের একটি অংশ নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে : তারেক রহমান

চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটাতে পারবে না বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:০৪:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটাতে পারবে না বিএনপি-জামায়াত। কারণ তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে তবে আন্দোলন হয় না। বিএনপি একটি সন্ত্রসী দল, আর জামায়াত হলো যুদ্ধাপরাধী দল। তাদের কথা এ দেশের মানুষ শোনে না। তাদের কিছু লোক আছে তারাই নাচানাচি করে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, নেতা কোথায়? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া এখন জেলে। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নেতা কই? তাদের কথা মানুষ শোনে না। বিএনপি হত্যাকারী। জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। খালেদার ছেলে খুনি তারেক জিয়া। গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানকে হত্যা করেছে। এত টাকা কোথায় পায়? অস্ত্র চোরাচালানি করে। মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। পালিয়ে থাকে লন্ডনে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়েছিল জীবনে আর রাজনীতি করবে না। এখন লন্ডনে গিয়ে বসে আছে। সে এত টাকা কোথায় পায়! জনগণের টাকা আত্মসাৎ করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান অস্ত্র চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ অনেক নেতা-কর্মীকে মেরেছে। মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত।

তারেক রহমান পালিয়ে লন্ডনে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর সে সেখান থেকে আগুন জ্বালাতে বলছে। আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কত জ্বালা।

দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক বিএনপির নেতাকর্মীরা তা চায় না বলে অভিযোগ কওে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি অবরোধের নামে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে পড়াশোনা বিঘ্নিত করছে। তারেক এবং খালেদা জিয়া লেখাপড়ায় আগ্রহী নয় বলেই নিজেরা পড়াশোনা করেনি। তাই বছর শেষে বাচ্চাদের পরীক্ষার সময় অবরোধ দিচ্ছে আর করবেই বা না কেন, খালেদা জিয়া মেট্রিক ফেল আর তারেক জিয়া তিন স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছে।

এ সময় তিনি শিক্ষার উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা প্রি প্রাইমারি শুরু করেছি। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন করেছি, কওমি মাদ্রাসার উন্নয়ন করেছি। কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিয়েছি। প্রযুক্তির শিক্ষা আমরা নিশ্চিত করেছি। আমরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছি।

এর আগে নরসিংদীতে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে দেশের স্বার্থই বড়। আমেরিকার প্রস্তাবে রাজি হলে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং এত চমৎকার ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা বানানো সম্ভব হতো না।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন, কীভাবে আওয়ামী লীগকে হারানো যায়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়। এক রকম জোর করার কারণেই আমরা সেই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।

তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রপতি আমাদের দেশে এসেছিলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন- একই প্রস্তাব (গ্যাস রফতানি)। পরবর্তীকালে যখন লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন। তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। আমাদের পার্টি থেকে আমি এবং তখনকার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন খালেদা জিয়া এবং মান্নান ভুঁইয়া। সেখানে জিমি কার্টার আসেন দূত হিসেবে। এবারও তার একই প্রস্তাব। আমি একই কথা বলেছি যে, আমাকে সার্ভে করতে হবে, আমার দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে, পঞ্চাশ বছরের রিজার্ভ থাকতে হবে, তারপর উদ্বৃত্ত গ্যাস বিক্রির কথা আমি চিন্তা করবো। তাছাড়া দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে এই দৈন্যতায় অন্তত বঙ্গবন্ধুর কন্যা ভোগে না। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না।

সরকারপ্রধান বলেন, আজকে একবার চিন্তা করেন, সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে কি আজকে এত চমৎকার সার কারখানা আমরা করতে পারতাম? কোনোদিনই হতো না! ‘কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার চোখের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার রাষ্ট্রপতি এসে তার পিঠে হাত দিয়ে বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম, চাচা এখন চলেন। আমি বুঝতে পেরেছি কী হবে। কিন্তু আমি এটা কেয়ার করিনি। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়। আমরা সেখান থেকে চলে এসেছিলাম’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।