Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে : তারেক রহমান

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের সময় কোনো ক্ষেত্রেই জবাবদিহি ছিল না। কিন্তু আমরা দেশে জবাবদিহিতার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছি। চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপিঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক ফরিদপুর বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে তিনি বক্তব্য শুরু করেন এবং শেষ করেন ৫টা ২৩ মিনিটে। ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি একটি জনমুখী দল এবং দলটির নেতাকর্মীরাও জনবান্ধব। আমরা শিগগিরই দেশকে একটা স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসতে চাইছি। স্বৈরাচারকে বিদায় করার পেছনে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ভূমিকা রয়েছে। এটি ভোলা যাবে না। এখন জনগনের আস্থা ধরে রাখতে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।

সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি স্বাধীন নির্বাচন চায়। সেই নির্বাচনের ফল যাই হোক তা বিএনপি মেনে নেবে। জনসমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পাবে বলেও মনে করেন তিনি।

দেশীয় চিকিৎসকদের রোগীদের আস্থা অর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলেই রোগীরা বিদেশে যাবে না।

এ সময় নেতাকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এক ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। এই বিষয়ে নীতিগতভাবে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারেক রহমান বলেছেন, আমরা দুই বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ২৭ দফা দিয়েছিলাম। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। তবে আমাদের জানা ছিল না কবে স্বৈরাচারের বিদায় হবে। বর্তমানে ৩১ দফা অর্জন কমবেশি তখনই করতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার গঠন করতে পারবেন। এজন্য ৩১ দফাকে জনগণের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।

তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফায় জনগণের সমর্থন নেওয়া, আস্থা অর্জন ও ধরে রাখার দায়িত্ব আমার আপনার আপনাদের সকলের। জনগণকে আস্থায় রাখতে হলে সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা সকলে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন। আপনারা প্রত্যেকে বিএনপির নেতা, অ্যাম্বাসেডর, বিএনপির প্রতিনিধি।

বিএনপির একার আন্দোলনে স্বৈরাচার পালিয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল দল কাজ করেছে, সকল মানুষ একত্রিত হয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। তবে আমাদের ওপর জনগণের আস্থা আছে বলে আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমরা যাদি চুপচাপ বসে থাকি তাহলে কোনো কাজ হবে না। আমরা এমন কোনো ভুল চিন্তা বা কাজ যেন না করি যাতে আমরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। তাই যারা ভুল করছে তাদের বোঝাতে হবে, সতর্ক করতে হবে। সবাই মিলেই আমাদের কাজ করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, মানুষ যদি না জানতে পারে বিএনপি কি চায়, জনগণের জন্য কি ভাবে, ছাত্রের জন্য কি ভাবে, নারীদের জন্য কি ভাবে, কৃষকের জন্য কি ভাবে, শ্রমিকের জন্য কি ভাবে তাহলে জনগণের সমর্থন আমাদের ওপর থাকবে না।

তিনি বলেন, হয়তো একবারে আমরা পারব না। তবে আমরা সূচনা করে যেতে চাই। পরে ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলতে থাকলে পর্যায়ক্রমে আমরা একটা জায়গায় যাব। এই প্রক্রিয়ার যুক্ত হতে চাইলে জনগণের সমর্থন দরকার। আমরা দেশে একটা জবাবদিহিতার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শুধু প্রধানমন্ত্রী বা এমপির জবাবদিহিতা নয়, জবাদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে সমাজের সব পর্যায়ে। মেয়র ইউপি চেয়ারম্যান সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো ব্যক্তি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। শেখ হাসিনার সময়ে জবাবদিহিতা ছিল না। জবাবদিহিতা থাকলে ফরিদপুর থেকে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার হতে পারতো না।

তারেক রহমান বলেন, দেশের এমন এক অবস্থা আমরা গড়ে তুলতে চাই যেখানে চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষকে দেশের বাইরে যেতে হবে না, ছাত্ররা শিক্ষাজীবন শেষ করে কাজ পাবে, কৃষক তার পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। স্বৈরাচারকে যেভাবে আমরা একতাবদ্ধ হয়ে উৎখাত করেছি তেমনি জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জনগণকে আস্থায় রাখতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে, জনগণের কথায় উঠতে বসতে ও চলতে হবে। রাজনীতির মূল কথা হচ্ছে জনগণের আস্থা অর্জন। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে যে যে কৌশল আছে তা আমাদের করে যেতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে যে সংবিধান-আইন সেটাকেই সমর্থন করে বিএনপি। প্রতিটি মানুষ একটিই ভোট দেবে, বিএনপি এই নীতি অনুসরণ করে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৩ দিন পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক

চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের সময় কোনো ক্ষেত্রেই জবাবদিহি ছিল না। কিন্তু আমরা দেশে জবাবদিহিতার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছি। চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপিঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক ফরিদপুর বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে তিনি বক্তব্য শুরু করেন এবং শেষ করেন ৫টা ২৩ মিনিটে। ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি একটি জনমুখী দল এবং দলটির নেতাকর্মীরাও জনবান্ধব। আমরা শিগগিরই দেশকে একটা স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসতে চাইছি। স্বৈরাচারকে বিদায় করার পেছনে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ভূমিকা রয়েছে। এটি ভোলা যাবে না। এখন জনগনের আস্থা ধরে রাখতে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।

সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি স্বাধীন নির্বাচন চায়। সেই নির্বাচনের ফল যাই হোক তা বিএনপি মেনে নেবে। জনসমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পাবে বলেও মনে করেন তিনি।

দেশীয় চিকিৎসকদের রোগীদের আস্থা অর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলেই রোগীরা বিদেশে যাবে না।

এ সময় নেতাকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এক ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। এই বিষয়ে নীতিগতভাবে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারেক রহমান বলেছেন, আমরা দুই বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ২৭ দফা দিয়েছিলাম। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। তবে আমাদের জানা ছিল না কবে স্বৈরাচারের বিদায় হবে। বর্তমানে ৩১ দফা অর্জন কমবেশি তখনই করতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার গঠন করতে পারবেন। এজন্য ৩১ দফাকে জনগণের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।

তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফায় জনগণের সমর্থন নেওয়া, আস্থা অর্জন ও ধরে রাখার দায়িত্ব আমার আপনার আপনাদের সকলের। জনগণকে আস্থায় রাখতে হলে সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা সকলে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন। আপনারা প্রত্যেকে বিএনপির নেতা, অ্যাম্বাসেডর, বিএনপির প্রতিনিধি।

বিএনপির একার আন্দোলনে স্বৈরাচার পালিয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল দল কাজ করেছে, সকল মানুষ একত্রিত হয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। তবে আমাদের ওপর জনগণের আস্থা আছে বলে আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমরা যাদি চুপচাপ বসে থাকি তাহলে কোনো কাজ হবে না। আমরা এমন কোনো ভুল চিন্তা বা কাজ যেন না করি যাতে আমরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। তাই যারা ভুল করছে তাদের বোঝাতে হবে, সতর্ক করতে হবে। সবাই মিলেই আমাদের কাজ করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, মানুষ যদি না জানতে পারে বিএনপি কি চায়, জনগণের জন্য কি ভাবে, ছাত্রের জন্য কি ভাবে, নারীদের জন্য কি ভাবে, কৃষকের জন্য কি ভাবে, শ্রমিকের জন্য কি ভাবে তাহলে জনগণের সমর্থন আমাদের ওপর থাকবে না।

তিনি বলেন, হয়তো একবারে আমরা পারব না। তবে আমরা সূচনা করে যেতে চাই। পরে ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলতে থাকলে পর্যায়ক্রমে আমরা একটা জায়গায় যাব। এই প্রক্রিয়ার যুক্ত হতে চাইলে জনগণের সমর্থন দরকার। আমরা দেশে একটা জবাবদিহিতার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শুধু প্রধানমন্ত্রী বা এমপির জবাবদিহিতা নয়, জবাদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে সমাজের সব পর্যায়ে। মেয়র ইউপি চেয়ারম্যান সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো ব্যক্তি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। শেখ হাসিনার সময়ে জবাবদিহিতা ছিল না। জবাবদিহিতা থাকলে ফরিদপুর থেকে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার হতে পারতো না।

তারেক রহমান বলেন, দেশের এমন এক অবস্থা আমরা গড়ে তুলতে চাই যেখানে চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষকে দেশের বাইরে যেতে হবে না, ছাত্ররা শিক্ষাজীবন শেষ করে কাজ পাবে, কৃষক তার পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। স্বৈরাচারকে যেভাবে আমরা একতাবদ্ধ হয়ে উৎখাত করেছি তেমনি জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জনগণকে আস্থায় রাখতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে, জনগণের কথায় উঠতে বসতে ও চলতে হবে। রাজনীতির মূল কথা হচ্ছে জনগণের আস্থা অর্জন। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে যে যে কৌশল আছে তা আমাদের করে যেতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে যে সংবিধান-আইন সেটাকেই সমর্থন করে বিএনপি। প্রতিটি মানুষ একটিই ভোট দেবে, বিএনপি এই নীতি অনুসরণ করে।