Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি : 

বৈশাখের শুরু থেকেই কখনো মৃদু থেকে মাঝারি, আবার কখনো তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে। কিন্তু চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে এ জেলার তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপপ্রবাহ বইছে অতি তীব্র আকারের। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমন্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে সবাই।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১১ শতাংশ। যা দুপুর ৩টা পর্যন্ত সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) এ জেলায় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর রোববার (২১ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি, সোমবার (২২ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি, বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশকিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৬ শতাংশ। বেলা ৩টায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা সদরের পদ্মবিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবিক আল হাসান  বলেন, প্রতিদিন রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। চরম দুর্ভোগে আছি আমরা। রাতেও ঘুম হয় না।

সদরের মাখালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বাড়িতে শিশুরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছে। বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে রোদের তাপে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। তার ওপর রাতের লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গত তিন-চার দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আজ তাপমাত্রা এই মৌসুমের পেছনের দিনগুলোর রেকর্ড ভেঙে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এই অবস্থা আরও দু–তিনদিন থাকতে পারে। সকাল থেকে থাকছে তীব্র রোদ। সকাল ৯টার পরই তাপমাত্রা উঠে যাচ্ছে ৩০ ডিগ্রির ওপরে। এ অবস্থা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে।

তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা কাজ করতে না পেরে অনাহারে দিন পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে তাপ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অতি তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণিকুল।

এদিকে, আগামী মে মাসের শুরুতেই সারা দেশে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, মে মাসের ২ তারিখ থেকে সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি এবং কালবৈশাখী ঝড়ও।

এদিকে অতি তীব্র দাবদাহে রবিবার থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এ জেলার অভিভাবকরা। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ চলতি তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের শিশুদের অতি উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রেখেছে। স্কুলগুলো চলমান তাপপ্রবাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন এ জেলার অভিভাবকরা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মেসি জোড়া গোলের নৈপুন্যে ইন্টার মায়ামির জয়

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

প্রকাশের সময় : ০৬:১৮:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি : 

বৈশাখের শুরু থেকেই কখনো মৃদু থেকে মাঝারি, আবার কখনো তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে। কিন্তু চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে এ জেলার তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপপ্রবাহ বইছে অতি তীব্র আকারের। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমন্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে সবাই।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১১ শতাংশ। যা দুপুর ৩টা পর্যন্ত সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) এ জেলায় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর রোববার (২১ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি, সোমবার (২২ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি, বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশকিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৬ শতাংশ। বেলা ৩টায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা সদরের পদ্মবিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবিক আল হাসান  বলেন, প্রতিদিন রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। চরম দুর্ভোগে আছি আমরা। রাতেও ঘুম হয় না।

সদরের মাখালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বাড়িতে শিশুরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছে। বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে রোদের তাপে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। তার ওপর রাতের লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গত তিন-চার দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আজ তাপমাত্রা এই মৌসুমের পেছনের দিনগুলোর রেকর্ড ভেঙে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এই অবস্থা আরও দু–তিনদিন থাকতে পারে। সকাল থেকে থাকছে তীব্র রোদ। সকাল ৯টার পরই তাপমাত্রা উঠে যাচ্ছে ৩০ ডিগ্রির ওপরে। এ অবস্থা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে।

তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা কাজ করতে না পেরে অনাহারে দিন পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে তাপ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অতি তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণিকুল।

এদিকে, আগামী মে মাসের শুরুতেই সারা দেশে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, মে মাসের ২ তারিখ থেকে সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি এবং কালবৈশাখী ঝড়ও।

এদিকে অতি তীব্র দাবদাহে রবিবার থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এ জেলার অভিভাবকরা। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ চলতি তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের শিশুদের অতি উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রেখেছে। স্কুলগুলো চলমান তাপপ্রবাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন এ জেলার অভিভাবকরা।