চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি :
চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭ টার দিকে মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়।
বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।
নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেন ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন।
জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আমির হোসেন বলেন, ‘তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। ধানের জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপা জানান, এক রোগী স্ট্রোকজনিত কারণে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।
টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ এখানকার জনপদ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণীকূল। হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। অতি তাপে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেমনর রোদের প্রখরতা বাড়ছে তেমনি বেলা গড়ালেও উত্তাপ কমছে না। দিনের মতো রাতেও গরম অনুভূত হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, টানা ৪ দিন ধরে এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। তার সাথে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে একটানা ৯ দিন ধরে। এধারা আরও কিছুদিন অব্যহত থাকতে পারে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৩ দশমিক ২ সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসে আদ্রতার পরিমান ছিলো ৫৮ শতাংশ। দুপুর ১২ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসে আদ্রতার পরিমান ছিলো ১৮ শতাংশ। তাপমাত্রা আরও বেড়ে বিকাল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসে আদ্রতার পরিমান ছিলো ১৮ শতাংশ। এটি দেশে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিকে তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের পক্ষে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারি ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়িত সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক আগামীকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জরুরি সভা আহবান করেছেন।