Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্র বাতিল

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জন্য। তবে দলের মনোনয়ন পাননি তিনি।

পরে রাজশাহী-১ থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন এই নায়িকা। কিন্তু এক শতাংশ ভোটার জালিয়াতির (ভুয়া স্বাক্ষর) অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রাজশাহী নির্বাচন কমিশন অফিস।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকালে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মাহিয়া মাহির যে সব ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর দিয়েছেন সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো প্রার্থীর ১০ জনের ভোটার যাচাই করা হয়। এরমধ্যে তিনজনের তথ্য পাওয়া যায়নি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, এ তিনজনের মধ্যে দুজনের তথ্য সঠিক ছিল না। একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোটার। তাই তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।

মাহিয়া মাহি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। আমি বিষয়টি শুনেছি। আজ অথবা কাল আপিল করব।
এর আগে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এতে মাহিসহ আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র চার প্রার্থীরই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অন্য সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এই আসনের টানা তিনবারের এমপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত এবারের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর মনোনয়নপত্র। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় নায়িকা মাহিও উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তিনি চলে যান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি তাঁর সমর্থক হিসেবে যে ভোটারদের স্বাক্ষর দিয়েছেন তা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে গরমিল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ললিতা মার্ডি নামের একজন নির্বাচনী এলাকার ভোটারই নন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার ভোটার। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামানের দেওয়া ভোটারদের স্বাক্ষরের তালিকায়ও গরমিল পাওয়া গেছে। ৯ জনের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীরও ভোটারদের তালিকায় তিনজনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর সাতজন সমর্থকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, আগে কখনো নির্বাচিত হননি এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। তাঁরা প্রার্থীদের দেওয়া এই স্বাক্ষর থেকে ১০ জন করে ভোটারের তথ্য যাচাই করেছেন। এতে চিত্রনায়িকা মাহিসহ চারজন প্রার্থীর সমর্থকদের তালিকায় গরমিল পাওয়া গেছে।

মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণার পর চিত্রনায়িকা মাহি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। তিনি এর বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

এই আসনের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী (আওয়ামী লীগ) মো. শামসুজ্জোহা (বিএনএম), মো. আল-সাআদ (বিএনএফ), জামাল খান দুদু (তৃণমূল বিএনপি), নুরুন্নেসা (এনপিপি) ও বশির আহমেদ (মুক্তিজোট) ও মো. শামসুদ্দীনের (জাতীয় পার্টি) মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

মনোনয়ানপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মাহি ছাড়া অন্য যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, তারাও আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী সোমবার পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্র বাতিল

প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জন্য। তবে দলের মনোনয়ন পাননি তিনি।

পরে রাজশাহী-১ থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন এই নায়িকা। কিন্তু এক শতাংশ ভোটার জালিয়াতির (ভুয়া স্বাক্ষর) অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রাজশাহী নির্বাচন কমিশন অফিস।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকালে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মাহিয়া মাহির যে সব ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর দিয়েছেন সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো প্রার্থীর ১০ জনের ভোটার যাচাই করা হয়। এরমধ্যে তিনজনের তথ্য পাওয়া যায়নি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, এ তিনজনের মধ্যে দুজনের তথ্য সঠিক ছিল না। একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোটার। তাই তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।

মাহিয়া মাহি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। আমি বিষয়টি শুনেছি। আজ অথবা কাল আপিল করব।
এর আগে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এতে মাহিসহ আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র চার প্রার্থীরই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অন্য সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এই আসনের টানা তিনবারের এমপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত এবারের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর মনোনয়নপত্র। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় নায়িকা মাহিও উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তিনি চলে যান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি তাঁর সমর্থক হিসেবে যে ভোটারদের স্বাক্ষর দিয়েছেন তা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে গরমিল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ললিতা মার্ডি নামের একজন নির্বাচনী এলাকার ভোটারই নন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার ভোটার। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামানের দেওয়া ভোটারদের স্বাক্ষরের তালিকায়ও গরমিল পাওয়া গেছে। ৯ জনের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীরও ভোটারদের তালিকায় তিনজনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর সাতজন সমর্থকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, আগে কখনো নির্বাচিত হননি এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। তাঁরা প্রার্থীদের দেওয়া এই স্বাক্ষর থেকে ১০ জন করে ভোটারের তথ্য যাচাই করেছেন। এতে চিত্রনায়িকা মাহিসহ চারজন প্রার্থীর সমর্থকদের তালিকায় গরমিল পাওয়া গেছে।

মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণার পর চিত্রনায়িকা মাহি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। তিনি এর বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

এই আসনের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী (আওয়ামী লীগ) মো. শামসুজ্জোহা (বিএনএম), মো. আল-সাআদ (বিএনএফ), জামাল খান দুদু (তৃণমূল বিএনপি), নুরুন্নেসা (এনপিপি) ও বশির আহমেদ (মুক্তিজোট) ও মো. শামসুদ্দীনের (জাতীয় পার্টি) মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

মনোনয়ানপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মাহি ছাড়া অন্য যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, তারাও আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী সোমবার পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর।