কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :
চিকিৎসক ও রোগীর সুরক্ষায় সংসদে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) কুমিল্লায় দুই দিনের সফরের শেষ দিনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, রোগীদেরও মন্ত্রী। আমি যেমন চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করব, তেমনই রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আমার দায়িত্ব। দুজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার একমাত্র পন্থা হলো স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন। মন্ত্রী হওয়ার পরে আমি এই বিষয়ে ৪টি সভা করেছি। আমি কথা দিচ্ছি, যেভাবেই হোক স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন জাতীয় সংসদে পাস করব।
প্রান্তিক অঞ্চলের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আমি সবসময় একটি কথাই বলে এসেছি, প্রান্তিক এলাকায় জরুরি স্বাস্থ্য সেবা বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা উন্নত হলে সারাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হলে শহরের ওপর চাপ কমবে। আমি নিজেই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসেছি। আমি সব জানি। তাই, প্রান্তিক এলাকায় জরুরি স্বাস্থ্য সেবা ও সকল প্রকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা মন্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব।
মতবিনিময়সভায় কুমিল্লায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, বৃহত্তর কুমিল্লা এবং বৃহত্তর নোয়াখালী মিলে প্রায়ই আড়াই কোটি লোক এখানে বাস করে। প্রতিদিন ক্যান্সার রোগী আমার কাছে সাহায্য নিতে আসে। একটা দিনও বাদ যায় না। সমাজ কল্যাণ থেকে আমরা ৫০ হাজার টাকা দিই। প্রতিবছর ৫০ লক্ষ টাকা আমি দিই এলাকার দরিদ্র ক্যান্সার রোগীদের জন্য। মাননীয় মন্ত্রী আপনি একটা ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করলে এই দরিদ্র রোগীগুলো বেঁচে যাবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর এই দুইদিনের কুমিল্লা সফরে তিনি চান্দিনায় পুনঃনির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন এবং ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন, কুমিল্লা সদর হাসপাতাল ও ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বুড়িচং হাসপাতাল পরিদর্শন এবং শেষে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে বার্ন ইউনিটের ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) উদ্বোধন করে মতবিনিময়সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় উত্থাপিত দাবিগুলোর প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমাকে কিছু দাবির কথা বলা হয়েছে। একটা ক্যান্সার হাসপাতালের দরকার আমি বুঝি। মাননীয় সংসদ সদস্যকে আমি অনুরোধ করব। এই বিষয়ে আমাকে একটা ডিও লেটার দিন। তারপর আমি এটা নিয়ে কাজ করব। অদূর ভবিষ্যতে আমি এখানে একটা ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও অংশ নেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, সিটি করপোরেশনের মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ খবর নেন।