Dhaka মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চার মাসে দুই হাজার শিশুর মৃত্যু পানিতে ডুবে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০
  • ২০৯ জন দেখেছেন

সংগৃহীত ছবি

প্রতি বছর বন্যার সময় পানিতে ডুবে শত শত শিশুর মৃত্যু ঘটে। অথচ এর হিসাব কেউ রাখে না। দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩২ জনের পানিতে ডুবে মৃত্যু ঘটে। চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে পানিতে ডুবে ১ হাজার ৯২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিনার্গোস বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দিয়েছে।

তবে সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, চার মাসে শিশুমৃত্যুর তথ্যটি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত উৎস থেকে নেয়া হয়েছে। অনেক শিশুমৃত্যুর ঘটনা সংবাদমাধ্যম কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে না। বাস্তবে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার আরো বেশি। সংস্থাটির তথ্য বলছে, দেশে পানিতে ডুবে প্রতিদিন ৩২ জনের মতো এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে সিআইপিআরবি ও আইসিডিডিআর,বি ২০১২ সাল থেকে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে এক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে গতকালের সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।

এতে সিআইপিআরবির ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিনুর রহমান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হারে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজার শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। দিনে মারা যায় ৩২ জন, যাদের বয়স এক থেকে চার বছর। শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখলে এ দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন : ৮দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো ভাই-বোনের লাশ

চলতি বছরের এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাইয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের আলোকে শিশুমৃত্যু সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এতে বলা হয়, এপ্রিল বাদে বাকি তিন মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

মে মাসে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৪৩২টি, যার মধ্যে ১৯২ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। জুনে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৫৯৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যার ৮১ শতাংশ বা ৪৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। জুলাইয়ে মোট ৭৬০ শিশু মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ বা ৬৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

এ চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৩ ও সহিংসতায় ১২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১-১৭ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া।

সিনার্গোস বাংলাদেশের পার্টনারশিপ লিড এশা হুশেইন বলেন, দেশে শিশুমৃত্যুর ঘটনাগুলো বিছিন্নভাবে হলেও পরিসংখ্যান এক করলে তা শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিশুদের সুরক্ষায় ডে কেয়ার সেন্টার, বাড়িতে শিশু বেষ্টনী তৈরির পাশাপাশি ব্যাপক সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেসিংয়ের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল হেলথের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল গফুর এম বাচানী ও সিনার্গোসের ড্রাউনিং প্রিভেনশন প্রজেক্টের ম্যানেজার ওবায়দুল ফাত্তাহ তানভীর।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চার মাসে দুই হাজার শিশুর মৃত্যু পানিতে ডুবে

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০

প্রতি বছর বন্যার সময় পানিতে ডুবে শত শত শিশুর মৃত্যু ঘটে। অথচ এর হিসাব কেউ রাখে না। দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩২ জনের পানিতে ডুবে মৃত্যু ঘটে। চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে পানিতে ডুবে ১ হাজার ৯২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিনার্গোস বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দিয়েছে।

তবে সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, চার মাসে শিশুমৃত্যুর তথ্যটি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত উৎস থেকে নেয়া হয়েছে। অনেক শিশুমৃত্যুর ঘটনা সংবাদমাধ্যম কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে না। বাস্তবে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার আরো বেশি। সংস্থাটির তথ্য বলছে, দেশে পানিতে ডুবে প্রতিদিন ৩২ জনের মতো এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে সিআইপিআরবি ও আইসিডিডিআর,বি ২০১২ সাল থেকে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে এক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে গতকালের সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।

এতে সিআইপিআরবির ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিনুর রহমান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হারে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজার শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। দিনে মারা যায় ৩২ জন, যাদের বয়স এক থেকে চার বছর। শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখলে এ দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন : ৮দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো ভাই-বোনের লাশ

চলতি বছরের এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাইয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের আলোকে শিশুমৃত্যু সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এতে বলা হয়, এপ্রিল বাদে বাকি তিন মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

মে মাসে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৪৩২টি, যার মধ্যে ১৯২ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। জুনে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৫৯৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যার ৮১ শতাংশ বা ৪৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। জুলাইয়ে মোট ৭৬০ শিশু মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ বা ৬৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

এ চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৩ ও সহিংসতায় ১২৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১-১৭ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া।

সিনার্গোস বাংলাদেশের পার্টনারশিপ লিড এশা হুশেইন বলেন, দেশে শিশুমৃত্যুর ঘটনাগুলো বিছিন্নভাবে হলেও পরিসংখ্যান এক করলে তা শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিশুদের সুরক্ষায় ডে কেয়ার সেন্টার, বাড়িতে শিশু বেষ্টনী তৈরির পাশাপাশি ব্যাপক সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেসিংয়ের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল হেলথের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল গফুর এম বাচানী ও সিনার্গোসের ড্রাউনিং প্রিভেনশন প্রজেক্টের ম্যানেজার ওবায়দুল ফাত্তাহ তানভীর।