চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর সড়কের বিভিন্ন জায়গা খানাখন্দ। সামান্য বৃষ্টিতেই ৩৩ কিলোমিটার সড়কের ভাঙা অংশগুলোয় পানি জমে থাকে। সড়কে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে যানচালক ও পথচারীরা।
সরেজমিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশ্বরোড মোড় থেকে রহনপুর কলেজ মোড় পর্যন্ত গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার বালুগ্রাম মোড়, চাঁপাই পলশা, চকপুস্তুম মোড়, মরিচাডাঙ্গা থেকে কলেজ মোড়ের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেক স্থানে গর্ত, পিচ ঢালাই ও খোয়া উঠে গেছে। বৃষ্টিতে গর্তগুলোয় পানি জমে কাদায় ভরে যাচ্ছে। কাদাপানিতে সড়কটি যে পাকা, তাই যেন বোঝার কোনো উপায় নেই। এসব এলাকা দিয়ে যানবাহন চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পথচারীরাও এই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
জানা গেছে, অতিবৃষ্টির কারণে এবার সড়কের এমন বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর মরিচাডাঙ্গা থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত সড়কের অংশে যানবাহন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
গোমস্তাপুর উপজেলার জাহিদনগর গ্রামের বাসিন্দা শাহিন আলম বলেন, প্রতিদিন আমাকে রহনপুরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যেতে হয়। মরিচাডাঙ্গা থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত রাস্তার যে অবস্থা, তাতে ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাতে হয়। কারণ প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে শত শত গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্ত ছোটও নয়। এটা হওয়ার কারণ হচ্ছে, সড়ক বিভাগের দুর্নীতি ও তদারকির অভাব। আমাদের গোমস্তাপুর থেকে রহনপুর সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি বিটুমিন, পাথর দিয়ে রাস্তা সমতল করা হচ্ছে না। এ সড়ক দিয়ে কোনো চালক যানবাহন চালিয়ে শান্তিও পায়না।
একই এলাকার বাসিন্দা আফাজুর রহমান বলেন, টানা তিন থেকে চার মাসের বৃষ্টিতে মরিচাডাঙ্গা সেতু থেকে লতিফুর রহমানের ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে বহু গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর দাবি, সড়ক বিভাগের লোকজন দুবার কিছু ইটপাটকেল ফেলার পরেও আবার গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এটার মূল কারণ হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো না থাকা।
আজিজা খাতুন নামের এক পথচারী বলেন, এ সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলে আমার বাসা থেকে আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম। একটুর জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি।
খয়রাবাদ এলাকার সিএনজিচালক মো. ফারুক বলেন, চাঁপাই থেকে রহনপুর কলেজ মোড় পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার সড়কে তিন-চার মাস আগে আসতে সময় লাগত ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। আর এখন আসতে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি। বিশেষ করে ছোট গাড়িগুলো এই সড়ক দিয়ে চলাচল অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার বালুগ্রাম মোড় এলাকার কাঁসা-পিতলের ব্যবসায়ী দোকানদার আব্দুর রহিম বলেন, কিছুদিন আগে ধানবোঝাই একটি ট্রাক একদিকে কাত হয়ে পড়ছিল। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহা. নাহিনুর রহমান বলেন, বৃষ্টিকালীন মোবাইল মেইনটেনেন্সের মাধ্যমে জেলা সড়কগুলো মেরামত করা হচ্ছে। বৃষ্টি-পরবর্তী সময়ে বিটুমনি দিয়ে সড়কগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে বালুগ্রাম মোড় এলাকায় ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় সেখানে বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে বিশাল আকারের গর্তের তৈরি হয়েছে। সড়কটি কবে নাগাদ বিটুমিন দিয়ে সংস্কার হয়েছে তার কোনো তথ্য দিতে পারেনি সওজ কর্মকর্তা।