আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলকে গ্রেফতার করেছে দেশটির দুর্নীতি বিরোধী কর্তৃপক্ষ। ঐতিহাসিক এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশটিতে এই প্রথম দায়িত্বে থাকা কোনো প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করা হলো।
গত মাসের শুরুতে সামরিক আইন জারি নিয়ে দেশটিতে কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অচলাবস্থার পর বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ইউন এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাকে গ্রেফতারে বুধবার ভোর থেকে তিন হাজারের বেশি পুলিশ তার বাসভবন ঘিরে রাখে। সহিংসতা এড়াতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। আজ আমি যখন তাদের দমকল বাহিনীর সরঞ্জাম ব্যবহার করে সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করতে দেখলাম, তখন আমি সিআইওর তদন্তে সাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এটি একটি অবৈধ তদন্ত, তারপরও রক্তপাত এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বিবিসি জানিয়েছে, এর আগেও একবার ইউন সুক-ইওলকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বারের এই চেষ্টায় তাকে আটক করার খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ইউনকে গ্রেফতারের আগে তার নিরাপত্তাকর্মী ও সমর্থকদের বাধার মুখে পড়তে হয় তদন্তকারীদের। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে দশটার দিকে একটি গাড়ীবহর প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে বেরিয়ে গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বহরেই প্রেসিডেন্টকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো।
তবে এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল বলেছেন, তিনি দুর্নীতি তদন্ত অফিসে (সিআইও) উপস্থিত হতে সম্মত হয়েছেন। এই সংস্থাই তার বিরুদ্ধে করা মামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তিন মিনিটেরও কম সময়ের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। যে সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে বা যে আদালতগুলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে, তাদের এমনটি করার এখতিয়ার নেই।
গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। স্বল্পস্থায়ী এই সামরিক আইন জারির জেরে গত ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়।
রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে ইউন অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।